ভার্জিনিয়ার উলফ| কঠোর ভাবে প্রাপ্তমনস্কদের জন্য | -| Bengali Stories for Matured
0 (0)

                                             

পার্কের একদম অন্ধকার প্রান্তে,একটা লোহার বেঞ্চের ওপর বসে প্রতীকের হাতটা নিজের হাতের মুঠোর মধ্যে ধরে কুহেলি বললো,”তুমি আমাকে কথা দাও,কাল সন্ধেতে যাই হয়ে যাক না কেন,তুমি আমার কাছে ফিরে আসবে!কথা দাও আমাকে!”

 প্রতীক যেন থর থর করে কেঁপে উঠলো,তারপর কুহেলির মুখটা নিজের মুখের সামনে নিয়ে এসে অস্ফুট স্বরে বললো,”কথা দিলাম,আমি শুধু তোমার,আর তোমার হয়েই সারাটা জীবন থাকবো।”

কুহেলি চোখ বন্ধ করে ঠোঁটটা এগিয়ে দিল।কিছুক্ষণের মধ্যেই দুটো উষ্ণ ঠোঁট একে অপরের আলিঙ্গনে পরস্পরের প্রতি এক অব্যক্ত প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হয়ে গেল।

বুধবার,সন্ধে সাতটা।Orion India private ltd. এর সমস্ত স্টাফ বাড়ি চলে গেলেও একটা কম্পিউটার এর সামনে বসে এখনও কাজ করে চলেছে প্রতীক।মাঝে মাঝে ঘাড় তুলে বড় ঘড়িতে সময়টা দেখে নিচ্ছে।সাড়ে সাতটায় HR এর সঙ্গে একটা মিটিং আছে,সেটার জন্যই বসে থাকা।এইধরনের প্রাইভেট অফিসে সাধারণত রাত্রে মিটিং হয়না,যা হওয়ার দুপুরের মধ্যে শেষ করে বিকালের মধ্যে সবাই বেরিয়ে পড়ে।কিন্তু আজকের ব্যাপারটা আলাদা।আজকে সবাই বলতে কেউ নেই।প্রতীকের সঙ্গে একা মিটিং করতে চান HR মিসেস উর্মি দত্তগুপ্ত।

কি বিষয়ে মিটিং হবে প্রতীক সেটাও জানেনা।তবে আজকের মিটিংটা যে হবে সেটা প্রায় তিনদিন আগে থেকে জানত। দিন তিনেক আগেই অফিস থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ম্যাম ফোন করে বলেছিলেন,”আগামী বুধবারটা একটু ফাঁকা রাখবে প্রতীক।সন্ধেবেলায় তোমাকে নিয়ে একটু বসবো।অডিট এর এন্ট্রিতে বেশ কিছু গোলমাল দেখতে পাচ্ছি,দুজনে মিলে বসে সেগুলো ঠিক করে নেব।”

 মাঝের এই তিনদিন অনেক চেষ্টা করেও বিশেষ কিছু ভুল বের করতে পারেনি প্রতীক।তাহলে কিসের জন্য এই মিটিং?

আরেকবার ঘড়ির দিকে আড়চোখে তাকায় প্রতীক। সাতটা কুড়ি।এখনও প্রায় দশ মিনিট।সবেমাত্র তিনমাস হলো এই অফিসে জয়েন করেছে সে।কলেজের পড়া শেষ করে প্রায় তিনবছর বেকার বসে থেকে কাজটা পেয়েছে।তাই খুব মন দিয়ে নিজের সব কাজ করে।সেদিন মিসেস দত্তগুপ্ত যখন তাকে নিয়ে আলাদা করে বসবো বললেন,সেদিন একটু ভয়ই লেগেছিল।কি জানি কাজে কি ভুল করেছে যে তাকে আলাদা করে ডাকলেন।কিন্তু পরশুদিন অফিস থেকে বেরোনোর সময় কাজলদার সঙ্গে কথা বলে সে ভুলটা ভেঙেছে তার।সে জানে তার কাজে কোনো গন্ডগোল নেই।মিসেস দত্তগুপ্ত কিকারণে তাকে নিয়ে আলাদা বসতে চান সেটাও জানে প্রতীক।কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও নিয়তিকে এড়িয়ে যাওয়া যায়না।যতই হোক নতুন অফিস,নতুন কাজ।মাইনেও ভালো।কোনো মূল্যেই সে এই কাজটা ছাড়বে না।অথচ এই কাজে থাকতে হলে মিসেস দত্তগুপ্তর কথা তাকে শুনতেই হবে,যেটা সে কিছুতেই পারবে না।এমন কিছু করতে হবে যাতে সাপ ও মরবে,লাঠিও ভাঙবে না।সেইরকম একটা পরিকল্পনা অবশ্য তার মাথাতে এসেছে।আগে দেখা যাক জল কতদূর গড়ায়!

ঠিক সাতটা তিরিশে ফোনটা বেজে উঠলো,”চলে এসো প্রতীক,আমি ফ্রী আছি।”

বুকভরা নিশ্বাস নিয়ে মিসেস দত্তগুপ্তর চেম্বারের দিকে এগিয়ে গেলো প্রতীক।

“ম্যাডাম আসবো?”

-“আরে এসো এসো,তোমার জন্যই অপেক্ষা করে আছি।হাতের কাজগুলো সব শেষ করে নিলাম যাতে আর ডিস্টার্ব না হয়!”

বাহ্,মিসেস দত্তগুপ্তর ছিপ একেবারে তৈরি।প্রতীকও মনে মনে তৈরী হয়ে নিলো।

-“বলুন ম্যাডাম।সেদিন বলছিলেন অডিট এর কাজে কি যেনো ভুল হয়েছে!”

-“বলছি বলছি,এত তাড়াহুড়ো করছো কেনো?তোমাদের এই বয়সের ছেলেদের এটাই দোষ,সব কিছুতে বড্ড তাড়াহুড়ো করে।শোনো ওই চেয়ারে চুপটি করে বস।দেখো কম্পিউটার অন করাই আছে।আগের বছরের অডিট রিপোর্টটা বের করো।”

প্রতীক আর কোনো কথা না বলে কম্পিউটার এর সামনে বসল।আড়চোখে তাকিয়ে দেখলো,মিসেস দত্তগুপ্ত চেয়ার ছেড়ে উঠে জানলার পর্দাটা টেনে দিলেন।

প্রতীক কম্পিউটার খুলে পুরনো অডিট রিপোর্ট গুলো খুঁজতে লাগলো।হটাত শরীরটা কেমন শিরশিরিয়ে উঠলো।কি ব্যাপার, হটাৎ এত ঠান্ডা লাগছে কেন? ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল,ম্যাডাম এসিটা চালিয়ে চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়েছেন।প্রতীক জোরে শ্বাস টানলো।মিসেস দত্তগুপ্ত অসাধারণ সুন্দরী,দুধে আলতা গায়ের রং,টিকলো নাক,টানা টানা চোখ,পাতলা গোলাপী নেশাতুর ঠোঁট।ঠোঁট দুটো যেন ঠান্ডাতেই কেঁপে কেঁপে উঠছে।পরনে সাদা টি শার্ট আর ডেনিম জিন্স।ম্যাডাম এমন করে চেয়ারে বসলেন যে তার উন্নত বক্ষযুগল প্রতীকের সামনে সম্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হয়ে উঠলো।প্রতীক দাঁত চেপে কম্পিউটার এর দিকে চোখ ঘুরিয়ে নিল।

-“ম্যাডাম পেয়ে গেছি।এই যে…”

মিসেস দত্তগুপ্ত উঠে এসে প্রতীকের কাঁধের ওপর ঝুঁকে পরে কম্পিউটার স্ক্রিন এর দিকে তাকালেন।তারপর প্রতীকের হাতের ওপরে হাত দিয়েই মাউস ক্লিক করতে লাগলেন।প্রতীকের কানের কাছে ম্যাডামের স্পষ্ট নিঃশ্বাসের আওয়াজ।বেশ ভারী নিঃশ্বাস।প্রতীকের বুকের ভিতরটা ঢিপ ঢিপ করতে লাগলো।একবার সরে আসার চেষ্টা করলো,কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে মিসেস দত্তগুপ্তর উন্নত স্তনযুগল তার পিঠে চেপে বসে গেলো।প্রতীক দাঁত চিপে চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলালো।এই পরিস্থিতিতে বেসামাল হওয়া যাবে না।

কাজলদা সেদিনই বলেছিল,আটবছর হয়েছে মিসেস দত্তগুপ্তর বিয়ের কিন্তু তারপরেও অফিসে জয়েন করা প্রতিটা অল্প বয়সী ছেলে তার শিকার হয়।এর আগেও তিনজন হয়েছে।নতুন ছেলে জয়েন করার কিছুদিন পরেই ম্যাডাম এর কেবিনে সন্ধেবেলায় মিটিং এর ডাক আসে,সেদিন আবার বিকালেই অফিসের সবার ছুটি হয়ে যায়।তারপর কেবিনে কি হয় সেটা বলাই বাহুল্য,কিন্তু ছেলে গুলো পরেরদিন থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে সেটা সকলেরই নজরে পড়েছে।এর মধ্যেই একটা ছেলে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিল। কাজলদা বলে কেবিনে যা হয় ম্যাডাম এর ক্যামেরায় সেগুলো নাকি রেকর্ড হয়ে থাকে।পরে সময় সুযোগ মতন সেগুলোর সদ্ব্যবহার করে ম্যাডাম আবার শিকার হতে বাধ্য করেন।আর কেউ রাজি না হলেই তখন শুরু হয় ব্ল্যাকমেইলিং।আর তা এমন পর্যায়ে চলে যায় যে মানসিক বিকৃতির দোরগোড়ায় দাঁড়াতে হয়।

  যারা শিকার হতে চায়,ম্যাডাম তাদের দিকে ঘুরে ও তাকান না।তার পছন্দ টাটকা,কচি ছেলেগুলো।কাজলদার ভাষায় “হাঁটুর বয়সী ছেলে”।

  অমিত, মানে যে ছেলেটা এর আগে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল সেই ছেলেটার সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতীক। ও বলেছিল,”আমার নিজের ওপরে ঘেন্না করছে জানো।ওই বুড়ি মহিলা যখন টেবিলের ওপরে বসে পা ফাঁক করে ডাকে ঠিক মনে হয় কোনো ডাইনি বুড়ি আঙ্গুল নাড়াচ্ছে।আমার সবেমাত্র সাতমাস হলো বিয়ে হয়েছে , আর বিয়ের পরেই এই চাকরিটা পেয়েছিলাম।কিন্তু এখানে জয়েন করার পরেই ওই ঘটনাটা প্রথমবার ঘটল।”

প্রতীক প্রশ্ন করেছিল,”তুমি প্রথমবার কেনো রাজি হয়েছিলে?”

অমিত জোর মাথা নেড়ে বললো,”আমি ইচ্ছা করে রাজি হয়নি।ওনার কেবিনে যাওয়ার সাথে সাথেই ম্যাডাম আমাকে একটা ড্রিঙ্কস অফার করেছিলেন,সেটা খেয়েই শরীরে কেমন যেন আগুন ধরে গেছিলো।তার সঙ্গে ছিল ওই ডাইনির শরীরের বিভিন্ন অংশে হাত বোলানো।আমি অনেকক্ষন সামলে ছিলাম,কিন্তু তারপরে আর পারিনি। ডাইনি যে কখন ভিডিও করে রেখেছে বুঝতেই পারিনি।পরের বার যখন ডেকেছিল রাত্রের মিটিংয়ে,আমি যাবো না বলেছিলাম।তখুনি আমাকে ছবি গুলো পাঠায় আর বলে আমার বাড়িতে,বন্ধুদের সবার কাছে পাঠিয়ে দেবে।আমি আর নিজেকে সামলাতে পারিনি।ঘেন্নায় নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম,কিন্তু এমন কপাল দেখো,সেটাও পারলাম না।”

আজ এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে প্রতীক বুঝতে পারছে এই অমোঘ আকর্ষণ এড়ানো বড়ই কঠিন।বিয়ের আট বছর পরেও ম্যাডাম এর শরীরের গাঁথুনি এখনও অটুট।প্রতীক মনে মনে কুহেলির সঙ্গে কাটানো সময় গুলো স্মরণ করতে লাগলো।আজ তাকে এখানে থেকে অক্ষত বেরোতেই হবে।সে অমিত আর বাকি দুজনের মতন ম্যাডাম এর জালে পড়বে না,কিছুতেই না।সে শুধু কুহেলির,তার ওপরে সমস্ত অধিকার শুধু কুহেলির।

মিসেস দত্তগুপ্ত ততক্ষণে প্রতীকের কানের কাছে নিজের ঠোঁট দুটো নিয়ে এসেছেন,তার হাত দুটো প্রতীকের কাঁধের ওপর দিয়ে প্রতীকের বুকের কাছে এসেছে থেমেছে।প্রতীক চেয়ার ছেড়ে ছিটকে উঠলো। আমতা আমতা করে বলল,”ম্যাডাম,আগের বছরের রিপোর্টটা….”

মিসেস দত্তগুপ্ত ঠোঁট বেঁকিয়ে একটু হাসলেন,তারপর টেবিলের ওপরে একটা পা তুলে বসলেন।নিচের ড্রয়ার খুলে দুটো গ্লাস আর এক বোতল শাম্পেন বের করে গ্লাসে ঢালতে ঢালতে বললেন,”আরে হবে হবে সব কাজ হবে!তুমি তো আর পালিয়ে যাচ্ছ না!এই তো সবে সন্ধে,এখনও কত রাত বাকি!নাও চিয়ার্স করো!

-“সরি ম্যাডাম,আমি ড্রিংক করি না।”

-“আরে নাও নাও শাম্পেন তো,এটা খেলে কিছু হবে না।”

-“সরি ম্যাডাম,ডাক্তারের বারণ আছে।”অবলীলায় মিথ্যা বলে দিলো প্রতীক।

-“যা ইচ্ছা”বলে নিজের গ্লাস টাই চুমুক দিলেন মিসেস দত্তগুপ্ত।তারপর টেবিল থেকে নেমে প্রতীকের দিলে এগিয়ে এলেন।এক ঝটকায় প্রতীক কে কাছে টেনে নিয়ে নিমেষেই তার কণ্ঠলগ্না হয়ে গেলেন।ফিস ফিস করে বললেন,”কাম অন বেবি, লেটস হ্যাভ সাম ফান টুনাইট।”

সঙ্গে সঙ্গে আলতো ধাক্কা দিয়ে মিসেস দত্তগুপ্ত কে সরিয়ে দিলো প্রতীক।মিসেস দত্তগুপ্ত কেমন যেন থতমত খেয়ে গেলেন।এরকম ব্যবহার এর আগে কোনদিনও কারোর কাছে পাননি।যাকেই চেয়েছেন,সেই কাছে এসেছে।কেউ ইচ্ছায়,কেউ অনিচ্ছায়।কিন্তু এই ছেলেটা তাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিল,এত বড় সাহস ওর!

প্রতীক বললো,”সরি ম্যাডাম,তবে এরকম করবেন না।বিহেভ ইউর্সেলফ।আমি আপনার সামান্য একজন কর্মচারী।তাছাড়া আপনার থেকে বয়সেও অনেক ছোট,এরকমটা করবেন না দয়া করে।”

নিমেষে মিসেস দত্তগুপ্তর মুখটা হিংস্র হয়ে উঠলো।যত রাজ্যের ঘৃনা যেন এসে জড়ো হলো তার মুখে।সুন্দর মুখশ্রী পলকে পরিণত হলো কুৎসিত কদাকার মুখভঙ্গিতে।সাপের মতন হিস হিস করে বললেন,”হাউ ডেয়ার ইউ ! তুমি আমাকে না বলার মানে জানো?আমি চেয়ে পায়নি এমন কিছু নেই।আমার তোমাকে ভালো লেগেছে সেইজন্য আমি তোমাকে আরেকটা সুযোগ দিতে চাই।তুমি জানোনা আমার কথা না শুনলে আমি তোমার কি সর্বনাশ করতে পারি! নাউ কাম হিয়ার লাইক আ গুড বয়!”বলেই টেবিলের ওপরে বসে টি শার্ট এর ওপরের বোতামটা খুলে দিলেন।

সেই মুহূর্তে প্রতীকের মনে হলো পৃথিবীর নিকৃষ্টতম মহিলার সামনে সে দাঁড়িয়ে আছে।দাঁতে দাঁত চিপে বললো,”সরি ম্যাডাম,আমি পারবো না।আমার জীবনে একজন আছে তাকে আমি কোনো মূল্যেই ঠকাতে পারবো না।”

ম্যাডাম কুটিলভাবে হেসে বললেন,”তাহলে তো তোমার চাকরিটা নিয়ে আমাকে ভাবতে হবে।তাছাড়া তোমাকে নিচে নামানোর আরো অনেক রাস্তা খোলা আছে আমার সামনে।ধরো আমি যদি এই মুহূর্তে আমার জামাটা ছিঁড়ে দৌড়াতে দৌড়াতে রাস্তায় নেমে যায় দিয়ে চেঁচিয়ে লোক জড়ো করে বলি তুমি জোর করে আমার গায়ে হাত দিয়েছ?ভাবতে পারছি তোমার অবস্থা কি হবে?”

ঘেন্নায়,রাগে,বিরক্তিতে প্রতীকের মুখটা কালো হয়ে গেলো,”আমি আপনার শরীরে হাত দিইনি ম্যাডাম,কেনো আপনি আমার সর্বনাশ করবেন?কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার?”

জামার দ্বিতীয় বোতামটা খুলতে খুলতে ম্যাডাম বললেন,”আমার তোমাকে চায় প্রতীক।এতে লাভ ক্ষতির ব্যাপার আসছে না।তুমি যদি আমাকে খুশি করতে পারো তাহলে তুমি ভাবতেও পারবে বা তোমাকে আমি কোথায় পৌঁছে দেবো?আর তানাহলে কোথায় নামিয়ে দেবো সেটাও তুমি আন্দাজ করতে পারছ না!তুমি আমাকে খুশি না করলে আমি জামাটা ছিঁড়ে সোজা রাস্তায় বেরোব,তারপর চিৎকার করে বলবো তুমি জোর করে আমার গায়ে হাত দিয়েছ! জানোই তো এখন মেয়েদের কথা কেউ অবিশ্বাস করে না!যতই হোক এখন ফেমিনিজম এর যুগ।তুমি কিছু না করলেও ফেঁসে যাবে।তার থেকে এসো দুজনেই এই সন্ধের মজা নি!এসো আমার কাছে এসো!”বলে টেবিলের ওপরে পা ফাঁক করে বসলেন।

একটা কৃমি দেখলে মানুষের যতটা ঘেন্না হওয়া উচিত,এই মুহূর্তে মিসেস ঊষা দত্তগুপ্ত কে দেখে ঠিক ততটাই ঘেন্না লাগছিল প্রতীকের।তার হাত পা কাঁপতে লাগলো।উনি যা বললেন সেটা যদি উনি করেন তাহলে প্রতীকের কি অবস্থা হবে সেটা ভেবেই তার শিরদাঁড়া বেয়ে একটা শীতল স্রোত নেমে গেল।চোখের সামনে কুহেলির মুখ,মা বাবার মুখ,ছোট বোনটার মুখ সব পর পর ভেসে উঠতে লাগলো।

-“এসো প্রতীক, দেরী করছ কেন?”ম্যাডাম এবার ডাকলেন। এক অলীক আকর্ষণে প্রতীক এগিয়ে গেল।নেকড়ে যেমন করে শিকারের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে,ম্যাডাম সেইভাবেই প্রতীকের দিকে এগিয়ে এলেন।প্রতীক একটা লম্বা নিশ্বাস নিলো,তারপর গায়ের জোরে ম্যাডামকে পিছনে ঠেলে দিলো।

মিসেস দত্তগুপ্তর মুখটা আবার হিংস্র হয়ে উঠলো।উঠে দাঁড়িয়ে দাঁত চিপে বললেন,”তোমার এত বড় সাহস,তুমি আমার গায়ে হাত তুললে!দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা…”বলে দরজার দিকে দৌড়াতে গেলেন।প্রতীক তার হাত ধরে টেনে এনে আবার চেয়ারে বসিয়ে দিলো,”কোনরকম চালাকির চেষ্টা করবেন না ম্যাডাম।এতক্ষণ আপনি আমায় অনেক ভয় দেখালেন,এবার আমার পালা।কি বলছিলেন আপনি তখন? জামা ছিঁড়ে নিচে গিয়ে লোক ডাকবেন?ডাকুন,লোক ডাকুন পুলিশ ডাকুন যাকে খুশি ডাকুন।তারপরে আমিও এই রেকর্ডিং টা শোনাবো তাদের যেটা আমার মোবাইলে করা আছে।এটাতে এতক্ষণ আপনার বলা সমস্ত কথা রেকর্ড হয়ে আছে।তাছাড়া শুনেছি আপনার এই কেবিনে লুকোনো ক্যামেরাও আছে তাতে নাকি ভিডিও হয়।পুলিশকে বলবো সেটা বের করতে,আর তার সঙ্গে এই রেকর্ডিংটা চালাতে।তাহলেই বোঝা যাবে কে কার সম্মানে হাত দিয়েছিল।এতদিন অন্য সবার ওপরে আধিপত্য জমিয়ে এসেছেন,কিন্তু আমাকে বেছে একটু ভুল করলেন।আমাকে আগেই সবাই বলে দিয়েছিল তাই আজ আমি তৈরি হয়েই এসেছিলাম।”

মিসেস দত্তগুপ্তর মুখটা কুঁকড়ে গেল।এরকম যে কেউ করতে পারে সেটা তিনি ভাবতেই পারেননি।এতদিন অন্য সবাই তার কথাতে তার সামনে আত্মসমর্পণ করে দিত।আর তার সঙ্গে শাম্পেন এ মেশানো ওষুধটাও কাজ করতো।কিন্তু আজ এটা কি হয়ে গেল!ছেলেটা সব রেকর্ড করে রেখেছে!এটা বাইরে গেলে তার সন্মান তো ধুলোয় মিশে যাবে।কাউকে মুখ দেখাতে পারবেন না তিনি।যে স্বামী তার সামনে কেঁচো হয়ে থাকে,তিনিও তো….ভয়টা আরো জাঁকিয়ে বসলো মিসেস দত্তগুপ্তর মধ্যে।

প্রতীক এবার পিছিয়ে গেল দুপা,তারপর বললো,”সব ছেলেরা সমান হয়না ম্যাডাম।কেউ কেউ অসুরও হয় আবার কেউ কেউ নারায়ণও হয়।কেউ যেমন রাত্রিবেলায় মেয়েদের সম্মানে হাত দেয় কেউ আবার সম্মান বাঁচানোর জন্য নিজের প্রাণও দিয়ে দেয়।আর আপনাকে জানিয়ে রাখা ভালো,আমার জীবনে এমন একজন নারী আছেন,যিনি আপনাদের এই সো কলড ফেমিনিজম এর উর্দ্ধে।আর তাকে আমি আমার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি।আমার ওপরে সব অধিকার শুধু তার,বুঝলেন।আপনি আজ জোর করে আমাকে দিয়ে নিজের শরীরের চাহিদা মেটাতে চেয়েছিলেন।অন্য কেউ হলে হয়তো মিটিয়ে দিত,কিন্তু আমি একজনের প্রতিই কমিটেড বুঝলেন তো!সুতরাং এরপর থেকে আর এরকম করার চেষ্টা করবেন না কোনোদিনও।”

প্রতীক কেবিনের দরজাটা টেনে খুললো।মিসেস দত্তগুপ্ত কোনরকমে বললেন,”কোথায় যাচ্ছ তুমি?ওই রেকর্ডিংটা….মুছে ফেলো…কি চাই তোমার বল…কত টাকা চায়…সব দেবো আমি তোমাকে…”

প্রতীক তাকে থামিয়ে দিয়ে বললো,”কি দিতে পারবেন আপনি আমাকে?আমাকে কেনার ক্ষমতা আপনার নেই।নিজেকে শুধরানোর চেষ্টা করুন।বাড়িতে স্বামী আছে তো নাকি?আর রেকর্ডিংটা?ঐটা আমার কাছেই থাক,কোনোদিন যদি আবার আপনার ফেমিনিজম জেগে ওঠে তখন এইটাই আমার ঢাল হবে।চিন্তা নেয়,আমার ক্ষতির সম্ভাবনা যতদিন না দেখবো ততদিন এইটার সন্ধান কেউ পাবে না।আজ চলি ম্যাডাম, গুড নাইট!”

প্রতীক অফিস থেকে বেরিয়ে এলো।বুক থেকে মনে হচ্ছে যেন একটা বিশাল ভার নেমে গেল।পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে কুহেলির নাম্বারে ডায়াল করলো।

-“হ্যাঁ বলো,কি হলো ওখানে?তুমি ঠিক আছো তো?”

-“আই লাভ ইউ কুহু, আই লাভ ইউ সো মাচ…”

পরেরদিন খবরের কাগজে বড় বড় হেডলাইন দেখা গেল

  “আত্মহত্যা করলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি উমা দত্তগুপ্ত। বিষণ্ণতার শিকার,সন্দেহ পুলিশের।”

  _____________সমাপ্ত_____________

About Post Author

9F10 AB

Click to rate this post!
[Total: 0 Average: 0]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post নীল সাগরে নিভৃত প্রেম| কঠোর ভাবে প্রাপ্তমনস্কদের জন্য | -| Bengali Stories for Matured
Next post কাঙ্গানা | কঠোর ভাবে প্রাপ্তমনস্কদের জন্য | -| Bengali Stories for Matured