গ্লাসের স্কচ ফুরিয়ে আসে। দিগন্তে রাতের আইফেল টাওয়ার দেখে একজোড়া ঢুলুঢুলু চোখ। প্যারিসে তার সঙ্গী বলতে এই স্কচই। একটু ভুল হল, আর আছে রং, তুলি, ক্যানভাস। ল্যুভরে পুরনোপুরনো ছবি রিকন্সট্রাকশন টিমের অন্যতম সদস্য নিখিলেশ এখন আর শখে ছবি আঁকে না, বেশির ভাগ সময়টাই কাটে তার গ্যালারিতে। কাল ছুটি, নয়তো এতটা মদ সে সচরাচর খায় না। অপলক দৃষ্টি আটকে থাকে আলোকমণ্ডিত আইফেলে, তিরতির কাঁপতে থাকে চোখের পাতা। এ জীবন তো চায়নি সে! এত ঐশ্বর্য, এত সম্মান তো কলকাতা তাকে দিতে পারেনি, তবুও কেন এতটা টান ওই শহরটার জন্য।
একাত্তরের যুদ্ধের সময় কলকাতায় আসে নিখিলেশদের পরিবার। পরিবার বলতে বাবা আর সে। মা মারা গেছেন, নিখিলেশের বয়স তখন পাঁচ কি ছয়। আঁকাআঁকির প্রতি ছিল ছোটবেলা থেকেই টান। কাঁটাতার পেরিয়ে তার সাথে সাথে এপারে এসেছিল তুলি আর রঙও। তবে মধ্যবিত্ত পরিবারে সেটাকে পেশা হিসেবে নিতে কম বেগ পেতে হয়নি তাকে। মনে মনে বিষণ্ণতার হাসি হেসে ওঠে নিখিলেশ। রীতিমত কাঠখড় পুড়িয়ে ভর্তি হল আর্ট কলেজে। কত ঝগড়া মনোমালিন্যের পর রাজি হয়েছিল বাবা। ছোট ছোট টুকরো টুকরো দৃশ্যপট যেন সিনেমার মত ভেসে ওঠে তার চোখে। কলকাতার আর্ট কলেজে পড়ার শখ জেগেছিল ম্যাট্রিক পরীক্ষার পর থেকেই। যদিও ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকির ওপর বিশাল ঝোঁক ছিল। কিন্তু স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে, ওপারে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস নিয়ে ভর্তি হতে হল। নিখিলেশ তখন সেকেন্ড ইয়ারে, পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করল। পৈতৃক ভিটেমাটি ছেড়ে বাবা ছেলে এগোল অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে, সাথে জমানো বেশ কিছু টাকা।
না, এদেশে তাকে অর্থ কষ্টে পড়তে না হলেও, আর্ট কলেজে পড়া সত্যিই ছিল বিলাসিতা তার কাছে। তবুও নিয়তির সাথে জুয়াটা খেলতেই হত নিখিলেশকে। তাদের শেষ সঞ্চয়ের অনেকেরই যায় তার আর্ট কলেজের খরচের পিছনে। কিন্তু, বাবা দেখতে পেল না আজকে তার সাফল্যটা। একটা চাপা কষ্টে চোখ বুঁজে আসে নিখিলেশের।
কলকাতা এসে ওরা উঠল ওর বাবার পরিচিত এক লোকের ভাড়াটিয়া হয়ে। সে জন্য ভাড়াও কিছুটা কম পড়েছিল। ওদের বাড়িটার মালিকের মেয়ের নাম ছিল পৃথা। নিখিলেশের সমবয়সীই প্রায়, মাস ছয়েকের ছোট হবে হয়তো। ভারী মিষ্টি মেয়ে। প্রথম দিকে ওর সাথে খুব বেশি ভাব ছিল না, বলা ভালো ওকে ততটা ভালো ভাবে খেয়ালও করেনি নিখিলেশ।
কলেজের শুরুর দিকের ঘটনা, তখনও তিলোত্তমার হাওয়ায় এতটা আড্ডাবাজ হয়নি সে, কলেজ শেষে লক্ষ্মী ছেলের মত বাড়ি ঢুকে যেত। এমনই একদিন বাড়ি ফিরে, ক্যানভাসে তুলি বোলাচ্ছিল আনমনা হয়ে, নিখিলেশ জানে এইভাবে তার পেট চলবে না, সামান্য কটা জমানো টাকা। সব ঘোলাটে হয়ে আসে ওর। এমন সময় তার সম্বিৎ ফেরে পৃথার কথায়, “এই যে একটু আসা যাবে?”
“হ্যাঁ হ্যাঁ আসুন না” হতচকিত হয়ে বলে নিখিলেশ।
ঘরে ঢোকে পৃথা। হাতে একটা পার্সেল।
“বসুন, বসুন” চেয়ার এগিয়ে দেয় নিখিলেশ।
“নাহ বসতে আসিনি, এটা দিতে এলাম” বলল পৃথা “পিয়ন এসে দিয়ে গেল, আমি নিচে ছিলাম তাই নিয়ে নিলাম, এই নিন।”
পৃথার হাত থেকে প্যাকেটটা নেয় নিখিলেশ।
ক্যানভাসের দিকে তাকিয়ে পৃথা জিজ্ঞেস করে “কি আঁকছেন এটা?”
“সেরকম কিছু না, ওই একটু নাড়াচাড়া করছি আর কি” একটু লজ্জিত হয়ে বলল সে।
“কিন্তু ওর উল্টো পিঠে যে একটা ছবি আছে! ওটা নষ্ট হয়ে যাবে তো!”
“হোক না; কি আর করব ওটা, এমনিই আঁকা।”
উল্টোদিকে এসে ক্যানভাসের অন্যপাশের ছবিটা দেখতে দেখতে পৃথা বলল, “বাব্বা! আপনি এমনি এমনিই তো দারুণ ছবি আঁকেন মশাই! তা আমার একটা পোর্ট্রেট এঁকে দিতে পারেন? দাম নিয়ে চিন্তা নেই, সে আমি দিয়ে দেব।”
মাথা নাড়ল নিখিলেশ, বলল, “আচ্ছা চেষ্টা করে দেখব, কাল একবার সময় করে আসবেন।”
এসব ভাবতে ভাবতে চোখ ভিজে ওঠে নিখিলেশের, তারপর ঢক করে স্কচে চুমুক দেয়। তার প্রথম পেইড কাজ ছিল সেটা। কাঁচা হাতে ভালোই দাঁড়িয়েছিল ছবিটা। ইচ্ছে ছিল তার টাকাটা নেবে না, কিন্তু সংসারের কথা চিন্তা করে তাকে নিতেই হল।
এরপর বেশ ভালোই চলছিল। রুটিরুজির জন্য মাঝে মাঝে সাইনবোর্ড আর দেয়ালও লিখত, তবু তাতে তার সমস্যা ছিল না। ইতিমধ্যে পৃথার সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আপনিটা তুইতে এসে থেকেছে। পৃথাই একদিন ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় প্রেসিডেন্সির রমাপদর সাথে। রমাপদ ওদের দুটো বাড়ি পরেই কতথাকত, অবশ্য এর আগে ওকে দেখেনি নিখিলেশ। বেশ ভাবুক গোছের ছেলে, নাটক লেখে টুকটাক, অভিনয়ও করে শখে। রমাপদর সূত্র ধরেই ওর ঢোকা কফি হাউসের আড্ডা সার্কেলে। এতদিন পর সে পেল খোলা হওয়ার স্বাদ। শহর কলকাতা যেন অমল, সুজাতা, রমা, ডিসুজা আর বাকিদের মধ্যে দিয়েই কাছে টেনে নিয়েছে তাকে। আড্ডাগুলো বেশ ভালোই চলছিল এভাবে। ঘনিষ্ঠতা বাড়ছিল পৃথার সাথেও। তার কাছে ‘নিখিলেশ’ থেকে হয়ে উঠেছিল ‘নিখিল’। এমন সময় হঠাৎ টিবি ধরা পড়ল নিখিলশের বাবার। যথাসাধ্য চেষ্টা করেও বাঁচানো গেল না। পুরো সংসারে একা হয়ে গেল সে। জীবনের এই অধ্যায়টায় পৃথা এবং বাকি বন্ধুরা না থাকলে কেমন করে উৎরাত সে নিজেও জানে না। কৃতজ্ঞতায় নুয়ে আসে তার সারা শরীর। বাড়তে থাকে রাত।
সেবার শীতকাল, গ্রাজুয়েশনের ফাইনাল পরীক্ষার আগে আগে; গাটা ম্যাজম্যাজ করায় একটু আগেই ফিরে এল নিখিলেশ। ব্যাগ নামিয়ে এগোল ছাদে, এই সময়টা পৃথা ছাদে থাকে। গুনগুন করতে করতে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে থাকল। ছাদে উঠে বেশ অবাকই হল সে।
রমা আর পৃথা গল্প করছে ছাদে। ওকে দেখতেই পৃথা ডাকল “আরে!! নিখিল গেলি না আজকে কফি হাউসে?”
“না রে শরীরটা বিশেষ ভালো নয়,” সংক্ষেপে বলল সে।
তারপর রমার দিকে তাকিয়ে বলল, “ব্যাপার কি? পৃথার বাবা তোকে ঢুকতে দিল!”
“আরে বাবা আসলে একটু মায়ের সাথে মামাবাড়ি গেছে, সন্ধ্যের আগে ফিরবে যদিও” পৃথা বলল “তাই ও বলল চল ছাদে একটু আড্ডা মারি, তোর বাবা যা স্ট্রিক্ট এমনি তো আর উঠতে দেবে না।”
“সত্যিই পৃথার বাবা বড্ড স্ট্রিক্ট” মনে মনে ভাবে নিখিলেশ “পোর্ট্রেট আঁকার সময় একটু পর পর এসে দেখে যেত অফিস থেকে ফেরার পর।”
“তোর কি জ্বর এসেছে?” কপালে হাত ছোঁয়াল পৃথা “সেরকম বুঝলে একটা প্যারাসিটামল খেয়ে নিস পরে।”
“আরে ঠিক হয়ে যাবে রে এমনই।” হালকা হেসে বলে উঠল নিখিল “গল্প কর তোরা…”
-”আরে না না, চল বাবা আসার আগে তোকে কফি করে দি এক কাপ।”
“আজ তবে চলি রে পৃথা, পরে একদিন আসব খনে; আসিরে নিখিলেশ।” কারও উত্তরের প্রত্যাশা না করে দ্রুত বেরিয়ে গেল রমাপদ। নিখিলেশ আর পৃথা একে অপরের দিকে চেয়ে রইল।
আলো পড়ে আসছে, পৃথা নীচে গেছে কফি করতে; আকাশের দিকে চুপচাপ তাকিয়ে রইল নিখিল। একটু পরে পৃথার ডাকে তার সম্বিৎ ফিরল, নিচে গিয়ে কফির কাপটা নিয়ে চুপচাপ হাতে নিয়ে নিল ও। পৃথা পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। ঢলে পড়া সূর্য, আকাশে একটা অন্যরকম রং ছড়িয়ে দিয়েছে। কাপে চুমুক দিয়ে নির্বিকার ভাবে নিখিল বলে ওঠে;
“ভালবাসিস রমাকে?”
“আরে পাগল হলি নাকি?” হেসে ওঠে পৃথা “ওসব কিছুই না এমনিই বলল গল্প করবে ছাদে গিয়ে, তুইও না, পারিস, সত্যি।”
“সে ঠিক আছে, বাসলেও সেটা অবশ্য তোদের ব্যক্তিগত ব্যাপার” মুখ টিপে হাসে নিখিলেশ।”কফিটা কিন্তু চমৎকার বানিয়েছিস।”
“সে আমি বরাবরই ভালোই বানাই।” একটু চিন্তিত হয়ে পৃথা বলল “আমাদের বিষয়টা নিয়ে ভাবলি রে কিছু, তুই চাকরি না পেলে কিন্তু বাবা কিছুতেই রাজি হবে না, নিখিল।”
“আমার আবার চাকরি।” হেসে ওঠে নিখিলেশ, “ভ্যাগাবন্ডদের সাথে প্রেম তাই করা যায় রে পৃথা, বিয়ে নয়।”
এই গা ছাড়া ভাবটা একদম ভালো লাগে না পৃথার। “বাজে কথা বলিস না তো, আমি কিন্তু মজা করছি না নিখিল!” মেঘ ঘনিয়ে আসে পৃথার গলায় “আমি বাবাকে আমাদের বিষয়টা নিয়ে বলব, কিন্তু তোর গ্রাজুয়েশনের পর।”
“লাভ নেইরে পৃথা।” হতাশ গলায় বলে নিখিলেশ “তোর বাবা হয়তো তারপর আমায় আর এ বাড়িতেই রাখবে না।”
আর কিছু না বলে পৃথা চলে গেল। নিখিলেশও কাপ নিয়ে ঘরে চলে এল, ফাইনাল পরীক্ষা এগিয়ে আসছে।
সব মিলিয়ে বড্ড অসহায় লাগল নিখিলের।
শীতের সাথে সাথে ফাইনাল পরীক্ষাও শেষ হল এক সময়, কিছু দিন পর রেজাল্টও এল। এই মাঝের সময়টায় আড্ডার লোকজনের সাথে অনেকদিন তার যোগাযোগ ছিল না। রেজাল্ট দেখে বাড়ি ফেরার পরই মাথায় বাজ পড়ল নিখিলেশের। সে এই ভয়টাই পাচ্ছিল।
“দেখো ছেলে, তোমার বাবা নেহাত আমার পূর্বপরিচিত তাই তোমায় আমি এতদিন কিছু বলিনি।” গেটের কাছে দাঁড়িয়েই বলল পৃথার বাবা, “পৃথা আমায় সবটাই বলেছে, তোমায় অনেকদিন আগেই বের করে দেওয়া উচিত ছিল। কলেজ পাস করে গেছ, আর এ বাড়ি থাকা চলবে না। সাত দিন সময় দিলাম বেরিয়ে যাবে, নয়তো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেব।”
রাগে গা হাত পা রি রি করে উঠল নিখিলেশের, সংযত হয়ে তবুও অনুরোধ করল করল, “আর একটা মাস থাকতে দিন কাকু, আমি কথা দিচ্ছি চলে যাব।” পৃথার ওপর রাগে গজগজ করতে করতে ওপরে উঠে গেল নিখিল।
ভদ্রতার খাতিরে আর এক মাস ঠাঁই হয়েছিল নিখিলেশের। তবে দেখা হয়নি পৃথার সাথে। ওর বাবা ওকে সেদিনই মামাবাড়িতে পাঠিয়ে দেয় একমাসের জন্য। ঠিক এমনই একটা সময় এল এক খাম স্বপ্ন দিল্লি মিউজিয়ামে আর্ট রেস্টোরেশন ট্রেনির কাজের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার। আকস্মিক ব্যস্ততা গ্রাস করল নিখিলেশকে- এই ডকুমেন্ট জোগাড় কর, সেই ডকুমেন্ট জোগাড় কর, তার রীতিমতো গলদঘর্ম অবস্থা সে সময়। সপ্তা দু’য়েকের মধ্যেই সামান্য সঞ্চয় সাথে নিয়ে নিখিলেশ পাড়ি দিল দিল্লিতে। ট্রেনে ওঠার দিন সকালে লিখে রেখে গেছিল একটা চিঠি, পৃথার সঞ্চয়িতার শেষ পৃষ্ঠায়। শেষবারেরও মত দেখা হয়নি আড্ডার কারোর সাথে। রয়ে গেছে আক্ষেপ। পৃথা অবশ্য চিঠি পাঠিয়েছিল মাস দেড়েক পর। নিজের হাতে লিখে। কিন্তু সেই চিঠির উত্তর আজও দেওয়া হয়নি।
নিখিল,
বাবা তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে এজন্য আমি বাবার হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলাম। ভালোবেসেছিলাম তোমায়, সবটা বুঝেও কেন বুঝলে না? আর সেই শীতের বিকেলে, তুমি প্রশ্ন করেছিলে আমি রমাকে ভালোবাসি কিনা।
আমি সেদিন বুঝিনি, এখন বুঝেছি, সন্দেহ কর তুমি আমায় তাই তো? বেশ শুনে রাখো তবে, রমা আমার বাবার কাছে ওর আর আমার বিয়ের প্রস্তাব রাখতে চেয়েছিল; ওকে না করে দিয়েছিলাম আমি। কেন জানো? শুধু তোমার জন্যে, আর সেই তুমিই দিল্লি যাওয়ার আগে একটা বারও বললে না আমায়, দেখাও করলে না একবার… ভালো থেক।
সত্যি আমি ভুল ছিলাম, কোনও আক্ষেপ নেই আমার আর।
ইতি পৃথা
তাং ২৮/০৪/১৯৭৫
চিঠিটা পড়েই ছুটে কলকাতা চলে আসতে ইচ্ছে করল নিখিলের, সমস্ত কিছু মিটিয়ে নেবে সে। তার চিঠিটা কি তাহলে খুঁজে পায়নি পৃথা। সামনের মাসেই ট্রেনের টিকিট পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে গেল নিখিল, সারপ্রাইজ দেবে পৃথাকে।
দিন সাতেক পর এল আরেকটা চিঠি। পৃথার বাবা লিখেছে,
“আশা করি আমার মেয়ের শেষ চিঠি পেয়েছ। ডাকবাক্সে চিঠিটা ফেলে আত্মহত্যা করে পৃথা…”
চোখ ঘোলাটে হয়ে আসে নিখিলেশের। কতটা চাপা কান্না লুকানো ছিল পৃথার চিঠিতে, বুঝতে পারেনি নিখিলেশ। ব্যর্থ সে- সত্যিই ব্যর্থ। ছুটে গিয়ে পৃথার চিঠিটা বুকের কাছে চেপে ধরল। হাউহাউ করে কেঁদে উঠল বাচ্চাদের মত।
তারপর কেটে গেছে পঁয়তাল্লিশ বছর, এখনও দমবন্ধ হয়ে আসে নিখিলেশের, নিজের ওপর ঘেন্না হয় কলকাতায় পা রাখতে। তবুও কিসের টানে সে ছুটে ছুটে যায় তা তারও অজানা। কষ্ট হয় রমার জন্যও…। কে জানে এখন কেমন আছে সে? আয়নার সামনে দাঁড়াতে পারে না নিখিল। গোটা শহরটাই তার পাগলাগারদের মত লাগে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে। ফরাসি তার্পিন তেলের ভাপ নিয়ে একটা দমকা হাওয়া ব্যালকনিতে ধাক্কা মারে। হাত থেকে পড়ে যায় গ্লাস…৷ এবার হয়তো দেখা হতে পারে পৃথার সাথে। আজ পৃথার মৃত্যুবার্ষিকী, নয় তো সে অতটা মদ খায় না সচরাচর