বকুল ফুলের গন্ধ | ভয়ের দেশ | উল্লাস দাস| Bengali Horror Story
আনুমানিক সময়:30 মিনিট, 59 সেকেন্ড

বকুল ফুলের গন্ধ | ভয়ের দেশ | উল্লাস দাস| Bengali Horror Story
0 (0)

Getting your Trinity Audio player ready...

– এ কি অবস্থা হয়েছে তোর! ভেতরে আয়! তোর বাপি তো এখনো ঘুমাচ্ছে…

নির্মলা দেবী ছেলেকে হাত ধরে ঘরের ভেতরে টেনে ঢুকিয়ে, দরজাটা ভেজিয়ে দিলেন।

সাড়ে চার বছর পর দেশে ফিরল ছেলে। এমন নয় যে ও কোন যোগাযোগ রাখেনি। আসলে ব্যস্ত আইটির চাকরি। খুব কাজের চাপ। গরীবের ঘর থেকে বিদেশ গেলে, দু’পয়সা বাঁচানোর চক্করে এমন হয়। প্রতুল যে ফোনে যোগাযোগ করে না, এমন নয়। পালা করে সপ্তাহে একবার অন্তত মা কে ঠিক ফোন করে ও।

কিন্তু গত ক’মাস covid-১৯ এর চক্করে ব্যাপার-স্যাপার একটু অনিয়মিত হয়ে গেছে। প্রতুলের অফিসেও বেশ ক’জন গত সপ্তাহে পজিটিভ ধরা পড়েছে। ওয়ার্ক ফ্রম হোম শুরু হয়েছে তিন-চার সপ্তাহ আগেই, কিন্তু মারে হরি রাখে কে!

নির্মলা দেবীর পাড়াতেও সরকার থেকে রেড ক্যাটাগরি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই পোড়া দেশে কে শোনে কার কথা! অফিস যাওয়া বন্ধ হলেও মানুষের বাজার করা বন্ধ হয়নি। মাছ, মুরগী, বিরিয়ানি। পোলাও – সবই চলছে। সন্ধ্যাবেলা পাড়াতুতো জটলা, রাতে আড্ডা – কিছুই বন্ধ হয়নি।

প্রতুল অবশ্য বলেছে মানুষ হল ঢেঁকি! সে নরকে থাকুক বা স্বর্গে ধান সে ভাঙবেই। ভারত হোক বা আমেরিকা, লকডাউনের বাজারেও মানুষের স্বভাবজনিত প্রবৃত্তি একই রকম। চাকরি করতে যাওয়া বন্ধ হলে কি হবে, আড্ডা মারা, বাজার করা, খেলাধুলা, জটলা পাকানো – সবই শুধু আগের মত নয় আগে থেকেও কিছুটা নয়, অনেকটাই যেন বেড়ে গেছে বলতে হবে!

– বাপি কি এখনো ঘুমাচ্ছে?

প্রতুলের কথায় চমক ভাঙল নির্মলা দেবীর। এত বছর পর ছেলেকে দেখছেন, তবুও তার চিরাচরিত কল্পনার জগতে ডুবে যাওয়ার স্বভাব আর গেল না। ছেলেকে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন।

– একদম চমকে দিয়েছিস তো! কদিন ধরে তোকে এমনিই ফোনে পাচ্ছিলাম না। এত বড় সারপ্রাইজ! হ্যাঁ, তোর ব্যাপী এখন ঘুমোচ্ছে। কাল রাতে শুতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। বস বস … চা করি একটু?

– না না মা, সে হবে খন, আমি এখন বড্ড তাড়ায় আছি, একটা খুব জরুরী মিটিং-এ এসেছি…

এতো দূরে থাকে মা, পৃথিবীর সম্পূর্ণ অন্য প্রান্তে। কি করে সে মা-কে বোঝায় বিয়ের পরে ছেলে মায়ের নয়, বৌয়ের হয়ে যায়! মায়ের সামনে ইন্ডিয়াতে কল করা নিয়ে বৈবাহিক জীবনের নানা সমস্যা নিয়ে এখন জল ঘোলা করার সত্যিই কোনো অর্থ নেই!

– সে তো তোদের চলতেই থাকে। তা এবারে এই পোড়া দেশে মিটিং! তোরা তো সব ওখান থেকেই ফোনে বা ভিডিওতে সব সারিস!

প্রতুল বসে বসেই সোফাতে একটু লাফিয়ে নিল। ওর ছোটবেলার স্বভাব।

– এইটা আমি সেবার দেখে যায়নি তো! নতুন নিয়েছো?

– আরে না না – তা প্রায় দু’বছর হয়ে গেছে। পুজোয় একটা ভালো অফার ছিল। তোর বাবা আমাকে না বলেই নিয়ে এসেছিল। তুই খেয়েছিস কিছু?

নির্মলা দেবীও জানেন, দূরত্বটা শুধু ফোনে নয়, অনেক দিন ধরেই খবর দেওয়া-নেওয়াতেও বেড়ে উঠেছে। বিদেশ মানে সত্যিই অনেক দূর।

– রাতের ফ্লাইট ছিল। তোমাকে অত চিন্তা করতে হবে না। সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে।

– আচ্ছা তুই এলি কি করে? করোনার চক্করে সব ফ্লাইট তো বন্ধ!

– হা হা হা!

সশব্দে হাসল প্রতুল!

– এই জন্য বলি শুধু স্মার্টফোন ইউজ করলেই হবেনা, মাথাটাকেও একটু স্মার্ট করতে হবে! বয়স তো তোমাদের অজুহাত! অমিতাভ বচ্চন কে দেখো! এই বয়সেও কত স্মার্ট! সবসময় আপ-টু-ডেট থাকে।

প্রতুলের চেহারাটা বেশ ভেঙে গেছে। বয়েস কি এতো তাড়াতাড়ি থাবা বসালো? প্রতুল হাত দিয়ে চুলের টেরি ঠিক করতে করতে উল্টো দিকের দেয়ালের আয়নাটার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসতে হাসতে বলে চললো। সেই ছোটবেলার দুষ্টুমি ভরা বিজ্ঞ বিজ্ঞ চোখ-মুখ!

– কদিন হলো কয়েকটা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট চলাচল চালু করেছে। দাঁড়াও তোমাকে এবার একটা দারুণ নিউজ app নামিয়ে দিয়ে যাব। শুধু হেডলাইন সামারি আসতে থাকবে, নো ডিটেইল্ড ক্র্যাপ।

প্রতুলকে প্রথম ফোনটা নির্মলাদেবী নিজের জমানো টাকা দিয়ে কিনে দিয়েছিলেন। গরীবের সংসারে ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ছে, ফোন ছাড়া কলেজে ঘোরাফেরা করা ছেলের প্রেস্টিজে ব্ল্যাক স্পট। বাইক তো আয়ত্তের বাইরে, ফোনটুকুও ম্যানেজ না করার মতো গরিব নির্মলাদেবী নিজেকে মনে করতে পারেননি।

এদিকে প্রতুলের বাবাকে ব্যাপারটা বলা মানে অকারণে অহেতুক চাপ দেওয়া। তো, গত চার বছর ধরে বাজারের টাকা থেকে সরিয়ে বিপদ আপদের জন্য যে খুচরো টাকাগুলো নির্মলাদেবী জমিয়েছিলেন, সেটা দিয়ে তিনি ছেলেকে প্রথম ফোনটা কিনে দেন। তখন স্মার্টফোন এত পপুলার হয়নি। সাধারণ নোকিয়া ফোন।

– দেখ না! এই আমফান এসে সব কেমন ছন্নছাড়া করে দিল! তছনছ করে দিলো চারদিক! আমার শিউলি গাছাটাও জানিস চারদিন আগে ভেঙে দিয়েছে!

– আজব নাম রেখেছে কিন্তু মা! আম তায় আবার ফান!

নির্মলা দেবী ছেলের পায়ের কাছে তাকিয়ে দেখছেন। আশ্চর্য! বাইরে এখনো কিছুটা জল জমে আছে। ছেলের প্যান্ট তো ভেজেনি! তা হবেও বা! বিদেশে থাকা পয়সাওয়ালা ছেলে। হয়তো বা উবের-রিকশায় চড়ে এসেছে!

– তা তোর প্ল্যান কি? মিটিং কবে? কোথায়?

প্রতুল অস্থির হয়ে একটু পায়চারি করতে করতে আনমনা ভাবে দেওয়ালের ছোটবেলার ছবিগুলো দেখছিল। ঘুরে দাঁড়িয়ে নির্মলাদেবীর চোখে চোখ রেখে আবার সেই দুষ্টুমি ভরা হাসিটা দিলো।

– এখনই তাড়িয়ে দিতে চেয়েছো চাইছো? যাব, যাব, একটু পরেই চলে যাব!

– তোর ব্যাগ কোথায়? বাক্স-প্যাটরা, ল্যাপটপ এসব কই?

– আরে চিন্তা কোরোনা! ওসব হোটেলে রয়েছে।

– হোটেল! এত বছর পর এলি, উঠলি হোটেলে!

– আরে না, দিল্লির হোটেলে ওসব রেখেছি। তোমাদের সঙ্গে দেখা করে, একটু পরেই আবার ফ্লাইট ধরে দিল্লি যাব। ওখানে মিটিং সেরে, তারপরে আবার আসবো। আজেবাজে চিন্তা রাখতো!

– মানে! তুই কি চ্যাংড়ামি করছিস আমার সঙ্গে? তাহলে আসার দরকার টা কি ছিল?

নির্মলাদেবী পারলে ব্লাউজের আস্তিন গুটিয়ে ছেলেকে বকা দিতে শুরু করছিলেন, কিন্তু নিজেকে সামলে নিলেন।

– যাই বল, তৃণাকে নিয়ে আসলেই ভালো করতিস। এটলিস্ট ওকে রেখে যেতিস এখানে, তারপর মিটিং-মিছিল যা ইচ্ছে করে, যেখানে খুশি যেতিস, আমার কিচ্ছু আসতো যেত না। ফোন কর না একটা তৃণা কে!

প্রতুল গালের না কামানো খোঁচা খোঁচা দাড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে জানলার দিকে তাকিয়ে নির্মলাদেবীর প্রশ্নের উত্তর দিতে লাগলো। ভোর বলে শুধু না, বাইরে বেশ মেঘলা বলে মনে হচ্ছে যেন এখনো রাত। কিন্তু এখন ভোর প্রায় পাঁচটা।

– আরে এখানে আসার পর থেকে টাওয়ারের প্রবলেম করছে। ইন্টারন্যাশনাল রোমিং এনাবেলই আছে, কিন্তু স্টিল কিছু একটা ইস্যু হচ্ছে। ঠিক হয়ে যাবে। তুমি কিন্তু ফালতু ওজন বাড়িয়েছো! রোজ মর্নিং ওয়াক করছো?

– চারদিকে যা জল!

– একদম বাজে কথা বোলো না! আম্ফান তো জাস্ট কদিন আগে হল! তার আগে যেন রোজ খুব হাঁটতে!

– শোন প্রতুল! বকা বন্ধ কর। চুপটি করে বস, আমি চা বানিয়ে আনছি। সঙ্গে দু’টো গরম লুচি ভেজে দিচ্ছি, আমাকে জাস্ট দু’মিনিট দে…

– আরে বসো তো! দোতালার সাধুদের কি খবর?

– সাধু নয় সাহু।

– ওই হলো! সপ্তাহে সাত দিন গেরুয়া পাঞ্জাবি পরলে সাহু সাধুই হয়ে যায়!

– সাহুর মেয়ের তো গত বছর বিয়ে হল।

– বুড়ির বিয়ে হয়ে গেছে! ও হ্যাঁ, বলেছিলে বটে! আর চক্রবর্তীদের সেই জমির ব্যাপারটার ঝামেলা মিটলো?

– ওটা তো সুবর্ণ সাহারা কিনে নিয়েছে।

– সেকি! তোমাকে বলেছিলাম না, কেনাবেচার ব্যাপার হলে আমাকে জানাতে! ভেবেছিলাম জমিটা কিনে তোমাদের আশেপাশে একটা বাড়ি বানাবো!

– আরে প্রতুল, তুই এইসব ঝামেলায় কেন যাবি? তোর কাকলি আন্টির ছেলেকে দেখ না, কি সুন্দর গেটেড অ্যাপার্টমেন্টে থাকে! উর্দি পরা দারোয়ান, তারপর লিফট আছে! বাইরের যাকে-তাকে ঢুকতে হলে, সই করে ঢুকতে হয়। তার উপর, জমি কিনে বাড়ি করতে কত ঝক্কি! তোর রাঙা-দাদুকে দেখ! আমার থেকে মাত্র এক বছরের বড়, কিন্তু কত বুড়ো লাগে এখন! বাড়ি তৈরির চক্করে এক বছরে বয়স প্রায় দশ বছর বেড়ে গেল!

বাইরে আবার টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কি ভোগান ভোগাচ্ছে!

এমন সময় ভেতরের ঘর থেকে মোবাইল বাজার শব্দ হলো।

– ওই তোর বাপির ফোনটা বাজছে! রোজ বলি ফোন অফ করে ঘুমাতে যেতে। কে শোনে কার কথা! দাঁড়া তুই, যাস না, আমি এক দৌড়ে ফোনটা রিসিভ করে আসছি!

নির্মলা দেবী ড্রইং রুম থেকে ভেতরের ঘরে ঢুকে গেলেন তড়িঘড়ি।

রজত চৌধুরী পাশ ফিরে, হাতে ভর দিয়ে বিছানায় উঠে বসলেন। সকাল-সকাল ফোনটা বাজছে। গত দু’দিন কোন ভাবেই ব্যবহার করা যাচ্ছিল না। টাওয়ারের ইস্যু। না ইনকামিং না আউটগোয়িং।

আমেরিকা থেকে এসেছে কলটা।

নির্মলা দেবী হাসি চেপে দরজার কোনা ধরে দাঁড়িয়ে বর রজতবাবু কে দেখতে লাগলেন। বেচারা জানেনা বাইরে কি সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে! প্রতুল স্বয়ং বসে আছে!

– হ্যালো!

– …..

– হ্যাঁ-হ্যাঁ, আমি রজত চৌধুরী বলছি! আপনি কে? হু ইজ দিস?

– …..

– ন… নো-নো, I am রজত চৌধুরী, প্রতুল’s ফাদার!

– ….

– What?

– …..

– When?

রজতবাবুর হাত থেকে মোবাইলটা বিছানায় পড়ে গেল।

ইউএস থেকে বিভাস শিভসুন্দরম কল করেছে। প্রতুল আর নেই।

covid-১৯ এর শিকার হয়ে হসপিটালে ভর্তি ছিল এক সপ্তাহ। এইজন্যই ছেলের সাথে কোন ভাবে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না!

রজতবাবুর গলার কাছ থেকে একটা এলোমেলো ঝড় ঘূর্ণির মতো পাক খেয়ে উঠে আসতে চাইল, ভেঙে-চুরে শেষ করে দিতে চাইল আশেপাশের আসবাব, আলমারি, ফটো-ফ্রেম, আয়না।

চোখের দৃষ্টি কেমন যেন আবছা হয়ে আসছে রজত বাবুর।

কোন রকমে খাটের পাশ থেকে চশমাটা নিয়ে, চোখে লাগিয়ে খাটের কোনা ধরে উঠে দাঁড়ালেন রজতবাবু।

প্রতুল আর নেই।

একমাত্র ছেলে প্রতুল। সাত বছর আগে, নিজের হাতে বিয়ে দিয়েছিলেন। সাড়ে-চার বছর আগে আমেরিকাগামী বিমানে তুলে দিয়েছিলেন। তারপর আর দেখা হয়নি প্রতুলের সঙ্গে। শুধু ফোনে কথা আর স্কাইপের কাঁপা কাঁপা ভিডিও চ্যাট। তাও লাস্ট কয়েক সপ্তাহ ধরে এই আম্ফানের চক্করে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ।

রজতবাবু কোনরকমে বিছানার পাশের ফটো ফ্রেমটার সামনে এসে, আলমারিটা ধরে দাঁড়ালেন।

ছেলের ফটো। উপরে দেওয়ালে নির্মলাদেবীর ফটো।

নির্মলার ফটোর দিকে তাকিয়ে রজত বাবু বিড়বিড় করে কিছু বলতে লাগলেন। বাইরে বৃষ্টি বেড়ে গেছে। তার নিজের কানেই নিজের কথাগুলো বেশ দুর্বল ও অস্পষ্ট লাগছিলো।

– প্রতুলের বড্ড তাড়া ছিল তোমার সাথে দেখা করার। ওকে দেখে রেখো! জানিনা কেন তোমরা আমাকে এভাবে জাস্ট কয়েক দিনের মধ্যে একা করে চলে গেলে!

বাইরে খুব জোরে কাছাকাছি কোথাও একটা বাজ পড়লো।

বকুল ফুলের একটা তীব্র গন্ধে ভেসে যেতে যেতে রজতবাবুর মনে হলো, তিনি যেন একটা অদরকারি, কিন্তু প্রচণ্ড দরকারি রকম স্বপ্নের মধ্যে আটকে গেছেন। তিনি কি এখনো ঘুমাচ্ছেন, নাকি তার ঘুমিয়ে পড়া জরুরি, কিছু বুঝে উঠতে না পেরে, আলমারির কোনটা ধরে রজতবাবু আস্তে আস্তে মেঝেতে বসে পড়লেন।

বুক ভরে, চারদিন আগে ভেঙে যাওয়া সেই বকুল গাছের ফুলের গন্ধটা নিতে থাকলেন রজতবাবু।

About Post Author

9F10 AB

Click to rate this post!
[Total: 0 Average: 0]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অমীমাংসিত | ভয়ের দেশ | মহম্মদ নবিল উল্লাহ| Bengali Horror Story Previous post অমীমাংসিত | ভয়ের দেশ | মহম্মদ নবিল উল্লাহ| Bengali Horror Story
Next post কালিম্পং এ কয়েন রহস্য | বাংলা গোয়েন্দা প্রিমিয়ার লীগ | সৌরভ সেন| Bengali Detective Story