আলিয়া একজন পতিতা নারী, তবে যৌনপল্লীর আর পাঁচজনের থেকে সে আলাদা। এখনও সে বজায় রেখেছে নিজের সততা, কোন অসৎ উপায় সে অবলম্বন করেনা অর্থ উপার্জন করার জন্য। নিজে মুখে বলতে তার দ্বিধা নেই যে সে একজন পতিতা, আজও সে নিজেকে একজন নারী বলেই মানে। কারন তারও আছে মাসিকের যন্ত্রনা, গর্ভে সন্তান এলে তার স্তনেও আসবে দুধ, এই তো নারীত্ব তাই নয় কি ? আর পাঁচজন পতিতার মতো সে কখনো মুখে খারাপ ভাষা ব্যবহার করেনা, যেমন মাগী,বারভাতারি ইত্যাদি। এই কাজেও সে খুঁজে নিয়েছে তার নিজের ছন্দ, মানসিক আনন্দ। সেও একটা মানুষ, যে কিনা পুরুষের উত্তেজনা প্রশমনের যন্ত্র হিসাবে কাজ করে। আমাদের প্রত্যেক পরিবারের একজন গৃহবধূ থাকেন; তিনি একদিকে মা অন্যদিকে স্ত্রী, সবদিক তিনি সুনিপুণ ভাবেই সামলে থাকেন। তার কাজ শুধু পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকে, কিন্তু এদের তা নয়, সমগ্ৰ সমাজ যেন এদের পরিবার। গৃহবধূরা সারাদিন শত দায়িত্ব পালন করেও রাতে মিলিত মিলিত হন স্বামীর সঙ্গে এক নির্মল আনন্দে। বিজ্ঞানের ভাষায় বললে যৌন উত্তেজনা, যা দুজনেরই হয়, সেগুলো প্রশমনের তথা তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা সবাই করে। আর আবেগী ভাষায় বললে ইহা ভালোবাসা, একে অপরের শরীরের উষ্ণতা বিনিময় নগ্ন শরীরে। এই যৌনমিলন অদ্ভুদ এক জিনিস, যে সময় কারো মাথায় থাকেনা অর্থ যশের কথা, এমনকি পোশাক পর্যন্ত নয়। সন্তান যেন সেই ভালোবাসার ফসল। পুরুষের এই উত্তেজনা জন্ম দিয়েছে পতিতা নামক এই শ্রেণীর। আলিয়া তাই গর্বিত নিজের পেশার জন্য, কারন সে মনে করে ডাক্তার পুলিশের মত সেও একটি বড় দ্বায়িত্ব সামলায়; আর তা হল পুরুষের চাহিদা মেটানো, আর নারীদের জীবন রক্ষা। নারীদের জীবন রক্ষা ? সেটা কীভাবে ? ওই পতিতাদের অনেকে তা জানতে চায়। আলিয়া উত্তরে জানায় আজ পতিতারা আছেন বলেই শত পরুষ এখানে চাহিদা মিটিয়ে তৃপ্তি লাভ করে, নইলে হয়ত তার প্রভাব পড়ত কোন কিশোরী বা সুস্থ জীবনে অভ্যস্ত মেয়ের উপর, হয়ে যেতে পারত তাদের অনেকের জীবন নষ্ট। আমাদের সমাজে লজ্জা ধর্ষিতার হয়, ধর্ষকের নয়। ঠিক উল্টোটা হওয়া দরকার ছিল। যেমনি রূপ তেমনি চাল চলন তেমন সাজগোজের দরকার পড়তনা আলিয়ার,সবাই এমনিই আকর্ষিত হত তার উপর। দেখতে সুন্দর আকর্ষনীয় হলেও অন্য পতিতারা তাকে হিংসা করতনা কখনও, সবাই তাকে দিদিমনি বলেই ডাকত। ম্যানেজার রফিকুল সবাইকে তুই বলে গাল মন্দ করে কথা বললেও আলিয়াকে ‘ম্যাডাম’ আর ‘আপনি’ বলত। আলিয়ার সমানে বিড়ি সিগারেট খেতেননা কখনও। সব মেয়েদের সাথে তিনি একবার করে সহবাস করলেও আলিয়াকে ওই প্রস্তাব দেবার সাহস তার কোনদিন হয়নি। কেন এইরূপ আচরন ? আলিয়া কেন আলাদা আর বাকি নিশি পরীদের থেকে ?
রূপের জন্য ? ভুল ভুল, শোরুম সবার আলাদা হলেও গোডাউন সবার এক, সে পুরুষ হোক বা নারী। আর ওখানে সবাই গোডাউনের খোঁজেই যায়, শোরুম তো রাস্তার ধারে দাঁড়ালে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় খুঁজলেও দেখা যায়। আলিয়া খুব কম ডিউটি করত ওই যৌনপল্লীতে, তার বেশিরভাগই ছিল কোন হোটেল বা বড়লোকের বাড়িতে। তাকে বড়লোকবাবুরা নিতে আসত দামী গাড়িতে, বাকি সবাই অবাক হয়ে চেয়ে থাকত। যৌনপল্লীতে ওত দামী গাড়ি কেউ কোনদিন দেখেনি। অনেকেই বায়না করত একবার চাপার জন্য, আলিয়া গাড়িতে তুলত একটু এগিয়ে গিয়ে নামিয়ে দিত। তারা হেঁটে হেঁটে চলে আসত, আলিয়া চলে যেত গন্তব্যে। ফেরার সময় যে মোটা টাকা পেত তা থেকে সামান্য কিছু কিনে আনত সবার জন্য। যৌনপল্লীতে আলিয়া যেন একজন ভাড়াটিয়া, মাসের প্রথমেই রফিকুল সাহেবের হাতে তুলে দিত ভাড়া। মাসের কুড়িদিন বা তার বেশি সে বাইরে ডিউটি দিত যেদিন যেদিন থাকত সেদিন সেখানে অনেক খরিদ্দার পেত, তার চাহিদা ছিল বিশাল। তবে তার রেট ছিল সবার থেকে বেশি, অন্যদের হাজার দেড়েক আটশ হলেও আলিয়ার হাফ ডে পাঁচ হাজার, বাড়ি নিয়ে গেলে আরো বেশি। তা থেকে রফিকুল সাহেব নিতেন হাজার আর বাকী চার হাজার পেত আলিয়া। একদিনও তাকে বসে থাকতে হতনা শুধু মাসিকের দিনগুলো ছাড়া। আলিয়ার থাকা মানে রফিকুল সাহেবের দিনে দুই হাজার লাভ। আলিয়ার জন্য কোন দালাল লাগত না, মধু খেতে এমনিই কিলবিল করে আসত মৌমাছির দল, তাই দালালের খরচ বেঁচে যেত। আলিয়া আর পাঁচটা পতিতার মত সিগারেট মা মদে আসক্ত ছিলনা, তার নেশা ছিল বই পড়া। গাড়িতে যেতে যেতে সবসময় বই পড়ত সে।ওই বই পড়ার পর বাকী পতিতারা তার কাছে গল্প শুনতে আসত, বিভিন্ন বিষয় সে সুন্দর ব্যাখ্যা করে বোঝাত তাদের। রফিকুল পাশের ঘর থেকে মদ গিলতে গিলতে শুনত আর মনে মনে ভাবত কত জানে মেয়েটা। আজ অলিয়ার সাথে কেউ নেই, স্বামী ছেলে মা বাবা কেউ না। সে একা, সকল পতিতাই তার বোন আর সকল খরিদ্দার তার স্বামী। উন্মুক্ত হয়ে যখন যে প্রতিবার মিলিত হয় সেই যৌন তৃপ্তিতে সে স্বামীকে ফিরে পায়, ছোঁয়ায় কিন্তু নিঃশ্বাসে বা গন্ধে বা ভালোবাসায় নয়। সে উপলব্ধি করে স্বামীকে পুরুষাঙ্গে আর যোনিতে স্ত্রীকে পাওয়া যায়না, যায় মনের ভালোবাসায়।
স্বামীর ব্যাধি করেছে আলিয়াকে নিঃস্ব, এই পেশায় না এলে অনেকদিন আগেই স্বামীর চিতা জ্বলত। আজ হয়ত সে পেত স্বামীর চিতাভষ্ম। চেয়েছিল নিজের সিঁথির সিঁদুরকে রক্ষা করতে, কিন্তু সব জানার পর তার স্বামী নিজেই সিঁদুর তার নিজের হাতে মুছে দিয়েছে। সেই থেকেই আজও স্বামী বেঁচে থাকতেও সে বিধবা। মনে বিধবা, পোশাকে বা যোনির দ্বারে নয়। ওই খনিতে শত শত শ্রমিক আসে প্রতি রাতে, টাকার বিনিময়ে বীর্য নিক্ষেপ করতে। বীর্য সব পুরুষের সমান, যেমন রক্তের রঙ সবার লাল, তবু কত তফাৎ। শুধু জিনগত নয় বেশ কিছুটা অনুভূতিতেও।
আলো রূপে ছিল সুন্দরী,বাবার কাছে আদুরী, ঠিক যেমন সব বাবার কাছে মেয়েরা ডানা কাটা পরী, আজ সে পুরুষের কাছে মিস আলিয়া
ছোট থেকেই সে সাজতে ভালোবাসত, আজ তাকে ব্যবসার জন্য সাজতে হয়। মানুষকে ভালোবাসত সে চিরদিন, আজ সে আর কাউকে ভালোবাসেনা, তাকেও যেন কেউ ভালোবাসেনা, ভালোবাসে তার শরীরকে। বাবার অমতে আলো বিয়ে করেছিল, সে স্বামীর হাত ধরে মাথা উঁচু করে বেরনোর সময় বাবা কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, “যে সন্তান নিজের সুখের জন্য বাবা মায়ের চোখের জল ফেলায়, সে কখনও সুখী হয়না”, বাবার সেই কথা যেন অভিশাপ হয়েছে তার জীবনে, আজ সে রন্ধ্রে রন্ধ্রে উপলব্ধি করে প্রতিবার মিলনের পর।
টাকার অভাবে সেদিন আটকে গেছিল স্বামীর চিকিৎসা, ছেলের স্কুল পড়াশোনা। আলো মাথার হাত দিয়ে দেখে তার কানের দুলটাও নেই অর্থাৎ সব বিক্রি হয়েগেছে । শেষ সময়ের ঘড়ি দেখত সে এই বুঝি স্বামীর জীবনটা শেষ হল, হয়ত টাকা থাকলে সে বেঁচে যেত। কিন্তু করার নেই কিছু,সব হয়েছে নিঃশেষ আর কিছু যেন নেই অবশেষ,শুধু পরনের কাপড় ছাড়া।
শেষে এক রক্তের দালাল হাসপাতালে তাকে কাঁদতে দেখে তার কান্নার কারন জিজ্ঞাসা করে, আলো তাকে সব খুলে বলে।
সেই দালাল মাথা নিচু করে কুপ্রস্তাব দিয়ে বলে, “আপনাকে শক্ত হতে হবে। পরনের কাপড় ছাড়া যখন কিছু অবশিষ্ট নেই তখন ওটাই খুলে ফেলুন না”
“মানে ?” চোখের জল মুছে প্রশ্ন করে আলো।
সেদিন সে রেগে আগুন হয়েছিল সেই প্রস্তাবে, এখন তার রূপের আগুন সবাই দেখছে। এখন যেন প্ৰতি রাতেই ফাগুন আসে তার জীবনে। যে ফাগুনে ঝড়েনা কৃষ্ণচূড়া, কিছু নেই, খালি লালসা টাকা পয়সা আর ভোগবাদ ছাড়া।
ওই দালাল তাকে সেদিন নিয়ে আসে রফিকুল সাহেবের কাছে, তাকে দেখেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে দু লক্ষ টাকা আগাম দেন, তাতেই চিকিৎসা হয় স্বামীর।
টাকা এসেছে এই তার শরীর খানি সবার কাছে বিলিয়ে,তাতেই স্বামী বেঁচে উঠেছে,ছেলে গিয়েছে স্কুল, গৃহে এসেছে সুখের ফুল। প্ৰথম প্রথম স্বামী কিছু বুঝতে না পারলেও সুস্থ হবার পর তিনি সব জানতে পারেন এবং তিনি আত্মহত্যা করতে যান। আলো তাকে অনেক কষ্টে আটকায় এবং তিনি আলোকে বলেন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে। যদি কোনদিন সে এবাড়িতে আসে সে তার স্বামীর মরামুখ দেখবে। স্বামীকে বাঁচাতে গৃহ একমাত্র পুত্রকে ত্যাগ করে সে, সেদিনকার শ্রীমতি আলো আজ মিস আলিয়া। পতিতার তকমা সে অর্জন করেছে, দিয়েছে সতীত্বের বিসর্জন।
শত পুরুষ তাকে বিছানায় উলঙ্গ দেখে, যোনিতে স্বামী ছাড়াও শত পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করে তার।
এসেছে টাকা,এসেছে সুখ, তবু বাড়ির লোক তাকে মনে রাখেনি, স্বামী ছেলে কেউ তার মুখ দেখেনা। তার জন্য আজ বন্ধ বাড়ির দরজা, যার জন্য সে করেছে চুরি সেই বলে আজ চোর।
ওরা সবাই আজ সুখেই আছে, কারন এই পতিতা নেই তাদের সাথে। সকল পরিবারের সদস্যরা তার স্বামী ছেলেকে নিয়ে আনন্দে আছে অথচ সেদিন কেউ একপয়সা নিয়ে এগিয়ে আসেনি তার স্বামীর জীবন বাঁচাতে। বাধ্য হয়ে আলোকে খুলতে হয়েছে কাপড়। প্রথম দিকে রফিকুল সাহেবের টাকা শোধ করতে তাকে একদিনে অনেক খরিদ্দার সামলাতে হয়েছে একবারেও জন্যও ভাবার সময় পায়নি যে সেও মানুষ। ব্যাথায় টন টন করেছে যোনি, হাত দিয়ে চেপে ধরেছে ব্যাথা উপশমের জন্য। কিন্তু হাত সারতে হয়েছে, লাইনে দাঁড়িয়ে পরের খরিদ্দার; বিরাম নেই। রফিকুল যা দিয়েছে আরো বেশী কামিয়েছে তার থেকে, সে হিসাবে আলো যায়নি কোনদিন। স্বামীর জীবনের জন্য সে সব করতে পারে। হাজার হোক তিনি তো সেই সময় চোখ বন্ধ করে তাকে টাকাটা দিয়েছেন, তাই সে তার কাছে কৃতজ্ঞ, এগুলো যেন সুদে আসলে শোধ করতে হচ্ছে তাকে। এক এক পুরুষের সাথে সহবাস যেন লোনের এক একটা কিস্তি। একজন পতিতা তাকে সেক নেবার জন্য হট ব্যাগ দেয়, মাসিক হলে পেট ব্যাথা থেকে উপসম পেতে পেটে সেক নিত সে। সেদিন রাতে যে যৌনাঙ্গতে গরম গরম সেক নেয় আর উপলব্ধি করে নারীর সম্মান যেন যোনিতে আঁকা, একের পুরুষাঙ্গ বেশি ঢোকা যাবেনা সেখানে। এই যোনিতে ঢুকছে কত পুরুষের ওই অঙ্গখানা আর সেই পরুষই বলে তাকে চরিত্রহীনা।
আজও তাকে করে যেতে হয় এই কাজ,নাহলে যে পেটের ভাত জুটবেনা । যাদের জন্য শুরু করেছিল স্বামী ছেলে কেউ নেই সাথে।
কেউ কারো জীবন বাঁচলে মানুষ তাকে ভগবান মানে, রফিকুল অলিয়ার চোখে কিছুটা তাই। কিন্তু পতিতাও এক নারী তবু নেই তার কোন সম্মান সমাজে; আর তার থেকেও বড় যার জন্য সে পতিতা হল সেই স্বামীর তথা সমগ্ৰ পুরুষ জাতির জন্য। আর তারাই তাকে ভৎসনা করে পতিতা বলে দূরে ঠেলে দেয়।
কত দুঃখ সে ভাবে বলবে কিন্তু কেউ নেই সেগুলো শোনার। রাতে কোন কোন দিন মদের আসর জমলে আলিয়া সেখানে যায়। তবে মদ খেতে নয় বেসামাল তাদের কে তুলে ঘরে দিয়ে আসতে আর দুঃখের কথা বলে হালকা হতে। সবাই হা করে শোনে কেউ কেউ রেগে আরো মদ গেলে আর নেশার ঘোরে শুধু হ্যাঁ দিয়ে যায়। আলিয়া চোখের জল ফেলে আর ভাবে সকালে আবার কোন দামী গাড়ি আসবে তাকে নিতে। আর কোন কাজ নেই আর তার শুধু মৃত্যু দিন গোনাছাড়া।
একদিন সে এক বাবুর সাথে রাত কটাল, পরদিন সকালে উঠে সে তার বাড়িতেই চা পান করছে। তখনও ড্রাইভার আসেনি, এলেই তাকে গাড়ি করে দিয়ে আসবে যৌনপল্লীতে। পড়ার নেশা ছিল তার, তাই সংবাদপত্র দেখতে লাগল। সম্পাদকীয় কলমে একজন লিখেছে নর্তকীদের নিয়ে, যে যতদিন যৌবন ততদিন কদর তারপর দুঃখের জীবন তাদের। বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে খেতে হয়,তাদের মারা যাবার পর সৎকার পর্যন্ত হয়না মাটিতে পুঁতে দেয়া হয় তাদের। লেখাটা তার মনে দাগ কাটল আর ভাবল সেও একদিন বৃদ্ধ হবে তখন কি আর এইভাবে টাকা আসবে ? ভাবতে ভাবতে ড্রাইভার এসে যায়, বাবু মোটা টাকা আগেই দিয়ে দিয়েছেন তাকে। যাবার সময় আলিয়া বলে সে এই খবরের কাজগটা নিয়ে যেতে চায় সে। বাবু দিয়ে দেন, কারন সেটি ছিল গতকালের। পতিতা খবরের কাগজ চাইছে দেখে তিনি অবাক হন কিন্তু কে আর ভাবছে ওদের নিয়ে।
আলিয়া গাড়িতে বসে বসে ভাবে এরপর কী হবে হঠাৎ পেটে ব্যথা অনুভব করে বুঝতে পারে মাসিক শুরু। কদিন তার ধান্দা বন্ধ থাকবে। গাড়ি এসে থামল যৌনপল্লীতে গাড়ি থেকে নামল আলিয়া। আমিনা দাঁড়িয়ে, বয়স বছর ষোল হবে, সে কিনষ্ঠতম পতিতা যৌনপল্লীতে। আলিয়া তাকে বোনের মতই ভালোবাসে, রোজ কিছু না কিছু নিয়ে আসে তার জন্য। এইদিনও সে দাঁড়িয়ে থাকে কিন্তু আলিয়া তাকে আদর করে ঘরে ঢুকে পড়ে। আমিনা বুঝতে পারেনা এর কারণ কী ? রফিকুল সাহেবকে সে জানায় কদিন ধান্দা বন্ধ থাকবে, বাকী পতিতারাও বুঝতে পারে তার মাসিক শুরু হয়েছে। আমিনা দুঃখ পেলে বাকি পতিতারা তাকে বোঝায় যে অলিয়ার মন ভালো নেই, তাই হয়ত কিছু অনেনাই। মাসিকের সময় মানসিক চাপ থাকে আমিনা সেটা জানে বোঝে সেও এক নারী তাই সে চুপ করে থাকে।
আলিয়া সেই থেকে মনমরা, পেপার দেখে আর ভাঁজ করে রাখে। একজন তাকে পরামর্শ দেয় এইসময় ঘুরে আসতে বাইরে কোথাও, সাধারণত এসময় সে গল্প আর উপন্যাসে অতিবাহিত করে কিন্তু সব বই পড়ে শেষ করে ফেলেছে সে। তার কথা মত সে বেরিয়ে পড়ে শহরটাকে দেখতে অলিতে গলিতে। ঘুরে দেখতে দেখতে চোখ পড়ে একটি বাড়ির জানালার দিকে, বেলা হয়ে গেছে তবু মেয়েটা ঘুমাচ্ছে। মেয়েটার আসে পাশে শুধু বই আর বই। মেয়েটিরর বাবা তার মা কে বলছে, “ও ঘুম থেকে ওঠেনি এখনও ?”
“ওকে ডেকোনা। কাল সারারাত জেগে পড়েছে মেয়েটা। সকালে বই কেড়ে নিয়েছি তবে ঘুমাল”
বাবা বললেন, “ডাব্লু বি সি এস পাবার জন্য না পাগল হয়ে যায় মেয়েটা। কি খেলায় যে নেমেছে”,
“ ওর স্যার সন্তোষবাবু তো বলছে পাবে। পড়ুক তো”
“ও মিথ্যা বলবেনা, আমাদের পাড়ার ছেলে। একবার হতে পারলে আর দেখতে হবেনা”,
আলিয়া চোখ ফিরিয়ে নেয়, তার চোখে বিন্দু বিন্দু জল আসে আর মনে মনে ভাবে মেয়ে হয়ে যদি সেদিন সাবলম্বী হতে পারত। তারপর বিয়ে করলে তাকে এই পথে নামতে হতনা, তার নিজের রোজগারের টাকায় দিব্য স্বামীর চিকিৎসা হত।
আজ সে চাহিছে নিশি পরী থেকে নিশি পড়ুয়া হয়ে সফল হতে, আগের জীবনে ফিরে আসতে কিন্তু কে তাকে সুযোগ দেবে ? কেউ না ? ভাবতে ভাবতে সে সে এগিয়ে যায় ধূলা ধোঁয়ায় মোড়া রাস্তার শেষ প্রান্তে। হয়ত একদিন সেও হারিয়ে যাবে এই পৃথিবী থেকে।
ভাবতে ভাবতে পথ চলতে থাকে আলিয়া হঠাৎ সামনে থাকা ইলেকট্রনিক পোলে দেখতে পায় সন্তোষ মিত্রের পোস্টার, ডাব্লু বি সি এস পাবার জন্য কোচিং সেন্টার। শুধু দেখে আর ভাবে, অবশেষে ব্যাগ থেকে বের করে ফোন, পোস্টারে দেয়া নম্বরে ফোন করে সে।
ফোনে কথা বলে সে পৌঁছায় সন্তোষ মিত্রের বাড়িতে, খরচ, সময়, সব কথা হয় তাদের। সন্তোষ মিত্র খুব বুদ্ধিমান লোক, বিয়ে করেননি, প্রতি রাতে মদ খান আর তারপর ঘুমাতে যান। সন্তোষ মিত্র কতগুলো বই তাকে বলে দেন, আলিয়া সেগুলো লিখে রাখে, অলিয়ার জমানো টাকা কম নয় তাতে সব হয়ে যাবে। যৌনপল্লীতে ফিরে আসে সে তার সব গল্পের বই একসাথে করে পরদিন সকালে সেগুলো অল্প মূল্যে বিক্রি করে দিয়ে আসে, আর কিনে এনে স্যারের বলে দেয়া বইগুলো। টাকার অভাবে সেগুলো বিক্রি করেনি সে, এই ভেবে বিক্রি করেছে যে যদি কোন গরীব মানুষ নতুন কিনতে অসামর্থ্য হয় তাহলে অল্প দামে পুরানো কিনে পড়তে পারবে। নতুন বই কিনে এনে রাত জেগে সে পড়তে থাকে মাসিকের যন্ত্রনা নিয়ে, সে জানত যে ডব্লিউবিসিএস পাবার ক্ষেত্রে সে আর পাঁচজনের থেকে পিছিয়ে। আলিয়া বই পড়তে ভালোবাসে একথা সবার জানা তাই কেউ নজর দেয়না ওত, যে ওগুলো গল্পের বই নাকি পরীক্ষার। টিউশনি ব্যাচে তার নাম সুধালে সে বলে, “আলো”। এতদিন সে উগ্র সাজে ছোট পোশাকে বাবু সামলাত আজ সে হালকা রঙের চুড়িদার পড়ে ব্যাচে পড়তে যাচ্ছে । পড়া শেষে সে বাবুদের ঘর যেত রোজগার তথা পেটের ভাতের জন্য। একদিন প্রবল বৃষ্টি পড়ার শেষে সন্তোষ বাবুর বাড়িতে আটকে রইল সবাই। কিছুক্ষণ পর ছাতা নিয়ে কেউ কেউ চার চাকায় বাড়ি চলে গেল। আলিয়া যেতে পারেনা। সন্তোষ বাবু মদ না খেয়ে থাকতে পারছেন না অথচ অলিয়ার সামনে খেতেও পারছেন না। অবশেষে থাকতে না পেরে বলল, “তুমি বস বৃষ্টি না থামলে যেওনা। আমি যদি একটু মদ্যপান করি অসুবিধা আছে ?
আলিয়া হাসি মুখে মাথা নেড়ে বলে, “না, না।”
পুরুষ মদ খাবে আর তারপর হিংস্র হবে এ যেন জলভাত অলিয়ার কাছে।
মদ খেয়ে তিনি বলেন , “বাড়ির পরিচারিকা কাজ ছেড়ে দিয়েছে। কি অসুবিধা জানো”
“আর কেউ নেই স্যার আপনার ?”
“না। কেউ নেই সঙ্গী শুধু এই বোতল”
“তোমার ?”
আলিয়া কাঁদতে থাকে স্যার বলেন, “কাঁদছ কেন ?”
আলিয়া তাকে সব কথা খুলে বলে সব শুনে স্যারের চোখে জল আসে।
আলিয়া বলে, “স্যার আমাকে আপনার বাড়ির কাজের লোক রাখবেন ? বেতন লাগবেনা। শুধু খেতে দেবেন আর তৈরি করবেন আমাকে”
স্যার বললেন, “হাতে সময় মাত্র আট মাস। পারবে তো ?”
“হ্যাঁ স্যার পারব।”
“বেশ তাহলে তুমি আজ রাতে আমার হও”, বলে তার উপর পড়লেন। তাদের মিলন হল , স্বামী ছাড়া এই প্রথম বিনা পয়সায় বিনা প্রটেকশানে সে কারো সাথে যৌন মিলন করল।
রাত কেটে সকাল হল আলিয়া ট্যাক্সি নিয়ে যৌন পল্লীতে গেল জিনিসপত্র আনতে সব নিয়ে আসতে। সবাই বলল, “কিরে চলে যাচ্ছিস ?”
আলিয়া বলল, “কিছুদিন বাইরে থাকব। আর ভালো লাগছেনা এই শহরে। রফিকুল সাহেব আপনাকে ঘর ভাড়া পাঠিয়ে দেব সময়মতো”
তিনি মাথা নেড়ে সম্মতি দেন, তাকে আটক করে রাখার অধিকার তার নেই, কারন সে বিক্রি হয়ে আসেনি সেখানে। ট্যাক্সীতে যেতে যেতে আলিয়া মনে মনে ভাবল আর যেন এখানে ফিরে আসতে না হয়, আট মাস পর যেন সে সফল হয়, জায়গাটার জন্য মন কাঁদলেও সে জানত এখানে থাকলে লেখা পড়া হবেনা।
সময়মতো গর্ভনিরোধক বাড়িটি সে খেয়ে নেয় যেহেতু আবাধ যৌন মিলন করেছে সে।
প্রায় রাতেই সন্তোষবাবু শারীরিক চাহিদা মেটাত তাকে নিয়ে, তবে আলিয়া প্রস্তুত থাকত প্রোটকেশন নিয়ে। দিন রাত এক করে সে পড়তে থাকে, বিরাট অধ্যবসা দেখে সন্তোষবাবু মুগ্ধ হন। তিনি মদ্যপান আর সহবাস করা ছেড়ে দিলেন, শুধু লেগে থাকলেন তার পড়াশোনার পিছনে। তিনি কদিন পর এক নতুন পরিচারিকা রাখলেন। আলিয়া দেখে অবাক, স্যার বললেন, “তুমি শুধু পড়ে যাও। সব কাজ ও করবে”।
আলিয়ার চোখে জল এসে গেল তার চেষ্টা শতগুন বেড়ে গেল, স্যারও কেমন যেন বদলে যাচ্ছে দিন দিন। উৎশৃঙ্খল জীবন থেকে যেন সভ্য মানুষ হয়ে উঠেলন। আস্তে আস্তে ব্যাচের পরীক্ষায় নম্বর বাড়তে লাগল তার সবাই ভাবল স্যার বোধ হয় প্রশ্ন বলে দেয় তাকে, “স্যারের সাথে থাকে” ইত্যাদি নানা কথা। অলিয়ার রাগ হয়না পতিতার আবার কলঙ্ক , কয়লার উপর আবার কালীর দাগ। স্যারকে সব খুলে বললে তিনি জানান, “চুপ করে থাকো। সময় আসুক। পরীক্ষার রেজাল্টে প্রমান দেবে। তখন তো আর বলতে পারবেনা”।
দিন যায়, রাত যায়, পরীক্ষা আসন্ন, ফর্ম ফিল আপ হয়। আলো নামটা অনেকদিন পর ব্যবহার করল সে। পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন খুব টেনশেনে আলিয়া এবং সন্তোষ বাবু। অবশেষে ফল প্রকাশ হল আলো ব্যাচের সেরা হয়েছে এবং এক থেকে দশের মধ্যে স্থান পেয়েছে। আনন্দের সীমা নেই, সন্তোষবাবুর চোখে জল, সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেছে ছবি তুলছে। আলো নিজ মুখেই স্বীকার করে সে একজন পতিতা এবং নিজের আর সন্তোষবাবুর চেষ্টার জোরে উঠেছে এই জায়গায়। পরেরদিন চায়ের দোকানে খবরের কাগজের প্রথম পাতায় আলোর ছবি দেখে অবাক রফিকুল সাহেব। তিনি ছুটে গিয়ে সকল পতিতাকে দেখান সেই খবর, সবাই অবাক। কিছুক্ষন পর আলো এল সেখানে সবাইকে মিষ্টি খাওয়াল। রফিকুল সাহেবকে ঘর ভাড়া দিয়ে বললেন, “এই ঘরটা আমার চাই। মাঝে মাঝে আসব”
তিনি মাথা নিচু করে টাকা নিয়ে বললেন, “তাই হবে”, সবাই তাকে নিয়ে মেতে উঠল। সন্তোষবাবু বললেন, “সত্যি আলো তোমার চেতনাকে আমি স্যালুট জানাই, এই পরিবেশ থেকে উফফ! ভাবা যায়না”।
আলো তখন সেই খবরের কাগজখানি বের করে দেখাল আর বলল, “এই আশঙ্কা থেকেই আমি এই জায়গায় এসেছি”।
আলো জেলাশাসক হিসাবে যোগদান করে,লাল বাতি গাড়িতে যায় আসে আর সন্তোষবাবুর বাড়িতেই থাকে। কিছুদিন পর সন্তোষবাবু তাকে বিয়ে করতে চান, আলো জানায় সে জীবনে একবার বিয়ে করেছে আর নয়। তার কাছে মেয়েদের জীবন একটা বিয়েও একটা। সন্তোষবাবু আবার মদ পান শুরু করলে আলো জোর করে ভালো মেয়ে দেখে সন্তোষবাবুর বিয়ে দিয়ে দেয় আর সেই স্থান ছেড়ে থাকে ম্যাজিস্ট্রেট বাংলোতে।
পরদিন যৌনপল্লীতে দেখা সেই রক্তের দালালের সাথে, তিনি অসুস্থ। ভালো করে খেতে পাননা রোগজার ভালো নেই তার। আলো তাকে নিজের পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট করে নেন। তিনি রফিকুল সাহেবকে বলে আমিনাকে কিনে নেন তার থেকে আর তার পড়াশোনার সমস্ত দায়িত্ব নেন। আমিনা তার কাছে থেকে বোনের মত, পরবর্তীকালে সেও মানুষ হয়ে চাকরি পায়। পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্টকে বলেন তিনি যেন যৌনপল্লীর দালালী করে যান আর আমিনার মত অনুর্ধ আঠারো মেয়েদের ওখানে বিক্রি না করে সোজা তার কাছে নিয়ে আসেন। আলোর আজ এত রোজগার কিন্তু নিজের কেউ নেই, তাই ওদেরকেই মানুষ করে জীবনটা কাটাতে চায় সে। বাকি জীবনে সে আমিনার মোট দেড়শ মেয়েকে তুলে এনে মানুষ করেছে। আজ সে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত। সেই নিশি পরী আজ প্রতিটি পরীক্ষার্থীর রাত জাগার অনুপ্রেরণা। টিভিতে খবর দেখে অবাক তার আগের স্বামী ও ছেলে। স্বামীর চোখ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ে তবুও আলোর কাছে যেতে পারনেনা তিনি, কারন দিনের শেষে একটাই কথা, সে পতিতা। আলো মাঝে মাঝে উগ্র পোশাক পরে গোপনে সেই যৌনপল্লীতে যায়,সেই ঘরে কিছুক্ষণ করে সময় কাটায়। মাঝে মাঝে নগ্ন হয়ে সেই খাটে শুয়ে থাকে আর যোনিতে হাত বুলায় আর ভাবে আজ আর অত্যাচার হয়না এটার উপর। যেন ক্ষনিকের জন্য নিজের কাছে নিজেই পতিতা হয় সে। পতিতা না হলে সে জগৎটাকে এত ভালো করে চীনতনা, উপলব্ধি করতে পারতনা মেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড়ানো কতটা জরুরী। বয়স বাড়ছে একসময় তার মাসিক বন্ধ হয় কিন্তু রোজগার নয়। কারন আজ সে নিজের পায়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ভয় হয় আজ যদি এটা না পেত তাকে বোধ হয় ভিক্ষা করতে হত, রূপ যৌবন আর তেমন কিছুই নেই। সমবয়সী বা বড় পতিতাদের যারা এখন কোন কাজের নয়। যারা তাকে খুব ভালোবাসত তাদেরকেও সে তুলে এনেছে সেখান থেকে এখন বাগান পরিষ্কার রান্না টুকটাক কাজ করায়। পতিতাই বোঝে পতিতার যন্ত্রনাটা কেমন। কেউ কেউ বলে সেও যদি সেদিন বিয়ে না করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারপর বিয়ে করত তাহলে হয়ত জীবনটা এত কষ্টের হতনা, ওটাই প্রথম ভুল। আলো মৃদু হেসে চলে যায় এসব শুনে। কারন সে জানে সে যা করেছে তার ভালোবাসার জন্য, যেটা কোন ভুল নয়। এই পতিতার যন্ত্রনা ভোগ না করলে সে হয়ত এই লড়াইয়ের শক্তি পেতনা জয়লাভও হতনা তার। স্বামীর জীবনের জন্যই তো সে পতিতা হয়েছে, নিজের স্বভাবে নয়।
একদিন একটা ছেলে কাছা পড়ে এসেছে দপ্তরে, একটা কাগজ নিতে যেটা পিতার ডেথ সার্টিফিকেট দেখিয়ে নিতে হবে। আলো তাকিয়ে দেখে তার ছেলের মত মুখ আর সার্টিফিকেটে দেখে তার স্বামীর নাম। ছেলেকে চিনতে পারে কিন্তু কিছু বলেনা। স্বামী মারা গেছেন কিন্তু বিধবা সে অনেকদিন আগেই হয়েছে, যেদিন নিজের হাতে সিঁদুর মুছে দিয়েছেন তার স্বামী।
কাউকে কিছু না বলে চোখের জলে গাড়িতে ওঠে, এসির ঠান্ডা বাতাসে তার চোখের জল শুকিয়ে যায়।
আলো ঘরে যায় সবাই কান্নার কারন জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, “স্বামীর উষ্ণতাটা চলে গেল পুরোপুরি”
“সে তো অনেক আগেই গেছে”,
“স্বামী কাছে না থাকলেও সে ভালো আছে বেঁচে আছে জানলেও প্রকৃত স্ত্রী দূর থেকে তার স্পর্শ উষ্ণতাকে অনুভব করতে পারে। আজ যেন সব শেষ হয়ে গেল। আজ অফিস না গেলেই ভাল হত”।
আলো কাঁদতে থাকে একা একা। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদার অধিকার তার নেই আর পাঁচটা মায়ের মত, কারন এখনও তার শরীরে লেগে আছে পতিতার তকমা। স্বামী চলে গেলে সন্তান হয় ভরসা, কিন্তু আলো অনেকদিন থেকেই নিজেই নিজের ভরসা। কেউ মোছাতে আসবেনা তার চোখের জল। চিতার আগুনে হয়ত সব পতিতার কলঙ্ক পুড়ে শেষ হবে তারপর স্বর্গে গিয়ে তার সাথে তার স্বামীর আবার মিলন হবে।