হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে| প্রেমে পড়া বারণ | সূর্য ভট্টাচার্য| Bengali Love Story
0 (0)

চাকরি পাওয়ার বেশ কিছু বছর পরে অমলের খেয়াল হল বিয়ের আসলে বয়সটাও তো তিন দশক পেরিয়ে গেছে

গ্রামের দিকের একটা স্কুলেই চাকরি পেয়েছিল প্রথম যখন ঘর-পরিবার ছেড়ে আসলো তখন বেশ অসুবিধা হয়েছিল তারপর পরিবেশের স্পর্শে আর আর্থিক চাপ মুক্তির ফলে বেশ ভালোই মানিয়ে নিয়েছে কিন্তু এখন ভাবনা একটা বিয়ের!

বাড়ি থেকে বাবা-মা, পাত্রীর জন্য ঘটকের সাথে যোগাযোগ করেছে নিজের জীবনে প্রেম বলতে তো কিছুই নেই সেই ছোটবেলার স্কুলের ভালো লাগা তমসা তাও সে যখন অরুনের সাথে প্রেম করতে শুরু করে, তারপর এর তার দিকে তাকায়নি

স্কুলের অনেক শিক্ষকরাই অমলকে নিয়ে খিল্লি করে বিয়ে না করার জন্য সেদিন নিশিকান্তবাবু তো বলেই বসলেন, “যাও হে এবার গঙ্গা সাগরের পুণ্য স্নান সেরে সন্ন্যাস পথে হাঁটা শুরু করো” কি আশ্চর্য! ত্রিশ বছর পার হয়ে গেছে বলে কি বিয়ে না করলেই নয়!

বউ এর অভাবটা অমল নিজেও কিছুটা অনুভব করে বন্ধুরা সবাই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যায় পরিবার নিয়ে অমলের তো যাওয়ার উপায় নেই বাবা মায়ের যা বয়স তাদের নিয়ে চিড়িয়াখানা আর শান্তিনিকেতন ছাড়া যাওয়ার জায়গা নেই ঘুরতে যাওয়া অমলের একমাত্র শখ “কিন্তু হায়! বিধি বাম!”

হঠাৎ একদিন সকালে বাড়ি থেকে একটা চিঠি আসে মায়ের চিঠি চিঠির বিষয় এই যে – বাবার খুব শরীর খারাপ, প্রতিবেশী নিতাইবাবু আবার জমিতে নোংরা জল ফেলছে আর বড়ো মাসির ছেলে-বউ আসবে সামনের মাসে

প্রথম দু’টোর জন্য একটি বার ছুটি নিয়ে বাড়ি যেতেই হবে অমলকে শেষেরটা নিয়ে একটু বিরক্ত বোধ করল সম্পর্কের টান অনেকদিন আগেই কেটে গেছে, এখন কেন এই নিছক অতিথি-পনা

স্কুলে যখন ছুটির জন্য আবেদন করল তখন অনেকেই আড়ালে মন্তব্য করতে লাগল যে, অমলবাবু বুঝি বাড়ি যাচ্ছেন বিয়ের জন্য কথাটা অমলের কানে আসে কিন্তু অমল ব্যাপারটা আগের সমস্ত খিল্লির মত উপেক্ষার হাসি হেসে বলে, রথ দেখা আর কলা বেচা একসাথে করতে পারি না মশাই আপনাদের এত উদ্দীপনাকে অবজ্ঞা করে বাড়ি গিয়ে বিয়ে করতে পারি!

ছুটি নিয়ে সপ্তাহ শেষে বাড়ি ফিরলেন বাবার অবস্থা ভালো না খারাপ সেটা দেখে বোঝা মুশকিল তিনি বেজায় আনন্দে বাড়ির সামনের জমিতে ফুল গাছের চারা বসানোর জন্য মাটি কোপাচ্ছেন অমলকে দেখে বেশ জোরে হাঁক দিলেন, “কই হে, বাবু আইসে একটু বাইরে আইসো তো

গলার জোর আর কাজের ইচ্ছা দেখে অমল একটু চমকে গেল বাবাকে বলল, “দীপু কোথায়! তুমি এসব করছ কেন?”

– “আরে ওই হালারে তাড়াই দিসি বলে কিনা ফুল গাছ লাগায়া কি বাবুর বিয়ার মালা গাঁথবেন!”

কথাটা শুনে অমল একটু কাঁচুমাচু মুখ করল তারপর সামলে নিয়ে বলল, “তা এর জন্য তুমি ওকে তাড়িয়ে দিলে? আর এসবের দরকারটাই বা কি?”

– “দরকারের ফিতা মাইপা কি ইচ্ছার ঘর করা যায়! যা তুই ঘরে যা আমি যাচ্ছি একটুকুন বাকি

অমল ব্যাগ কাঁধে নিয়ে আর দাঁড়াতে পারছিল না হাতেও দুটো ব্যাগ সে ঘরে চলে গেল

বাড়ির ভিতরে গিয়ে মাকে ডেকে বাবার এমন পাগলামির কথা জানতে চাইলে অমলের মা সে প্রসঙ্গ উপেক্ষা করে পাখার বাতাস করতে শুরু করে, আর খাবারের যোগান করতে থাকে

ব্যাপারটা বেশ ভালো বুঝে উঠতে পারে না বাবার নাকি শরীর খারাপ! তাও এখনই তার ফুল বাগান বানাতে হবে মাও সে সব প্রশ্রয় দিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছে

রাতে খাওয়ার সময় প্রতিবেশীর ব্যাপারটা তুলে অমল জানতে চাইলে বাবা বলেন যে, তিনি পাইপ লাগিয়ে নিয়েছেন অমল একথা শুনে বলে, “তাহলে সমস্যাটা কিসে তোমাদের? এমনভাবে ডাকলে যেন কি বিশাল সমস্যা তোমাদের!”

– “আরে তোর মাসির বাড়ির দাদা আসছে সাথে বৌদি অনেকদিন বাদে আসছে তাই ভাবলাম তুইও সাথে থাক

অমলের মা বাঙাল ভাষায় কথা বলে না কিন্তু তিনিও ওপার বাংলার লোক অমল বলে, “তাদের সাথে তো সম্পর্ক গেছে বহুদিন আবার কেন এ বাড়িতে?”

 “থাক বাবা সেসব কথা বাদ দে আর একটু দিই?”

উপযুক্ত দিনে সেই মাসির ছেলেরা আসে অমলদের বাড়ি মাসির ছেলে, বউ, সাথে আর একজন নতুন একজন কে?

অমল আগে কখনও দেখেনি নতুন মহিলাটিকে তাদের বাড়িতে আগে আসত অনেকেই, অমলও যেত অনেকের বাড়ি কিন্তু একে তো ঠিক চিনে উঠতে পারল না

অমলের মা, বাবা কিন্তু সেই নতুন মহিলার সাথে বেশ ভালোই আলাপ আলোচনা করল কথা বলল অমল কি তাহলে চেনে কিন্তু ভুলে গেছে?

মা কে জিজ্ঞেস করায় সে বলল, “আরে এ তো মাসির বাড়ির ওখানের জগাই মামার মেয়ে ছোটোবেলায় মাসির বাড়ি গিয়ে কত খেলা করেছিস মনে নেই!”

অমল এবার বুঝতে পারল আসলে অমলের মাসির বাড়ি যাওয়ার স্মৃতি তেমন প্রখর না কিন্তু জগাই মামার মেয়েকে ভালো মতই চিনতো তিন্নি ছিল ডাক নাম, ভালো নাম কি ছিল মনে নেই এমনকি মাসির বাড়ি গেলে সারাদিন ওর সাথেই খেলত তারপর যখন বড়ো হল জগাই মামা ওকে অন্য জায়গায় পড়তে পাঠিয়ে দিয়েছিল তারপর থেকে মাসির বাড়ি যেতে অমলের আর ভালো লাগত না তারপর তো যাওয়াই বন্ধ হয়ে গেল যখন কলেজ পাশ করল নানাদিক থেকে চাকরি না পাওয়ার তীব্র ধিক্কার সেই সাথে একটু আর্থিক অবস্থার অবনতি সম্পর্কের সুতোগুলোয় টান পড়ে কেটে গেছিল পরপর অনেকগুলো

তবে নতুন মহিলাকে চিনে অমল একটু আনন্দিত হল যাক একদম অপরিচিত নয় তবে ও কেন প্রথমবার দেখায় কথা বলল না দাদা, বৌদি দু’একটা কথা জিজ্ঞেস করে চলে গেছিল ঘরে থাকার ঘর সব আগে থেকেই গোছানো ছিল দীপু ব্যাটাকে আবার ধরে আনা হয়েছে যাই হোক বাগানের কাজ না করলেও বাড়ির কাজে তো দীপুকে লাগবেই লাগবে

দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মনে করল একটু তিন্নির সাথে কথা বলবে কিন্তু দাদা-বৌদির সাথে সেও খাওয়া-দাওয়া সেরে চলে গেল দোতলার ঘরে ও কি তাহলে অমলকে এড়িয়ে যাচ্ছে! এই ভাবনায় অমল একটু নিরাশ হল মনে মনে

দুপুরের খাওয়া সেরে সেও চলে গেল দোতলায় তার নিজের ঘরে

অমল যখন তার ঘরে ঢোকে তখন সে একদম আলাদা একটা অমল হয়ে যায় তার সামনে চলে আসে দূর দিগন্তের ইতিহাস দেওয়ালে টাঙানো বিভিন্ন দেশের ম্যাপ বড়ো একটা বই রাখার আলমারিতে কত শত বই আরও নানা জিনিস আর সেইসব স্মৃতি, এই ঘরে বসেই রাতের পর রাত পড়েছে পরীক্ষার আগে, এখানেই সে জ্বর অবস্থায় বেঘোরে ঘুমিয়েছে আরও নানা সব ঘটনা মনে পড়ে ঘরে ঢুকলেই আর হয়ে যায় সেই সব অবস্থার মধ্যে কোনও একটা পছন্দের অমল

আজ ঘরে ঢুকেই মনে হল ঘুম আসবে না সুতরাং একটু বই ঘাঁটা যেতেই পারে আলমারি খুলে একটার পর একটা বই বের করছে আবার রেখে দিচ্ছে আসলে পড়বে বলেই বের করছে কিন্তু বই খুললেই মনে পড়ছে তিন্নির কথা তিন্নির সাথে মাসির বাড়িতেই বন্ধুত্ব তাও কত ছোটবেলায় সে কোনোদিন  তাদের বাড়িতেও আসেনি বড়োবেলায় দেখেওনি কোনোদিন। তাই হয়তো কথা বলতে সংকোচ বোধ করছে

এরকমই নানা কারণ মনের মধ্যে ভেসে আসতে লাগল তবে তিন্নিকে দেখে কি অমল প্রেমে পড়ল! এমনটা মনে হতেই সে ঘোর বিমুখ হল তিন্নির কথা ভাবতে ভালোই লাগছিল একটু আগে কিন্তু এই ভাবনাটা মাথায় আসতেই অমল একটু অস্বস্তিতে পড়ল আশ্চর্য ভাবনা আগে কোনদিন আসেনি, হয়তো তিন্নি আজ এখানে না আসলে সেই ভাবনাটা আসত না সুতরাং অমলের জীবনে তিন্নি অনেক দিন আগেই হারিয়ে গেছে আজ সে একজন নতুন কেউ, তার স্বভাব, চলন, রূপ সব মিলিয়ে সে একটা নতুন তিন্নি সেই তিন্নির সাথে অমলের অনেক ভালো বন্ধুত্ব ছিল কিন্তু এই তিন্নির সাথে তো অমলের এখনও বন্ধুত্বও নেই এমনকি নিজের পরিচয়টুকুও সে মুখ ফুটে বলেনি

ভাবনাটা অমলকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছিল ঘরে স্থায়ী ভাবে বসতে পারছিল না অমল মনটাকে হঠাৎ যেন তিন্নির ভাবনা নাড়িয়ে দিল দোলনার মত আর নানা ভাবনায় দুলতেই লাগল

পায়চারি করল তারপর চেষ্টা করল একটু ঘুমানোর তাও সম্ভব হল না তারপর একটু পরে ছাদে চলে যায়

দুপুর রোদটা এখনও ঠিক যায়নি বিকেলের শুরুর রোদ অতটা গায়ে জ্বালা ধরায় না অমল একটা চেয়ার নিয়ে চলে আসলেও সিগারেটের প্যাকেটটা আনতে ভুলে গেছে অবশ্য ওটা বাড়িতে লুকানো থাকে ছাদে মাঝে মাঝে চলে কিন্তু বাড়ির ভিতরে তার বিন্দু মাত্র উপস্থিতি পাওয়া যায় না

এই সিগারেট আনতে ভুলে যাওয়াটাও অমলের মনে হল তিন্নির ভাবনার জন্য

রোদের তাপ কম থাকলেও একটু ছাওয়া দিকে গিয়েই বসল অমল চিন্তার তবু অবকাশ নেই মাথা থেকে উড়েই গেছে যে তার বয়স ত্রিশ বছর পেরিয়ে গেছে, তবুও বিয়ে করেনি তাকে এই বিয়ে না করা নিয়ে খিল্লি শুনতে হয় এসব এখন মাথা থেকে উড়ে গেছে পুরো চিন্তার আকাশ জুড়ে তিন্নি

বাস্তবিক-ভাবেই আকাশের দিকেই তাকিয়ে বসে ছিল অমল পাখি উড়ে যাচ্ছে মাঝে মাঝে নীল আকাশে সাদা মেঘ সাথে কালো পাখি আকাশের পাখি কালোই হয় কাছে আসলে তবেই রং বোঝা যায় সাদাও হয় তবুও সেটা কাছে হলেই দূরে গেলে সেও কালো তিন্নি এত দূরে ছিল আজ হঠাৎ কাছে এসেছে তাই এত রং, এত বৈচিত্র্য আবার সেই তিন্নি এসে ঘিরে ধরল অমলকে!

হঠাৎ অমলের চোখ দু’টোকে পিছন থেকে দু’টো হাতে মুড়ে ফেললো অমল যদিও চোখ বন্ধ করেই ছিল কিন্তু তাও বেশ চমকে গেল হয়তো চিৎকার করে উঠত কিন্তু সাথে সাথে সেই হাত তার মুখটাকে ও চাপা দিয়ে রাখল একটা ঠাণ্ডা, নরম, কোমল হাত; যেন পানের পাতার স্পর্শ

অমল নিজেকে সামলে নিল বোধহয় যেটা ভাবছিল সেটাই হল এমন একটা মুহুর্ত এসেছে তার জীবনে একটু শান্ত স্বরে বলল, তিন্নি!

একটা স্নিগ্ধ, কোমল নারী কণ্ঠের মৃদু হাসির ঢেউ শুনতে পেল তিন্নি অমলের মুখ থেকে হাত সরিয়ে সামনে এসে ছাদের পাঁচিলে হেলান দিয়ে দাঁড়াল

অমল বুঝে উঠতে পারছে না ওর কি বলা উচিৎ ওর ঠোঁটে এখনও তিন্নির হাতের স্পর্শ লেগে আছে জিভ দিয়ে সেই স্বাদ আস্বাদন করতে সে লজ্জাবোধ করল যদি তিন্নি সেটা খেয়াল করে!

তিন্নি হাসি থামিয়ে বলল, “তাহলে কেমন চমকে দিলাম বল! সকাল থেকে তো বাবু সেজেছিলি একদম

অমল যেন কিছু শুনতেই পেল না সে শুধু দেখল তিন্নি কথা বলছে কোনও শব্দ তাকে স্পর্শ করল না কিংবা করল, সে সেই শব্দকে উপেক্ষা করে বিকেলের রোদের হালকা আলোর স্রোতে তিন্নির হাস্যোজ্জ্বল মুখ দেখে যেতে লাগল

তিন্নি আবার বলল, “কি হে বাবু! কিছু শুনতে পাচ্ছেন! “

অমল ঘোর মুক্ত হল আচমকা বলল, “হ্যাঁ, এই তো মানে কি যেন বললে তুমি!”

তিন্নি আবার হাসল, কানের দুল দুটো সেই হাসিতে মাথার দোলার ছন্দে দুলতে লাগল নাকের উপরের ছোট্ট নথটা কোন অলৌকিক আলোয় অল্প উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে দিল বেণী করা চুল সামনে নিয়ে, হাসি থামিয়ে তিন্নি বলল, “তুমি কি রে? তুই বোধ হয় ভুলেই গিয়েছিলি তোকে আমলকি বলে ডাকতাম আমি ছোটবেলায় এতদিন সাক্ষাৎ নেই বলে তুই এত দূরের কেউ ভেবে ফেললি?”

অমল সামলে উঠে বলল, “না না তা কেন! মানে, ইয়ে বুঝতে পারিনি তাই! “তারপর তুই, তুমি মিশিয়ে বলল, “কেমন আছ?… তুই?” তিন্নি আবার হাসিতে ডুবে গেল

সন্ধ্যা নামার অনেক আগেই চাঁদ উঠে গেছে তারারাও আস্তে আস্তে উপস্থিতি ফুটিয়ে তুলছে গড়ে তুলছে মহাশূন্যের বিলাসিতা আর ছাদের মেঝেতে বসে আছে অমল আর তিন্নি কথা, হাসি, চোখের তাকানো এসবে একটু একটু ডুবে যাচ্ছিল অমল এত সবের মধ্যে হঠাৎ সেই দুপুরের ভাবনাটা ভেসে উঠল তাহলে কি তিন্নির প্রেমে পড়েছে অমল?

ভাবটা মনে আসতেই অমল একটু অস্বস্তিতে পড়ল হাতের নখ নিয়ে ঘষতে লাগল তিন্নি বলে যাচ্ছে কথা অমল হঠাৎ কি মনে হল বলল, “তিন্নি আমি যদি তোকে বিয়ে করতে চাই তুই কি রাজি থাকবি?”

জীবনের প্রথম প্রেমের প্রস্তাব, তাও সরাসরি বিয়ের একটু গুছিয়ে বলা উচিৎ ভেবেও গুছিয়ে বলতে পারল না অমল বাংলার শিক্ষক অমল পরীক্ষায় গুছিয়ে উত্তর না লেখার জন্য কত ছাত্রের নাম্বার কেটেছে আজ যদি সেই সব ছাত্রের ছুঁড়ে দেওয়া অভিসম্পাত অমলের এই অগোছালো প্রস্তাবের উপর আছড়ে পরে!

অমল একটু তিন্নির দিকে তাকিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল তিন্নি প্রস্তাবটা শুনে যেটা বলছিল থামিয়ে দিল

একটু নীরবতা নেমে আসলো সন্ধ্যার সাথে সাথে তারপর তিন্নি বলল, “যদি আমি না রাজি থাকি তাহলে তুই বিয়ে করতে চাইবি না তাই তো?”

প্রশ্নের উত্তরে আবার প্রশ্ন! এটা তো অমল প্রত্যাশা করেনি সে যে তিন্নির কথার জালে জড়িয়ে গেছে সেটা বুঝতে পারল তারপর নিজের অভ্যন্তরের বাংলা শিক্ষক অমলকে জাগিয়ে তুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, “আমি যদি বিয়ে ভালোবেসে বিয়ে করতে চাই তবে কি তুই বিয়ে করতে চাইবি আমাকে?”

নাহ্! এই শিক্ষক শুধু পরীক্ষার খাতায় ভুল খোঁজার জন্যই, প্রেম প্রস্তাব প্রদানের জন্য একদম অনুপযোগী

তিন্নি বলল, “যদি তুই বিয়ে করতে চাস তবেই কাকু কাকিমাকে আমি তোকে বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলব

মানে! এটা কি হল! অমলের সব গুলিয়ে গেল! অমল জিজ্ঞেস করল, “তার মানে?”

তিন্নি হেসে বলল, “কাকু কাকিমা তোর বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছিল তারপর তোর দাদা-বৌদি সেই প্রস্তাব নিয়ে আমাদের বাড়ি যায় আমি তাদের বলেছিলাম আমি তোকে দেখে তারপর রাজি হব তাই এখানে আসা এমনিতেও চাকরি বদল করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাই ভাবলাম বিয়ের যদি সুযোগ হয় তবে সেখানেই ট্রান্সফার নিয়ে নেব তারপরই এমন সুযোগ যাই হোক তোকে সবটা এঁরা বলেনি সেটা সকালে এসেই বুঝেছিলাম তাই আমিও একটু চেষ্টা করেছিলাম তোকে ঘোরানোর তারপর দেখলাম বাবুর দুপুরের ঘুম নষ্ট করে দিলাম তাই আর দেরি না করেই চলে আসলাম কেমন লাগল চমক?”

অমল গোটা ঘটনাটা চোখের সামনে সিনেমার মত দেখেছিল তিন্নির কথার উত্তরে বলল, “বিয়েটা তাহলে করছি!”

দিনক্ষণ দেখে, লগ্ন বুঝে বিয়ের তারিখ ঠিক হল পঞ্জিকা অনুযায়ী এখনও মাসখানেক দেরি ততদিনে অমলের বাবার পোঁতা সেই ফুল গাছও বড়ো হবে অমলের বিয়ের পর ঘুরতে যাওয়ার ফর্দটাও গুছিয়ে নেবে কিন্তু তিন্নির ভালো নামটা কি অমল তখনও জানতে পারবে?

About Post Author

9F10 AB

Click to rate this post!
[Total: 0 Average: 0]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post মহাজাগতিক| প্রেমে পড়া বারণ | সাকিবুর রহমান রোহান| Bengali Love Story
Next post সেই রাতে| প্রেমে পড়া বারণ | দেবলীনা দে| Bengali Love Story