মুখোশের আড়ালে| বাংলা গোয়েন্দা প্রিমিয়ার লীগ | সৌভিক সরকার | Bengali Detective Story
0 (0)

প্রথম পর্ব

ডিসেম্বর মাসের শুরুতে জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। দু’দিকে অসংখ্য ঝোপঝাড় পেরিয়ে ছুটতে লাগলো মধ্যরাতে সুপারফাস্ট জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটা। চারদিকে অসংখ্য বড় বড় গাছ দেখে যেন মনে হয় বিশাল বিশাল দৈত্য দাঁড়িয়ে আছে। ট্রেনের ঝন ঝন আওয়াজ যেন কানে তালা পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা একেবারে। বাইরেটা এতটাই ঘুটঘুটে অন্ধকার কোনো জায়গায় আলোর উৎস মাত্র নেই।

নির্দিষ্ট সময়ে কিষানগঞ্জ নামক স্টেশনে থামল ট্রেনটি। জনশূন্য প্ল্যাটফর্মটা যেন খাঁ খাঁ করছে, দু’একটা চায়ের দোকান থাকলেও অর্ধেক ঝাঁপ খোলা অবস্থায় রয়েছে, হালকা আলোয় স্টেশনের নামটি উজ্জ্বল হয়ে আছে কোনোরকম।

ঢং, ঢং – ট্রেন ছাড়ার শব্দ শোনা গেল।

প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে এগিয়ে যেতে না যেতেই হঠাৎ থেমে গেল ট্রেন।

– “একি ট্রেনটা আবার দাঁড়িয়ে পড়ল কেন?”

– “দাঁড়াও দাদা আমি দেখে আসছি।”

এই বলে বগির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে উঁকি দিয়ে দেখল রনজিৎ।

– “দাদা, ট্রেনের একটা কামরার বাইরে একদল পুলিশ এসে ঘেরাও করেছে। সেই কামরাটির বাইরে দাড়িয়ে থাকা যাত্রীদের মুখে ভয় ও আতঙ্কের ছাপ দেখা যাচ্ছে।”

– “চল তো দেখে আসি একবার।”

পাতলা কম্বলটা গায়ে জড়িয়ে রনজিৎ ও তার দাদা যেতে থাকল সেই কামরার দিকে। প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা সকলে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সেই কামরার জানলার দিকে। আবার অনেকে ফিসফিস করে বলছে, “ট্রেনের মধ্যে খুন, ভাবলেই ভয়ে যেন প্রাণ চলে যায়।”

রনজিৎ এর দাদার কানে সেই কথা আসায় তাদের মুখগুলোর দিকে একবার তাকালেন তিনি।

– “অফিসার, বডি কি পোস্টমর্টেম এর জন্য পাঠানো হয়েছে?”

পুলিশ ইন্সপেক্টর বললেন, “না, কেন বলুন তো?”

অর্ধেক ঢাকা মুখের ওপর থেকে কম্বলটি সরিয়ে রনজিৎ-এর দাদা বলল, “একবার দেখার ইচ্ছে ছিল।”

– “আরে, এ আমি কাকে দেখছি! ইন্দ্রবাবু যে, আসুন আসুন দেখে যান।”

তারপর তারা দু’জনে ট্রেনে উঠে পড়েন। রনজিৎ এর দাদা হলেন ইন্দ্রজিৎ মুখোপাধ্যায়, ডাকনাম ইন্দ্র, অনেক জটিল কেসের সমাধান করেছেন তিনি। সরকারি দপ্তর থেকে অনেকবার চিঠি আসে গোয়েন্দা বিভাগে জয়েন করার জন্য, কিন্তু করেননি তিনি। ইন্দ্রবাবুর মতন অমন সুন্দর চেহারা সচরাচর চোখে পড়ে না। ঘাড় অব্দি লটকানো ঘন চুল, টানা টানা চোখ আর টকটকে ফর্সা গায়ের রং, ঠিক যেন চাঁপা ফুলের পাপড়ির মতো, বয়স খুব বেশি নয়। ওঁর একমাত্র ভাই হলেন রনজিৎ মুখোপাধ্যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন, দাদার সাথে রহস্যের সমাধান করার অভিজ্ঞতা তারও কম বলা যায় না, বেশ বুদ্ধিসম্পন্ন ও সাহসী ছেলে।

পুলিশ ইন্সপেক্টর মলয় বাগচী বললেন, “টাটকা রক্ত দেখে মনে হচ্ছে কিছু সময় আগেই খুন করা হয়েছে, আপনি কি বুঝছেন ইন্দ্রবাবু?”

– “হ্যাঁ সেটাই তো দেখছি।”

মৃতদেহের চারপাশে রক্তের বন্যায় ভেসে যাচ্ছে, তলপেটের ক্ষতস্থান থেকে ক্রমাগত রক্ত ঝরে পড়ছে।

– “এঁর পরিচয় জানতে পেরেছেন ইন্সপেক্টর?”

– “হ্যাঁ ,ইনি একজন অধ্যাপক, নাম অমল কুমার সেন, বাড়ি ধর্মতলার দিকে। ওঁর ভাই বিমলবাবুর কাছে থেকে জানা যায়, দুই ভাই একসাথে জলপাইগুড়ি ঘুরতে যাচ্ছিলেন।”

মৃতদেহের হাতের কাছে একফালি আপেল পড়ে থাকতে দেখে এগিয়ে যান ইন্দ্রবাবু। তারপর ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে বোঝেন, আপেলটি ছুরি দিয়ে সাইজ মতো কাটা হয়েছে, আর যদি ছুরি দিয়ে না কেটে গোটা খেতেন তাহলে দাঁতের ছাপ থাকত, কিন্তু সেটা নেই।

হঠাৎ চোখ পরল অর্ধেক ঢাকা জানলার দিকে, অবশ্য অর্ধেক না বললেও চলে কোনোরকম আটকে আছে সেটা, যে কোনও সময় পড়ে যেতে পারে। সেই জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই ইন্দ্রবাবুর চোখ আটকে গেল, জঙ্গলি গাছের ওপর পড়ে আছে রক্তমাখা ছুরি আর তার পাশে ইনজেকশন সিরিঞ্জ সেই ব্যাপারে ইন্সপেক্টরকে জানাতেই তার দু’টো কনস্টেবল গিয়ে সেটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এরপর ইন্দ্রবাবু ও পুলিশ ইন্সপেক্টর ট্রেন থেকে নেমে আসেন, অমলবাবুর দেহটি পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়।

ইন্সপেক্টর বাগচী বললেন, “বিমলবাবু, আপনার দাদাকে যখন খুন করা হয়, আপনি তখন কোথায় ছিলেন?”

বিমলবাবু বললেন, “আমি বাথরুমে গিয়েছিলাম, দাদা তখন ঘুমোচ্ছিল।”

“আপনার কাউকে সন্দেহ হয় কি?”

হাতজোড় করে কাঁদতে কাঁদতে বিমলবাবু বললেন, “আমি কিছু জানি না। আমার মনের অবস্থা খুব খারাপ। আপনি আমাকে বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিন, বৌদি এই খবর শুনলে সামলাতে পারবে না নিজেকে।”

বিমলবাবুর কথা শোনার পর বাড়ি ফেরার অনুমতি দেন ইন্সপেক্টর।

“দেখলেন আপনি, বিমলবাবুর হাতের অনামিকা আঙ্গুলে থাকা আংটির একপাশে লাল রক্তের দাগ শুকিয়ে রয়েছে?” বাগচীবাবু ফিসফিস করে ইন্দ্রবাবুর কানে বললেন।

“হ্যাঁ, তাই দেখলাম।”

“সিটের আশেপাশে, বগির গেটের সামনে আর ওঁর আংটিতে শুধুমাত্র রক্তের দাগ আর কোথাও দেখা যাচ্ছে না, বেশ অদ্ভুত লাগছে ব্যাপারটা।”

কথাগুলো শুনতে শুনতে ইন্দ্রবাবু চোখ গিয়ে পড়ল স্টেশনের প্রবেশপথের দিকে। একজন ধূসর বর্ণের চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে, সে দিকে এগিয়ে যান ইন্দ্রবাবু ও ইন্সপেক্টর। কাছে গিয়ে হাতে থাকা লাঠিটা দিয়ে ইন্সপেক্টর দু’একবার ঠেলা দিয়ে বললেন, “এই যে, মশাই শুনতে পাচ্ছেন?”

গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন লোকটি অনেক কষ্টে চোখ খুলে পুলিশকে দেখে আঁতকে উঠে বলল, “হুজুর, আমি কিছু করিনি আমাকে ছেড়ে দিন।”

– “হ্যাঁ জানি আপনি কিছু করেননি। কিছুক্ষণ আগে সন্দেহজনক এমন কাউকে দেখেছেন।”

মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে লোকটি বলল, “একজন বদমাশ লোক আমার পায়ের ওপর পা দিয়ে চলে গেল, একবারও পিছন ফিরে দেখল না পর্যন্ত!”

সপ্রশংস দৃষ্টিতে ভদ্রলোকটির দিকে তাকিয়ে ইন্দ্রবাবু বললেন, “কেমন দেখতে ছিল সে?”

“বেশ লম্বা, মোটাসোটা, দু’পাশে ঝোলানো গোঁফ, পরনে হালকা চাদর আর পায়ে মোটা সোলের বুট।”

– “আচ্ছা প্লাটফর্মে এসে কি করছিল সে সেটা দেখেছেন?”

“না তা জানি না কিন্তু পায়ের ওপর লাথি মেরে যখন চলে যাচ্ছিল তখন একটা কাগজ ফেলে দিয়ে যায়।”

– “কিসের কাগজ?” ইন্দ্রবাবু বললেন।

– “হুজুর আমি মূর্খ মানুষ তাই পড়তে পারি না বলে ওই পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছি।”

এই কথা শোনার পর সাথে সাথে ডাস্টবিন থেকে সেই কাগজটি বের করা হয় আর সেই কাগজের লেখাটি দেখে ভাবনায় ডুবে যায় ইন্সপেক্টর ও ইন্দ্রবাবু। চিরকুটটিতে বড় বড় করে কালো কালির পেন দিয়ে লেখা N.W.T! এটা কি ধরনের সংকেত বা সংকেতটি কী বোঝাতে চাইছে? এইসব যেন রহস্যের দানা বাধতে শুরু করেছে ইন্দ্রবাবুর মাথায়। কিছুক্ষণ পরে স্টেশন মাস্টার জানান দশ মিনিট পর ট্রেনটি ছাড়া হবে। পুলিশ যাত্রীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে।

দ্বিতীয় পর্ব

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, অমরবাবুর পাশের সিটে ছিলেন নিরঞ্জনবাবু, তার স্ত্রী ও মেয়ে। নিরঞ্জনবাবু মোবাইলে একটা ফোন এসেছিল সেই ফোনের আলোয় দেখতে পান অমলবাবুর রক্তাক্ত দেহটি পড়ে আছে, তারপর তিনি চিৎকার করে সকলকে ডাকেন।

ইন্দ্রবাবু বললেন, “নিরঞ্জন বাবু আপনি ওনাকে আপেল খেতে দেখেছিলেন কি?”  

– “না আমি ঘুমিয়েছিলাম, দেখিনি।”

নিরঞ্জনবাবুর মেয়ে বললো, “আমি দেখেছি আংকেলকে আপেল খেতে।

মেয়েটির হাত দু’টি ধরে ইন্দ্রবাবু হেসে বললেন, “কি দেখেছ তুমি?”

– “আমি লাইটের আলোয় ঘুমোতে পারছিলাম না তাই ওঁকে বললাম লাইটটা বন্ধ করার জন্য। তখন উনি আমাকে একটা গোটা আপেল খেতে দিচ্ছিলেন। আমি নিইনি, বাইরের লোকের দেওয়া খাবার খাই না, তাই। পাশের আংকেলটা আপেল কাটছিল আর উনি খাচ্ছিলেন।”

– “কি রঙের ছুরিটা ছিল দেখেছো?”

– “লাল রংয়ের।”

রহস্যের জালটা যেন আরও মজবুত হয়ে যাচ্ছে, রক্তমাখা ছুরিটাও লাল হাতলের, তাহলে কি ওই ছুরি দিয়েই মারা হয়েছিল? এই সব কথা ভাবতে থাকেন একের পর এক ইন্দ্রবাবু। ট্রেনটি জলপাইগুড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা দিল আর সেই বগির প্রত্যেক যাত্রীর ঠিকানা ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাখে পুলিশ।

ইন্দ্রজিৎ ও তার ভাই বাড়ি ফিরে আসেন।

পরেরদিন দুপুরে ডিমের কালিয়া ও ভাত খেয়ে কেসটার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েন ইন্দ্রবাবু। রাত নটার দিকে টেলিফোনটি বেজে উঠল।

– “হ্যালো কে বলছেন?”

– “ইন্সপেক্টর মলয় বাগচী স্পিকিং”

– “হ্যাঁ বলুন”

– “কাল সকালে আমি আর আপনি দুজনে অমলবাবুর বাড়ি যাব, রেডি হয়ে থাকবেন।”

– “ঠিক আছে, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এর কি খবর?”

– “অমলবাবুকে খুন করার আগে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয় খাবারে মিশিয়ে – সেটা জানা যায় রিপোর্টে।”

ফোনটা রেখে দিয়ে কাঠের চেয়ারে বসে একমনে ভাবতে থাকেন ইন্দ্রবাবু। পরদিন রবিবার বলে বেশ ছুটির ভাব ছিল পরিবেশ জুড়ে। ব্রেকফাস্টে চায়ের সাথে ডিম টোস্ট খেয়ে ইন্দ্রবাবু, রনি ও ইন্সপেক্টর বাগচী রওনা দিল অমলবাবুর বাড়ির দিকে।

হাওড়া শহরের উপকণ্ঠে অমলবাবুর বাড়ির সামনে যখন পুলিশ জীপটা এসে পৌঁছল বেলা তখন বারোটা। সাবেক কালের বনেদি বাড়ি, চারপাশে বেশ জায়গা রয়েছে, তাতে হাজারো গাছপালা। বাড়ির ভেতরটা দেখে বোঝা যায় পরিবারের লোকদের রুচি বেশ উচ্চমানের। ড্রয়িংরুমে ওদের সঙ্গে প্রথমেই দেখা হল সাবিত্রী দেবীর। মাঝবয়সী মহিলা, ঘন কালো চুল মাথায়, পরনে সাদা থান। একটু পরে তিনি ট্রেতে করে তিনটি লেবুর শরবতের গ্লাস নিয়ে এসে তাদের সকলের হাতে তুলে দেন। ওঁর মনটাও যে কত শোকে পরিপূর্ণ তার সঙ্গে কথাবার্তা বলার সময় অনুমান করা যায়।

শরবতের গ্লাসে একবার চুমুক দিয়ে বাগচীবাবু বললেন, “সাবিত্রী দেবী, আচ্ছা এবারে বলুন তো অমলবাবুর খুনের ব্যাপারে আপনি কি কাউকে সন্দেহ করেন?”

– “ওরাই আমার স্বামীকে হত্যা করেছে আমি জানি।”

– “কারা খুন করেছে?”

– “যারা মূর্তিটা বিক্রি করার জন্য আমার স্বামীকে হুমকি দিয়েছিল।”

– “মূর্তির সাথে আপনার স্বামীর খুনের কি সম্পর্ক? ব্যাপারটা খুলে বলুন তো!”

– “এক শিল্পপতি বন্ধু আমার স্বামীর জন্মদিনে উপহার দেন দামি পাথরের তৈরি শিবের মূর্তি। কিছুদিন আগের কথা – আমি আর আমার স্বামী মার্কেটিং করতে গিয়েছিলাম। সেখানে অবিকল আমাদের বাড়ির শিবের মূর্তির মতো আর একটি মূর্তি দেখে আমার স্বামী উচ্চস্বরে বলেন, ‘ওই মূর্তিটা যেন আমাদের বাড়ির মূর্তিটার মতো দেখো।’ আর কথা বাড়াতে না দিয়ে সোজা বাড়ি ফিরে আসি দু’জনে।”

ইন্দ্রবাবু বললেন, “তারপর কী হল!”

– “তিন-চারদিন পর, বাড়ির টেলিফোনে রাত এগারোটা নাগাদ অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসে। আমার স্বামী ফোন রিসিভ করতেই একজন বলে যে, শিবের মূর্তিটা তাদের কাছে বিক্রি করার জন্য। অনেক টাকার লোভ দেখায়। আমার স্বামী মানতে রাজি না হওয়ায় তাকে হুমকি দেয়, যে তাকে খুন করে দেবে।”

ইন্দ্রবাবু বললেন, “আপনারা থানায় রিপোর্ট করেননি এই বিষয়ে?”

– “না উনি করতে চাননি, এই চাপা স্বভাবের জন্য আজ এই পরিণতি হল। আমার স্বামীর সিদ্ধান্তের ওপর কখনও কথা বলিনি কিন্তু আমি প্রতি মুহূর্তে খুব আতঙ্কে থাকতাম।”

জিজ্ঞাসাবাদ যতই চলছে অবস্থা ততই ঘোরালো হয়ে উঠছে, ইন্দ্রবাবুর কাছে বেশ রহস্যময় হয়ে উঠেছে ব্যাপারগুলো।

বাগচীবাবু বললেন, “আপনার কথা শুনে যা বোঝা যাচ্ছে হত্যাকারী সেই মূর্তিটার জন্য তাকে খুন করে। আচ্ছা আপনি জলপাইগুড়ি ঘুরতে গেলেন না কেন ওঁদের সাথে?”

– “আমার শাশুড়ির শরীরের অবস্থা খুব গুরুতর, তাই যেতে পারিনি। আর ওঁর সাথে বিমল থাকায় দুশ্চিন্তা কম ছিল।”

ইন্দ্রবাবু সন্দেহের সুরে বললেন, “বিমলবাবুর এমন কোনো স্বভাব আছে যেটা আপনার অপছন্দের?”

কিছু সময় চিন্তা ভাবনা করে সাবিত্রী দেবী বললেন, “হ্যাঁ একটা স্বভাব অপছন্দের আমার কাছে, সেটা হল দরজার আড়ালে থেকে কান পেতে শোনা ।”

“আচ্ছা আপনি এবার আমাদের বিমলবাবুর ঘরে নিয়ে চলুন।”

ড্রয়িংরুমের শেষে সিঁড়ি দিয়ে উঠে দোতালায় বারান্দার গায়ে প্রথমে যে ঘরটি ছিল সেটা বিমলবাবুর। ঘরের মধ্যে একটা তক্তাপোশ, দু’টি টেবিল ও কাঠের চেয়ার এবং বুকসেলফ রয়েছে। খাট, টেবিল ও মেঝের ওপর নানা ধরনের বিচিত্র জিনিসপত্র সাজানো হয়েছে, বেশ পরিপাটি ধরনের মানুষ সেটা অনুমান করা যায়।

বিমলবাবু চোখের সামনে থেকে বইটা টেবিলের ওপর নামিয়ে রেখে ক্লান্তভাবে মাথাটা চেয়ারের গায়ে হেলিয়ে বসে রয়েছেন। পুলিশ ইন্সপেক্টর বাগচীবাবু বললেন, “ভিতরে আসতে পারি আমরা?”

তারপর চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে আসলেন তাদের কাছে, বড় বড় চোখে অন্যমনস্ক দৃষ্টি তার।

বিমলবাবু বললেন, “আসুন অফিসার।”

– “ধন্যবাদ।”

ইন্দ্রবাবু ও রনির দিকে তাকিয়ে বিমলবাবু বললেন – “আপনাদের পরিচয়!”

– “আমি ইন্দ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় আর এ আমার ভাই রনি, বাগচীর বন্ধু আমরা।”

তারপর তাদের সকলকে কাঠের চেয়ারে বসার অনুরোধ জানান বিমলবাবু।

– “আচ্ছা এবারে বলুন তো আপনার দাদার ওই শিবের মূর্তি চুরির ব্যাপারে আপনি কাউকে সন্দেহ করেন কি?”

– “দাদার মুখে মূর্তি বিক্রি করার জন্য হুমকি দেওয়ার কথা শুনেছিলাম, কিন্তু তার জন্য খুন করবে অপহরণকারীরা সেটা ধারণা ছিল না।” বিমলবাবু উদাসীন হয়ে বললেন।

– “সেই রাতে কোনো হকার এর কাছ থেকে আপেলগুলো কিনেছিলেন কি?” ইন্সপেক্টর এর পরবর্তী প্রশ্ন।

– “না আমি বাড়ি থেকে দু’টো আপেল নিয়ে গিয়েছিলাম।”

– “গভীর রাতে আপেল খাওয়ার কারণ কী?” ইন্দ্রবাবুর সবিনয় প্রশ্ন।

– “ আমার খুব খিদে পেয়েছিল, তো একা একা খাব, তাই দাদা আর আমি দু’জন মিলে খেলাম।”

– “আপেলটা যে ছুরি দিয়ে কাটা হয়েছিল সেটি কোথায়?” ইন্সপেক্টর প্রশ্ন করল।

টেবিলের ড্রয়ার খুলে ছুরিটা ইন্সপেক্টরের হাতে তুলে দেন বিমলবাবু।

ছুরিটার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আশ্চর্য হয়ে ওঠে সকলে। রক্তমাখা লাল হাতলের ছুরিটার মতো ছুরিটা দেখেই বাগচীবাবুর মাথায় হাত পড়ে যায়।

ইন্দুবাবু দু’-তিন মিনিট চিন্তা ভাবনা করে বিমলবাবুকে বললেন, “অমলবাবুর সাথে কেমন সম্পর্ক ছিল আপনার?”

– “দাদা আমাকে খুব ভালোবাসত, অনেক ভরসা করত। দাদাকে আমি বাবার চোখে দেখতাম। দাদা মারা যাবার পর থেকে, ওঁর খাওয়া চায়ের কাপে আমি চা খাই, আর মনে করতে থাকি দাদার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো।”

ইন্দ্রবাবু অনুনয়ের ভাবে বললেন, ” কিছুদিনের জন্য চায়ের কাপটি আমাদের দেবেন?”

– “হ্যাঁ নিতে পারেন অসুবিধা নেই।”

তৃতীয় পর্ব

জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করে, অমলবাবু ঘরটা নিখুঁতভাবে তল্লাশি করে, কিছুক্ষণ পর ওঁরা তিনজন বেরিয়ে পড়লেন সেখান থেকে।

পুলিশের জীপে করে যেতে যেতে ইন্দ্রবাবু বললেন, “কেসটা কঠিন নয়, আবার সহজ বলে মনে করা যাচ্ছে না, আনকম্ফোর্টেবল ফিলিংস।”

– “মার্ডার কেসের সাথে মূর্তি চুরি, আচ্ছা আপনার কি মনে হচ্ছে অপহরনকারীরা মূর্তি চুরি করে মার্ডার করেছে?” ইন্সপেক্টর বাগচী প্রশ্ন করল ইন্দ্রবাবুকে।

– “হতেও পারে।”

– “পোস্টমর্টেম রিপোর্টে জানা গেছে, ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর খুন করা হয়। তাহলে খুনী কখন ঘুমের ওষুধ মেশায় খাবারে? রক্তমাখা ছুরিটার মত একই দেখতে বিমলবাবুর ছুরিটা। আবার সিট এর কাছাকাছি আর গেটের সামনে রক্ত কেন? কেসটা বেশ জটিল হয়ে যাচ্ছে।”

রনজিৎ ইন্সপেক্টরের কথা শোনার পর একটু ভেবে বলল, “ছুরিটা নতুন একদম, কারণ দু’বছর ধরে ওটা ব্যবহার করলে কাগজে লেখা কোম্পানির নামটা উঠে যেত, ধারটাও কম থাকত।”

– “হ্যাঁ তুমি ঠিক বলেছো আমি সেটা নিয়ে ভাবতে ভুলে গেছি।”

– “ আমার মনে হয়, বিমলবাবুকে থানায় নিয়ে গিয়ে বেশ কঠিন করে জেরা করলে সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হবে।” রনি বলল।

– “না, সবেমাত্র রহস্যভেদের প্রশ্নমালা শুরু হয়েছে, এর উত্তর পাবার সময় এখনো আসেনি। বাগচীবাবু আপনি অমলবাবুর খাবার চায়ের কাপটি ফরেনসিক ল্যাব এ পাঠিয়ে দিন এবং ট্রেনের বগির গত শুক্রবার রিজার্ভেশন টিকিটগুলোর সম্পর্কে খোঁজখবর নিন।” ইন্দ্রবাবু বললেন।

বাড়ি ফিরে আলু সিদ্ধ ভাতে ঘি মিশিয়ে ডিম সেদ্ধ দিয়ে খেলেন ইন্দ্রবাবু ও তার ভাই রনি। কিছুক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করতে থাকেন, তারপর ভাবনা চিন্তা করতে করতে ইন্দ্রবাবু ঘুমিয়ে পড়েন।

পরদিন পুলিশ তদন্তের জন্য চলে যায় বিমলবাবুর অফিসে, কিন্তু এক আশ্চর্য ব্যাপার জানা গেল সেখান থেকে। তদন্ত সূত্রে মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, গত শুক্রবার মানে জলপাইগুড়িতে ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমলবাবু কোনো ছুটি নেননি আর সোমবার দিন যে আসবেন না কাজে সেটাও জানাননি। অমলবাবুর ছুটির ব্যাপারে জানা যায় যে তিনি এক সপ্তাহের জন্য ছুটি নিয়েছেন ঘুরতে যাবেন বলে। এইসব ব্যাপারগুলো পুলিশ ও ইন্দুবাবুর কাছে বেশ সন্দেহজনক বলে মনে হয়। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে সারাটা দিন চলে গেল ইন্দ্রবাবুর।

সন্ধ্যেবেলায় গরম চায়ের সাথে চানাচুর দিয়ে মুড়ি আর তেলেভাজা খাচ্ছেন। চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে রনি বলল, “আচ্ছা দাদা চিরকুটে লেখা N.W.T সংকেত এর অর্থ জানতে পারলে কি?”

– “না, আমি সেই সংকেতের অর্থ সম্বন্ধে জানার চেষ্টা করে যাচ্ছি।”

হতাশা ভাব নিয়ে সাথে রনি বলল, “তোমার এই কেসের তদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি ঘোরার প্ল্যানটা পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেল।”

– “ভাই, নেক্সট উইকে মঙ্গলবার দিন যাব, মন খারাপ করিস না।”

কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে রনি বলল, “দাদা ওই চিরকুটের N.W.T সংকেতের মানে এরকমও তো হতে পারে NEXT WEEK TUESDAY.”

– “ঠিক বলেছিস সেটা হতে পারে বলে মনে হয়।”

এমন সময়ে ক্রিং ক্রিং ক্রিং শব্দ সুরে টেলিফোন বেজে উঠল। ইন্দ্রবাবু উঠে গিয়ে, রিসিভারটা কানে ধরে বললেন, “হ্যালো।”

– “ ইন্সপেক্টর মলয় বাগচী স্পিকিং”

– “কী খবর?”

– “আপনি থানায় একবার আসুন তো তাড়াতাড়ি।”

রিসিভারটা রেখে হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে পড়লেন ইন্দ্রবাবু। বাড়ির সামনের গলির মোড় থেকে ট্যাক্সি করে পৌঁছে গেলেন থানায়। তারপর বেশ কিছুক্ষণ কথপোকথনের পর সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত প্রায় বারোটা নাগাদ ফিরলেন ইন্দ্রবাবু। রাতে সামান্য কিছু খেয়ে দেশলাই দিয়ে সিগারেট ধরিয়ে মুখে নিয়ে একবার টান দিয়ে তিনি বললেন, “কাল ব্যাগপত্র ঠিক করে গুছিয়ে রাখিস সন্ধ্যার ট্রেনে জলপাইগুড়ি উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেব।”

– “দাদা, টিকিট পাওয়া অসম্ভব হয়ে উঠবে।”

– “সে ব্যাপারে ভাবতে হবে না, সব প্রস্তুত আছে।”

কিছুক্ষণ জানলার পাশে দাঁড়িয়ে, পরবর্তী পর্যায়ে কাজগুলো কীভাবে শেষ করবেন ভাবতে ভাবতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়েন ইন্দ্রবাবু।

পরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যে ছটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরলেন ইন্দ্রবাবু ও তাঁর ভাই। রাত আটটার সুপারফাস্ট জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে করে রওনা দিলেন। গত শুক্রবারের থেকে ঠান্ডা কম ছিল সেদিন। কালো অন্ধকার জগতের দিকে ছুটে চলেছে ট্রেনটা।

রাত তিনটে নাগাদ কিশানগঞ্জ স্টেশন থামল, ট্রেনের একটি বগি থেকে খর্ট খর্ট জুতোর শব্দ প্ল্যাটফর্মের ঘন অন্ধকার দিকটায় চলে গেল, সেই সময় বেশ লম্বা-চওড়া চেহারার কালো চাদর পড়া একটি লোক কি যেন আদান প্রদান করছে! অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা পাঞ্জাবি পরা লোকটির পিঠে রিভলবারের নলটি ঠেকিয়ে ইন্দ্রবাবু বললেন,

“মশাই, মূর্তিটা আমার কাছে বিক্রি করতে পারতেন, আমি আপনাকে কোটিপতি করে দিতাম।”

কথাটা শুনে চাদর পড়া লোকটি ছুটে পালাতে যায়। ঠিক সেই সময় তার পায়ে কনস্টেবলের বন্দুকের ছোঁড়া গুলি লাগে। মাটিতে চিৎকার করে পড়ে যায় সে। পুলিশকর্মীরা তাকে ধরে কিল ঘুঁষি মারতে থাকলে সে তার পকেটে থেকে রক্তমাখা কাপড় জড়ানো পাথরের মূর্তিটা ইনস্পেক্টরের হাতে তুলে দেয়।

ইন্দ্রবাবু বললেন, “দাদাকে এতটাই ভালোবাসতেন ও শ্রদ্ধা করতেন যার কারণে তাকে খুন করে দিলেন, বাহ্!”

উচ্চস্বরে বিমলবাবু বললেন, “হ্যাঁ, আমি অপরাধী। আমি মেরেছি দাদাকে।”

ইন্সপেক্টর বললেন, “ব্যাপারটা পুরো খুলে বলুন তো?”

– “আদ্দিকালের বাড়িতে থাকতে ভাল লাগছিল না। দাদাকে কতবার বললাম বাড়িটি বিক্রি করে নতুন ফ্ল্যাট কিনে থাকি সকলে। কিন্তু আমার কথা শুনলও না, আর টাকাও দিল না, মনে মনে ক্ষোভ জন্মেছিল অনেক দিন। তাই মূর্তিটা বিক্রি করলে বেশ অনেকখানি টাকার অধিকারী হতে পারব – এই ভেবে মূর্তিটা চুরি করে বিক্রি করে দিলাম, নব্বই লক্ষ টাকার বিনিময়ে। গত শুক্রবার মূর্তিটি নকল কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য আসতে হয়েছিল, তার আগে ওরা পঞ্চাশ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেয়। আর আজ বাকি টাকাটা নিতে এসেছিলাম।”

ইন্দ্রবাবু মৃদু হেসে বললেন, “এত সুন্দর ভাবে প্রমাণগুলো আড়াল করে খুনটা কীভাবে করলেন বলুন এবার?”

– “সেদিন গভীর রাতে ট্রেনটা কিষানগঞ্জ স্টেশনে আসার আগে আমার খিদে পেয়েছে বাহানা দেখিয়ে দাদাকে ঘুমের ওষুধ মেশানো আপেলটা খাইয়ে দেই। তারপর অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সে। লাইটটা অফ করে আপেল কাটার ছুরিটা দিয়ে ওর তলপেটে বেশ কয়েকবার আঘাত করি। এরপর ছুরি ও ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জটা ছুঁড়ে ফেলে দিই জানলার বাইরে। ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরে পড়ছিল, যদি আর কিছুক্ষণ সেখানে থাকতাম তাহলে অনেক প্রমান চোখে পড়ে যেত সকলের কাছে। আর দেরী না করে একটা কাপড়ে মূর্তিটা জড়িয়ে ট্রেন থেকে নেমে গিয়েছিলাম।”

হাতের আঙ্গুল দিয়ে চাদর জড়ানো লোকটিকে দেখিয়ে বিমলবাবু বললেন, “এই লোকটির হাতে দিয়ে পালাতে যাব, এমন সময় বগির ভেতর থেকে কেউ একজন খুন খুন বলে চিৎকার করে ওঠে। ফলে চলন্ত ট্রেন থেমে যায়। সেই সময় যদি পালিয়ে যেতাম তাহলে সবাই সন্দেহ করত আমি খুন করেছি। তাই ছুটে চলে যাই ট্রেনের বাথরুমে। ওখান থেকেই কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে আসি। একটা অবিকল রক্তমাখা ছুরির মতো একটা ছুরি কিনে রেখেছিলাম যাতে, পুলিশ তদন্ত করতে অসুবিধায় পড়ে যায়।”

ইন্দ্রবাবু বললেন, “ছুরিটা নকল ছিল বলে ধরা কঠিন হত। কিন্তু অমলবাবুর চায়ের কাপে আপনার হাতের ছাপের সাথে রক্তমাখা ছুরির হাতলে থাকা ছাপ মিলে যায়। আর আপনার লেখা চিরকুটের সংকেতের জন্য ধরা পড়ে গেলেন। এবার জেলে বসে ফাঁসির স্বপ্ন দেখুন আর সেটা পূরন করার দায়িত্ব আইনকানুনের।”

হাতকড়া পরিয়ে বিমলবাবুকে টানতে টানতে নিয়ে যায় কনস্টেবল ও পুলিশকর্মীরা। তারপর ইন্সপেক্টর মলয় বাগচী হাতে রিভলভার তুলে দিয়ে ইন্দ্রবাবু বললেন, “আর এটার দরকার নেই।”

ইন্সপেক্টর সরকারি দপ্তরের চিঠিটা ইন্দ্রবাবুর হাতে দিয়ে বললেন, “আজ থেকে আপনি সরকারি গোয়েন্দা হিসেবে পরিচিত হলেন। এটা অনুরোধ নয়, সরকারের দেওয়া আপনাকে উপহার।”

– “অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ও আপনার ডিপার্টমেন্টকে।”

কিষানগঞ্জ স্টেশনে ঘোষণা করা হল – ‘সুপারফাস্ট জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্লাটফর্ম ছেড়ে যাবে কিছুক্ষণের মধ্যেই’।

রনির পিঠ চাপড়ে ইন্দ্রবাবু বললেন, “তাড়াতাড়ি উঠে পড়, আমাদের জলপাইগুড়ি অভিযান শুরু করতে হবে।”

আনন্দ উল্লাসে হাসতে হাসতে রনি বলল

– “গোয়েন্দা ইন্দ্রজিৎ মুখোপাধ্যায়কে সেলাম।”

About Post Author

9F10 AB

Click to rate this post!
[Total: 0 Average: 0]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post দাদুর মৃত্যু রহস্য | বাংলা গোয়েন্দা প্রিমিয়ার লীগ | ভাবনায়: সন্মিতা দেবনাথ| কলমে: কুমকুম দাস বর্মন| Bengali Detective Story
Next post তন্ময়| বাংলা গোয়েন্দা প্রিমিয়ার লীগ | ফরহিন ইসরাত মেহেরীন| Bengali Detective Story