মৃত্যু আয়না | ভয়ের দেশ | সাদাফ মান্নান| Bengali Horror Story
0 (0)

Getting your Trinity Audio player ready...

আরিস খান পুলিশের কর্মকর্তা. এরই মধ্যে দুর্ধর্ষ সমস্ত Case solve করে হইচই ফেলে দিয়েছে, তাই এবার এক বর্ডার এলাকায় তার বদলি হয়েছে। এখানে এক চক্র অবাধে দেশ থেকে পাচার ব্যবসা চলছে কোনোভাবেই তাদের মাথাকে ধরা যাচ্ছে না যদিও ধরা পরে তাদের চেলা পেলা তাতেও কোন লাভ হয় না পাচারকারিদের বড় মাথা কে খুঁজে বের করার জন্যই এবারের যাত্রা এলাকাটা অনেক নির্জন।

আশেপাশে মানুষ নেই বললেই চলে আর এই বাড়িটা ছিলো এক চিত্রকরের তিনি শুধু মেয়েদের ছবি আঁকতেন, বাড়িটা ছিলো দেখতে অসাধারণ চোখে লাগার মতো! বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই কাজের মেয়ে আয়না টা ভেঙে ফেলে।

রিপা: এ কিরে সাবানা বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই আয়না টা ভাঙলি…

আরিস: আহ্ হা মেজাজ টা একটু control করার চেষ্টা করনা এখানে বাইরের লোক আছে।

রিপা: তুমি জানো না এই আয়না টা বড় মামা নেপাল থেকে এনে দিয়েছেন কত শখের আয়নাটা আমার!

আরিস: শুধু আয়নাটাই তো ভেঙেছে, ফ্রেম ঠিকই আছে আমি আজই শহর থেকে আয়না টা লাগিয়ে নিয়ে আসব।

নিপা: না থাক তোমাকে আর যেতে হবে না।

নিপা: এই সাবানা যা তো দরজা খুলে দিয়ে আয় দেখ কে আসছে

রসিদ: কই ভাবি কই ভিতরে খবর দাও আয়না লাগানোর লোক নিয়া আইছি এই খারাও তোমার নাম কি?

সাবানা: সাবানা বেগম!

রসিদ: বাহ কি সুন্দর নাম!

রিপা: এই কে আসছে কার সাথে কথা বলছিস।

সাবানা: আফা রসিদ এসছে।

রসিদ আয়না লাগিয়ে চলে গেলো। কিন্তু গভীর রাতে আবার বিকট শব্দ করে আয়না ভাঙল তার জন্য রসিদকে আবার কথা শুনতে হলো পরের দিন আবার আয়না লাগিয়ে নিয়ে আসে কিন্তু হায় এ কি হল!

রিপা: রসিদ… এই রসিদ…

সাবানা: আফা রসিদ লবণ আনতে গেছে। হায় হায় আফা এটা কেমন আয়না? আমার মুখ এমন দেখায় কেন?

রসিদ: আফা ডাকছেন আমাকে?

রিপা: এটা কি আয়না লাগিয়েছো? আমি কি জ্যোতিষী? অত বড় আয়না দিয়ে কি আমি হাতের রেখা দেখবো!

রসিদ: আফা ভাইজান যে আয়না বলেছিল দোকানদার সেই আয়নাই সেট করেছে। আমি বুঝতে পারছি না আপনার বাড়িতে আয়না নিয়ে এত কাহিনী হচ্ছে কেন? আজ পাগলের কাছে জিজ্ঞাসা করতে হবে।

রিপা: কি ভাবছো? যাও… আবার আয়না লাগিয়ে নিয়ে এসো।

রসিদ: আফা আপনার কাছে কিছু খটকা লাগছে না? আমার তো মনে হয় এগুলা ভূতের কাজ।

রিপা: আরে যাও তো আয়না লাগিয়ে নিয়ে আসো

আয়না লাগানোর পরে সেই রাতেই ঘটলো অদ্ভুত কাহিনী

সাবানা: আফা ও আফা গো ভূত ভূত দেখলাম আমি

রিপা: এই সাবানা কি হয়েছে কি তোর? ধুর! কি না কি দেখিছিস!

সাবানা: না আফা আমি দেখেছি বাথরুমে আয়নার ভিতরে কাপর ছাড়া এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে

রিপা: চল আমার সাথে… দেখি কি দেখেছিস

রিপা যাওয়ার পর সেখানে তেমন কিছুই দেখতে পেলো না রিপা ভাবতে লাগল, নগ্ন অবস্থায় একটি মহিলা আয়নায় কেন দেখবে ভাবতে ভাবতে হঠাৎ চোখ পড়লো নেপালির সেই আয়নার দিকে।

রিপা: কে… কে ওই খানে কে তুমি সামনে আসো… আসো বলছি!

আয়নার থেকে শব্দ আসলো যদি বাচতে চাস তাহলে এই আয়না সরিয়ে দে।

রিপা: সাবানা সাবানা… জলদি আয়!

সাবানা আসেতে আসতে রিপা অজ্ঞান হয়ে যায়।

সকালে উঠে দেখে বাড়ির সব আয়নাতে কালো রঙের আলপনা…

আরিস সকালে এসে আয়না পরিষ্কার করতে লাগলো। রিপা, সাবানা সবাই বাঁধা দিল কিন্তু আরিস কারও কথা শুনছে না আরিস বললো ভূত না দেখে আমি এই বাড়ি ছাড়ছি না!

সকালে স্টোররুমে আরিস আর রিপা খুঁজে পেল এক কফিন। কফিনের ভিতরে একটা আয়না আর পেল এক রূপবতী কিশোরী উলঙ্গ ছবি। আবার গভীর রাতে আয়না ভাঙার আওয়াজে ঘুম ভাঙে সবার।

রিপা: কে… কে তুমি? কি চাও? তুমি আবার কেন আয়না ভেঙেছো?

আয়না থেকে শব্দ আসলো আগুন জ্বালিয়ে দে ছবিতে সব জালিয়ে দে… হা…. হা হা.. হা..

সকালে রসিদ সেই পাগলটাকে নিয়ে আসল।

আরিস: বল আমাকে আয়নার রহস্য কি?

পাগল: কেন তুইও কি পাগল হয়ে গেছিস ওর রূপে? আহ্ হা… হা হা….

রিপা: কি অফিসে যাবে না? আমারই থাকা ভুল হয়েছে আগে চলে গেলে এত কাহিনী হত না।

আরিস: তুমি গেলে যাও আমি এই আয়না ছেঁড়ে কোথাও যাব না! কি অপূর্ব আহ্…

রিপা: ছিঃ আরিস! ছিঃ! এইগুলো কি বলছো তুমি… ছবিটার সাথে সহবাস করবে? আমার ভাবতেই ঘেন্না করছে আরিস! ছিঃ!

আরিস: এত ছিঃ! ছিঃ! না বলে…যাও এখান থেকে আর খবরদার আমাকে বিরক্ত করবে না!

রাত্রে রিপার সাথে আয়নার ভিতর শিউলির আত্মার কথা…

শিউলি: আমাকে মুক্ত করবে? দয়া করে আমকে মুক্তি দাও… আমি আয়নার ভিতরে থেকে মুক্তি চাই! আমার ছবিটা পুড়িয়ে দাও।

রিপা: আমি? আমি তোমাক মুক্ত করব?

শিউলি: আমি মরার আগে ছবিটা পুরিয়ে দিইনি… ভেবেছিলাম পাগলটা আমার ছবিটা পরিয়ে দেবে কিন্তু দেয়নি তাই ওকে আমি পাগল বানিয়ে দিয়েছি।

চিত্রকরকে ভালোবাসত শিউলি। তাই হাজার কষ্টেও তাকে কিছু বলত না চিত্রকর প্রতি রাত্রে শিউলিকে শেয়ালের মত করে খেত তাই একদিন অতিষ্ঠ হয়ে শিউলি চিত্রকরকে খুন করে… আর নিজে উলঙ্গ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের জীবন দিয়ে দেয়! আর রক্ত লেপে দেয় আয়নাতে, তারপর থেকে শিউলির আত্মা আটকে পরে সেই আয়নায়। রিপা আর সাবানা মিলে জ্বালিয়ে দেয় শিউলির ছবি। মুক্তি পায় শিউলির আত্মা। পাগলটাও মরে যায়। কিন্তু জন্ম নেয় আরেক পাগল… পাগল তার নাম আরিস!

About Post Author

9F10 AB

Click to rate this post!
[Total: 0 Average: 0]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post ফুলঝুরির গপ্পো| বাংলা গোয়েন্দা প্রিমিয়ার লীগ | দেবশ্রী ঘোষ| Bengali Detective Story
Next post মৃত্যুর গন্ধ | ভয়ের দেশ | সুকান্ত ঘোষ| Bengali Horror Story