Getting your Trinity Audio player ready...
|
৬
তন্দ্রা ফিরতেই অরুনাংশু চোখ খুলে দেখল সে সোফাতে শুয়ে আছে তার মাথার পাশে বসে আছে জেসিকা। মিস্টার অনির্বাণ তার চোখেমুখে জলের ছিটে দিচ্ছেন আর তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আরও অনেকে। নিজেকে খানিকটা সামলে সে উঠে বসল ক্রমে দেখল সেই স্বপ্নের রমণী তার হাতের কব্জিটা ধরে খানিকক্ষণ দেখল তারপর বলল, “জাস্ট নরম্যাল প্রেসার লস বলে মনে হচ্ছে।“
কথাটা শুনে মিস্টার অনির্বাণ বললেন, “কি ভায়া এখন ঠিক লাগছে!!?”
অরুনাংশু কোনো কথা না বলে সেই রমণীর দিকে তাকিয়ে রয়েছে দেখে জেসিকা বলল, “উনি ডক্টর নীলিমা সেন আমাদের অনির্বাণ স্যারের স্ত্রী।“
অরুনাংশু লম্বা একটা ঢোক গিলল কিন্তু কোনো কথা বলতে পারল না।
তারপর ডক্টর নীলিমা বললেন, “আজকে কিন্তু একদম ড্রিঙ্ক করবে না আগে থেকে বলে রাখলাম।“
অরুনাংশু উত্তর দেওয়ার আগেই জেসিকা বলল, “আমি খেয়াল রাখব যাতে স্যার ড্রিঙ্ক না করেন।“
অরুনাংশু নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে বলল, “ধন্যবাদ।“
মিস্টার অনির্বাণ বললেন, “আরে ভায়া বৌদিকে আবার ধন্যবাদ বলতে লাগে নাকি।“
নীলিমা বললেন, “আরে তোমরা মত অল্প বয়েস্ক ছেলেরা যদি প্রেসার ট্রেসার লস করে বসে থাকো তাহলে চলবে নাকি!!? আচ্ছা বাড়িতে ঠিকমত বুঝি খাওয়া দাওয়া করো না!!?”
অরুনাংশু একটু আলতো হেসে বলল “না তেমন ব্যাপার নয় আসলে কিছুদিন থেকেই একটু শরীরটা খারাপ বোধ হচ্ছে।“
আচমকা মিস্টার বিশ্বাস ছুটে এসে বললেন, “সান্যাল মাই বয় আর ইউ অলরাইট!!?”
অরুনাংশু একটু লজ্জিত কণ্ঠে বলল, “হ্যাঁ স্যার বাট আই অ্যাম ভেরি্…”
মিস্টার বিশ্বাস- “আরে আরে লজ্জার কি আছে এমন হতেই পারে। শরীর কি আর মানুষের নিজের বশে থাকে সবসময় তাও ভালো আমাদের ডাক্তারনী ছিলেন তাই বেশি চাপ হয়নি।“
মিস্টার অনির্বাণ আর মিসেস নীলিমা একত্রে বললেন, “আপনি এইভাবে বলে আমাদের কিন্তু লজ্জা দিচ্ছেন।“
মিস্টার বিশ্বাস- “ওকে ওকে আর লজ্জা দেব না চল চল লেটস ড্রিঙ্ক টুগেদার, বাট সান্যাল মাই বয় নট ফর ইউ টুডে। গিভ হিম আ ফ্রুত জুস।“ কথাটা বলেই মিস্টার বিশ্বাস হাঁসতে লাগলেন সেইসাথে অন্যান্য সকলেও হাঁসতে লাগল।
ক্রমে আবার সব স্বাভাবিক হয়ে উঠল কেবল ব্যাতিক্রমি অরুনাংশুর চোখের চাহুনিটা। মিস্টার অনির্বাণ এবং মিসেস নীলিমা দেবীর বিয়ে হয়েছে বছর সাতেক হল। মিস্টার অনির্বাণ অরুনাংশুদের কোম্পানির সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বছর পাঁচেক হল এখানে চাকরী করছেন। তাদের দুজনের ছেলের নাম ইন্দ্র বছর পাঁচেক বয়েস, ক্যালকাটা বয়েস স্কুলে পড়াশুনা করে। নীলিমা দেবী ডাক্তার দক্ষিণ কলকাতার বুকে তার ক্লিনিক আছে, বিয়ের আগে থেকে ডাক্তারি করছেন। গাইনোক্লজিস্ট হিসেবে ভালো পরিচিতিও আছে।
জেসিকার সাথে বছর পাঁচেকের ইন্দ্রর বেশ জমে গেছে দুজনেই আনন্দে বেশ মেতে উঠেছে। মিস্টার অনির্বাণ তার অন্য সহকর্মীদের সাথে খেলা এবং রাজনীতি নিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। টেবিলের ওপাশে বশে নীলিমা দেবী ড্রিঙ্কের গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে জেসিকার দিকে ইশারা করে বললেন, “ওই মেয়েটি তোমার গার্লফ্রেন্ড নাকি!!?”
এমন সোজা প্রশ্ন শুনেও অরুনাংশু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল দেখে মিসেস নীলিমা দেবী আলতো একটা হাসি হেসে বললেন, “তুমি কি খুব সাই নাকি!!?”
নীলিমা দেবীর হাসি তার কণ্ঠধ্বনিও ঠিক অবিকল সেই স্বপ্নের রমণীর মত। তাই সেইদিকে মহিত দৃষ্টিতে অরুনাংশু তাকিয়ে আছে খানিক পরে নিজেকে সামলে সে বলল, “না মানে আপনাকে খুব চেনা চেনা লাগছে তাই আরকি…”
কথাটা শেষ হওয়ার আগেই নীলিমা দেবী বললেন “গার্লফ্রেন্ড কিনা বললে না যে!!?”
অরুনাংশু – “না না জেসিকা জাস্ট আমার কলিগ বলতে পারেন।“
নীলিমা- “বাট দ্যাট গার্ল লাভস ইউ সো মাচ।“
অরুনাংশু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, “আপনি কীভাবে বুঝলেন!!?”
মিসেস নীলিমা একটা আলতো চাপা হাসি হেসে গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে বললেন, “মেয়েমানুষের মন তোমার থেকে বেশি বুঝি।“
অরুনাংশু – “না মানে ঠিক বুঝলাম না??”
নীলিমা- “তুমি যখন সেন্সলেস হলে তখন ওর মুখের ভাবটা লক্ষ্য করেছিলাম তাই বললাম।“
অরুনাংশু একটু হেসে বলল, “আপনি ডাক্তার না গোয়েন্দা!!?”
নীলিমা- “দুটোই বলতে পারো। আমি সমাজের জন্য ডাক্তার আর আমার স্বামীর জন্য গোয়েন্দা।“ কথাটা বলেই তিনি হাঁসিতে লুটিয়ে পড়লেন। তার সেই প্রানজ্জল হাসি, সেই খোলা কেশজুগল, নগ্ন উন্মুক্ত পিঠের আভা যেন অরুনাংশুর রুক্ষ হ্রিদয়ে ঠিক স্বপ্নের মত দোলা দিল। আচমকা জেসিকা ফিরে আসতেই সে আবার নিজের মনের ভাবটা সামলে বলল, “জেসিকা চল খাওয়া দাওয়া সেরে নেওয়া যাক রাত হচ্ছে।“
তারপর সকলে মিলে একসাথে ওরা ডিনার করল। খাওয়ারের দিকে অরুনাংশুর নজর ছিল না তার চোখের চাহুনি ছিল মিসেস নীলিমার দিকে। তার স্বপ্নের সাথে আজ বাস্তবের মেল্বন্ধন সে খুঁজে পেয়েছে। এতদিন তার মনে হয়েছে ওই স্বপ্নগুলো নিতান্তই তার মনের অন্দরে বিরাজমান তার সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই। কিন্তু আজ অনির্বাণ, নীলিমা সেইসাথে ইন্দ্র সবটাই তার স্বপ্নের সাথে মিলে যাচ্ছে। তবে কি সেই স্বপ্ন আসলে তার বাস্তব জীবনের ভবিষ্যৎ!!? নাকি সেই স্বপ্ন নিছকই তার মনের ভুল!!? নাকি এই সবটাই কেবল একটা অজানা কাকতালীয় ঘটনার নিদর্শন!!? এমনই অনেক প্রশ্ন বারবার তার মনে এসেছে কিন্তু কোনো উত্তর সে খুঁজে পায়নি।
ডিনার শেষে সবাইকে বিদায় জানিয়ে অরুনাংশু এবং জেসিকা গাড়িতে উঠল তারপর গাড়ি এগিয়ে চলল সোজা ভেজা পিচের রাস্তা ধরে। বাইরে হালকা বৃষ্টি পড়ছে বন্ধ জানলার বাইরের দিকে তাকিয়ে জেসিকা বলল, “ওয়েদারটা কেমন যেন রোম্যান্টিক হয়ে উঠেছে।“
অরুনাংশু – “বৃষ্টি মানেই যে রোম্যান্টিক তোমাকে কে বলল!!?”
জেসিকা- “আমার তেমনই মনে হয় তাই বললাম।“
অরুনাংশু – “আমার কিন্তু ভোরের কুয়শার চেয়ে সুন্দর আর কিছু মনে হয় না।“
জেসিকা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তার দিকে, তার সেই চাহুনির অন্দরে যেন ভালোবাসার অকৃত্তিম ছোঁয়া বর্তমান। সেইদিকে তাকিয়ে অরুনাংশু বলল, “জেসিকা তুমি মেয়েটা ভালো, সুন্দরী, সেক্সি কিন্তু আমার মনের অন্দরে অন্য একজন আছে আর তাকে ছাড়া আমি কাউকে ভালবাসতে পারব না।“
জেসিকার মুখটা মুহূর্তে বদলে গেল। ঠিক যেমনি তীব্র ঝড়ের পূর্বে আকাশে একটা তীব্র গুমোট ভাব তৈরি হয় ঠিক তেমনি জেসিকার মুখের আদলটাও বদলে গেল। গাড়ি দ্রুত জেসিকার বাড়ির সামনে পৌঁছে গেল। বাকি পথটুকু তাদের মাঝে দুজনের মাঝে কোনো কথা হয়নি এমনকি জেসিকা একবারও অরুনাংশুর দিকে মুখ ফিরিয়ে দেখেনি। গাড়ি থেকে নেমে জেসিকা আলগা একটা ধন্যবাদ জানাল তারপর ক্রমে তার বাড়ির দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে দরজাটা বন্ধ করে দিল।
অরুনাংশু ব্যাপারটা বেশ বুঝতে পারল কিন্তু তার কাছে আর উপায় ছিল না। মিসেস নীলিমা দেবী বাস্তবের ভুমিতে অবতীর্ণ হয়ে তার মনটাকে যেভাবে অশান্ত করে তুলেছেন তাতে এটাই ছিল তার কাছে সবচেয়ে সহজ উপায়।
ক্রমে গাড়ি চালিয়ে অরুনাংশু বাড়ি ফিরে গেল। বাড়িতে ফিরে দেখল টেবিলের উপর তার রিপোর্টগুলো রাখা রয়েছে সেটা একবার খুলে সে দেখল তারপর আবার খামে ভোরে সে একটু ফ্রেস হয়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।
ক্রমে সে আবার সেই স্বপ্নের অন্দরে প্রবেশ করল। কিন্তু আজ আর সে তার নিজের বাড়িতে নেই চারিদিকে সবুজ গাছের আভা দিগন্ত বিসৃত সবুজ মাঠের মাঝে সে বসে আছে তার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে মিসেস নীলিমা দেবী। কিছুক্ষণ যেন চারিদিকে শান্ত কোনো কথা নেই ঠিক তার পরের মুহূর্তে সে শুনতে পেল নীলিমা দেবী তাকে বলছেন, “অরুন আর কতদিন এইভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে আমরা দেখা করব!!?”
অরুনাংশু তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, “ঠিক ততদিন যতদিন অনির্বাণ তোমাকে ডিভোর্স না দেয়।“
নীলিমা- “সে কোনোদিন সেটা করবে না। তাছাড়া অরুন আমার একটা ছেলে আছে।“
অরুনাংশু – “আমি তোমাকে তোমার সন্তানসহ গ্রহন করতে রাজি আছি।“
নীলিমা- “না অরুন আমার ছেলেটা নিজের বাবার কাছ থেকে দূরে চলে যাবে সেটা আমি চাইনা।“
অরুনাংশু – “তোমার কি আমার উপর ভরসা নেই!!?”
নীলিমা- “আমি সেটা বলেছি নাকি!!?”
অরুনাংশু – “তাহলে!!?”
নীলিমা- “তাহলে আর কি কিছু না ও তুমি বুঝবে না। আমাদের সম্পর্কের কোনো দাম নেই, কেবল একটা নিছক সময়ের খেলা ছাড়া কিছুই না।“
অরুনাংশু – “এতদিন পরে আজ তোমার এই মনে হচ্ছে!!?”
নীলিমা- “তুমি নিজেও জানো যে ব্যাপারটা কঠিন হলেও এটাই বাস্তব। তোমাকে আমি বারণ করিনি বিয়ে করতে, সংসার করতে, খালি বলেছি আমি পারব না।“
অরুনাংশু মুখের ভাবটা ক্রমে বদলে গেল সে খানিকটা রেগে গিয়ে বলল, “ব্যাস বললেই হয় আমাকে আর তোমার ভালো লাগছে না।“
নীলিমা- “তাই জন্যই আমি আমার স্বামীকে মিথ্যে বলে নিজের ছেলেকে মিথ্যে বলে তোমার কাছে ছুটে এসেছি।“ কথাটা বলেই সে অরুনাংশুর কোল থেকে মাথাটা সরিয়ে নিল।
খানিকক্ষণ সব চুপচাপ তারপর অরুনাংশু বলল, “যদি আমাদের সম্পর্কের কোনো ভবিষ্যৎ না থাকে তবে আমাদের একসাথে এইভাবে দেখা করার কোনো মানে নেই।“
নীলিমা- “তুমি কি বলতে চাইছ অরুন!!?”
অরুনাংশু – “আমি চাইছি তোমাকে বিয়ে করতে তোমার সাথে সংসার করতে কিন্তু তুমি যদি সেটা না চাও তবে আমাদের এই সম্পর্কটা শেষ করে ফেলা উচিত।“
নীলিমা কিছুক্ষণ চুপ করে রইল তারপর বলল, “তবে এই আমাদের শেষ দেখা।“ কথাটা বলেই সে উঠে চলে গেল। অরুনাংশু তার পিছনে পিছনে তার নাম ধরে ডাকতে ডাকতে ছুটছে। নীলিমা একবারও তার দিকে ফিরে তাকাচ্ছে না , পার্কের গেট থেকে বাইরে বেড়িয়ে সোজা মেট্রো ষ্টেশনের দিকে এগিয়ে চলেছে নীলিমা। মাঝে জনসমাগম ঠেলে এগিয়ে চলেছে অরুনাংশু তার পিছন পিছন। মেট্রোর গেটের মুখে সে নীলিমার হাতটা চেপে ধরল তারপর বলল, “আমাকে এতো সহজে ফেলে তুমি চলে যাবে!!?”
নীলিমা নিরুত্তর। তার চোখের দৃষ্টি সোজা অরুনাংশুর চোখের দিকে। দুজনের চোখের অন্দরে জলের ছিটে আচমকা তাদের পাশে মেট্রো ট্যানেল থেকে বেড়িয়ে এলো অনির্বাণ তার দৃষ্টি সোজা অরুনাংশু এবং নীলিমার দিকে।
আচমকা বিছানা ছেড়ে লাফিয়ে উঠল অরুনাংশু তার সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে। চোখে মুখে তীব্র আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। ঘড়ির কাঁটায় তখন ৮টা বাজে আজকে সে অফিস যাবে না আগেই মিস্টার বিশ্বাসকে সে বলে রেখেছে। তাছাড়া কালকের ঘটনার পরে তাকে ছুটি দিতে তিনি বিন্দুমাত্র আপত্তি করবেন সেটা অস্বাভাবিক। নিজেকে কিছুটা সামলে সে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে একটা সিগারেট ধরাল। সিগারেটে টান দিতে দিতে সে ভাবল তবে কি সত্যি সে তার জীবনের ভবিষ্যৎ দেখছে!!? এমন সময় রাখালের মা এসে হাজির হল, সে তাকে ব্রেকফাস্টের ফিরিস্তি শুনিয়ে স্নান সারতে চলে গেল।
৭
দ্রুত স্নান খাওয়া সেরে সে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল শুভ্রর ক্লিনিকের উদ্দেশ্যে। সেখানে পৌঁছে খানিকক্ষন অপেক্ষা করার পরে সে শুভ্রর চেম্বারে প্রবেশ করল।
শুভ্র- “রিপোর্টগুলো এনেছিস তো!!?”
অরুনাংশু মাথাটা নাড়িয়ে তাতে সম্মতি জানাল। তারপর রিপোর্টের খামটা শুভ্রর দিকে এগিয়ে দিল। শুভ্র খানিকক্ষণ সেটা ভালোভাবে দেখে বলল, “তোর রিপোর্টগুলো সবই ভালো আছে দেখছি।“
অরুনাংশু বলল, “কিন্তু কালকে একটা ঘটনা ঘটেছে।“
শুভ্র- “কি ঘটনা!!?”
অরুনাংশু – “তবে বলছি শোন।“
শুভ্র কৌতূহলী দৃষ্টি দিয়ে অরুনাংশুর দিকে তাকিয়ে রইল তারপর তার থেকে বিগত রাতের ঘটনাগুলো শুনল। সব শুনে সে খানিকক্ষণ উপরের সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে রইল তারপর লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, “তাহলে তোর স্বপ্নের ক্যারেক্টারগুলো রিয়েল এইটুকু বোঝা গেল।“
অরুনাংশু – “তা থেকে কি প্রমান হয় শুনি!!?”
শুভ্র- “তোর গল্পের কোনো বাস্তবতা আছে সেটা বোঝা যাচ্ছে মানে সম্পূর্ণটা কাল্পনিক নয়।“
অরুনাংশু – “কিন্তু কালকের আগে আমি কখনো এই মহিলাকে দেখেনি। তার পরিচয় নাম কোনটাই আমার জানার কথা নয় তবে কীভাবে স্বপ্নে!!!?”
শুভ্র- “আমার মনে হচ্ছে তুই নিজের ভবিষ্যৎ দেখছিস।“
অরুনাংশু – “এটা আমারও মনে হয়েছে কিন্তু সেই মহিলা নিজের জীবনে বেশ সুখী আমার সাথে কেন তিনি অ্যাফেয়ারে জড়াবেন!!?”
শুভ্র- “সেটা বড় প্রশ্ন নয় তার চেয়ে বড় প্রশ্ন হল তোর স্বপ্ন যদি তোর ভবিষ্যৎ হয় তবে কেন তিনি উন্মাদ হবেন!!?”
অরুনাংশু – “হ্যাঁ আমার কালকের স্বপ্নে তিনি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক উন্মাদের কোনো চিহ্ন মাত্র নেই আর বাস্তবেও তিনি সুস্থ এবং স্বাভাবিক।“
শুভ্র- “দেখ তুই ভবিষ্যৎ দেখছিস এটা আমাদের কল্পনাও হতে পারে।“
অরুনাংশু – “আর যদি সেটা ঠিক হয় তবে!!?”
শুভ্র- “আপাতত তোর স্বপ্নে দেখা ব্যাক্তিটি বাদে কোনো ঘটনা মিল খাচ্ছে না যদি বাস্তব জীবনের কোনো ঘটনা তোর স্বপ্নের সাথে অবিকল মিলে যায় তবে বলতে হবে তুই ভবিষ্যৎ দেখছিস।“
অরুনাংশু – “আমার মাথাটা ঠিক কাজ করছে না কেমন যেন নিজেকে পাগল পাগল বোধ হচ্ছে।“
শুভ্র- “কিছুদিনের ছুটি নিয়ে কোথাও গিয়ে একটু ঘুরে আয়। তুই ব্যাপারটা নিয়ে এতো বেশি ভাবনাচিন্তা করছিস যে তোর শরীর মন দুটোই তাতে খারাপ হয়ে উঠছে।“
অরুনাংশু খানিক চুপ করে থেকে বলল, “তাহলে তোর মতে আমার এই স্বপ্নের অসুখের কোনো ওষুধ নেই!!?”
শুভ্র- “দেখ আমি তোকে আরও ভালো ডাক্তার আমার স্যারকে সাজেস্ট করতে পারি কিন্তু উনিও আমাকে বলেছেন এটা মনের কোনো রোগ নয় এটা সম্পূর্ণ অন্যরকম ব্যাপার। তুই চাইলে কাউন্সিলিং করে একবার ট্রাই করতে পারিস কিন্তু আমার মনে হয় তাতেও বিশেষ লাভ হবে না।“
অরুনাংশু – “আমার কাউন্সিলিংয়ের জন্য যা করতে হবে তুই কর আমি ওটাই করে দেখব। মনের শান্তি না পেলে এইভাবে আমি বেশিদিন বাঁচতে পারব না।“
শুভ্র তাতে সম্মতি জানাল তারপর অরুনাংশু সেখান থেকে চলে গেল সোজা নিজের বাড়িতে। বাড়িতে ফিরে দুপুরের আহার সেরে অরুনাংশু বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে তার মনে সেই একই স্বপ্নের ঘটনাগুলো বারবার ঘুরেফিরে তাকে ধাওয়া করছে। সেইসাথে তার মনটা ক্রমে চঞ্চল থেকে চঞ্চলতর হয়ে উঠছে। এইসব কথা ভাবতে ভাবতেই আচমকা তার চোখ লেগে গেল। সে আবারো ঘুমিয়ে পড়ল সেইসাথে আবারো প্রবেশ করল তার স্বপ্নের অন্দরে।
সে আবার ফিরে গেল সেই মেট্রো স্টেশনের সামনে। সেখানে সে নীলিমার হাতটা ধরে তার সাথে কথা বলছে ক্রমে দুজনের চোখে জলের ছিটে দেখা দিয়েছে আচমকা টানেল থেকে বাইরে বেড়িয়ে এলো অনির্বাণ। তার চোখের কোণে সেই দৃশ্য দেখে তীব্র রাগের চিহ্ন স্পষ্ট আচমকা সে জোরে একটা হাততালি দিল তারপর বলল, “বাহ!! বাহ !! চমৎকার!! অসাধারণ ব্রিলিয়েণ্ট।“
অরুনাংশু এবং নীলিমা নতমুখে তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। অনির্বাণ আবারো বলল, “নীলিমা তুমি আমাকে বলতে পারতে যে আমাকে আর তোমার ভালো লাগছে না আমি নিজে তোমার জীবন থেকে সরে যেতাম। আজ তুমি যেটা করলে সেটাকে স্রেফ বিশ্বাসঘাতকতা বলে, আমার তোমাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে লজ্জা লাগছে ধিক্কার তোমাদের ছি!! ছি!!”
কথাগুলো বলে সে নিজের বছর পাঁচেকের ছেলেকে সঙ্গী করে দ্রুতপদে প্রস্থান করল। নীলিমা তাদের দিকে ছুটে গেল অরুনাংশু চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখতে লাগল। মেট্রো স্টেশনের গেট থেকে হাত দশেক দূরে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে তাদের মাঝে কথাকাটাকাটি চলছে ছোট্ট বছর পাঁচেকের ইন্দ্র তাদের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। সেই বছর পাঁচেকের বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে অরুনাংশুর নিজের উপর রাগ হচ্ছে। বারবার তার মনে হচ্ছে এইসবই তার জন্য হয়েছে, দূরে দাঁড়িয়ে সে এইসব ভাবছে আচমকা অনির্বাণ নীলিমাকে একটা চড় মারল তারপর সে ইন্দ্রর হাত ধরে এগিয়ে গেল। এই ঘটনা লক্ষ্য করে অরুনাংশু আর নিজেকে সামলে রাখতে পারল না সোজা ছুটে গেল অনির্বাণের দিকে ক্রমে দুজনের মাঝে কথাকাটাকাটি মারামারিতে পরিণত হওয়ার উপক্রম করছে নীলিমা তাদের দুজনকে সামলানোর চেষ্টা করছে, এমনসময় ছোট্ট ইন্দ্র সকলের অজান্তে কখন যে গাড়ি রাস্তার দিকে চলে গেছে সেটা কেউ লক্ষ্য করেনি। যখন তারা সেটা লক্ষ্য করেছে তখন রাস্তার অপরদিক থেকে একটা মিনিবাস তীব্র বেগে ছুটে আসছে ,অনির্বাণ ব্যাপারটা লক্ষ্য করে দ্রুত সেইদিকে ছুটেছে। সেইসাথে তার পিছনে অরুনাংশু কিন্তু তার পৌঁছানোর আগেই তীব্র বেগে ছুটে আসা মিনিবাস ছোট্ট ইন্দ্র এবং অনির্বাণকে পিষে দিয়েছে। কালো পিচের রাস্তার বুকে লাল রক্তের স্রোত, নিস্পাপ দুটো প্রাণ মুহূর্তে লাশে পরিণত হয়ে রাস্তার বুকে চিত হয়ে শুয়ে রয়েছে। সেই দৃশ্য দেখে নীলিমা সংজ্ঞা হারিয়েছে।
অরুনাংশুর ঘুমটা ভেঙ্গে গেল তার সারা শরীর ঘামে ভিজে চপচপ করছে। যেন মনে হচ্ছে সে সবেমাত্র ঘামের জলে স্নান সেরে উঠেছে। তার চোখেমুখে তীব্র আতঙ্কের ছাপ ,সে পাশের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল দুপুর তিনটে বাজে। সে দ্রুত বাথরুমে ছুটে গিয়ে চোখেমুখে জলের ছিটে দিল , তার নিঃশ্বাস প্রশ্বাস দ্রুতগতিতে পড়ছে তার হৃদস্পন্দনের তীব্রতা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে নিজেকে কিছুটা সামলানোর চেষ্টা করছে বটে কিন্তু কিছুতেই যেন কোনো কাজ হচ্ছে না বারবার তার মনের অন্তরে একটা তীব্র বেদনা যেন তার অন্তরটাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। সে নিজের অস্বস্তিটা কিছুটা কাটানোর জন্য ঘরে ঢুকে একটা সিগারেট ধরাল তারপর লম্বা লম্বা তিনটে টান দিয়ে তার নিজের কিছুটা স্বাভাবিক বোধ হল। নিজেকে কিছুটা সামলে সে শুভ্রকে একটা ফোন করল শুভ্র তাকে বিকেলে নিজের চেম্বারে চলে আসতে বলল। অরুনাংশু ফোনটা রেখে লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল তারপর মনে মনে চিন্তা করল সম্পূর্ণ স্বপ্নের কাহিনীটা তার জানা হয়ে গেল বটে কিন্তু এটা যদি তার বর্তমান বাস্তবের ভবিষ্যৎ হয় তবে তার জীবনে তীব্র একটা সুমানি আসতে চলেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সে বারবার ভাবছে যদি এটা তার ভবিষ্যৎ হয় তবে যেভাবে হোক তাকে তার ভবিষ্যৎ বদলাতে হবে। বারবার কেবল তার নিজেকে অপরাধী বলে বোধ হচ্ছে ওই নিস্পাপ শিশু , মিস্টার অনির্বাণ ,নীলিমা তাদের সাজানো জীবনটা কেবল তার জন্য ভবিষ্যতে শেষ হয়ে যাবে এই ভাবনাটা বারবার তাকে যেন কীটের মত দংশন করে চলেছে। এইসব ভাবতে ভাবতেই আছমকা তার ফোনটা বেজে উঠল সে দেখল জেসিকা তাকে ফোন করেছে। সে জেসিকার ফোনটা তুলে হ্যালো বলতেই সে শুনতে পেল তার তীব্র কান্নার শব্দ।
অরুনাংশু – “জেসিকা কি হয়েছে কাঁদছ কেন!!?”
সে ধরা ধরা গলায় বলল, “স্যার আমাকে আপনি এইভাবে কেন দূরে ঠেলে দিলেন!!?” তার গলার স্বর শুনে বোঝা যাচ্ছে সে বেশ মদ্যপান করেছে কারণ কথাগুলো বলতে বলতে বারবার তার জড়িয়ে যাচ্ছে।
অরুনাংশু নিরুত্তর। এই কথাগুলো এখন শোনার মত মানসিক অবস্থা তার নেই সে তাই কেবল চুপ করে রইল। জেসিকা আবার কম্পিত কণ্ঠে প্রশ্ন করল, “কার জন্য আপনি আমাকে এইভাবে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছেন স্যার!!? কে!!? কাকে আপনি এতটা ভালোবেসে ফেলেছেন!!?”
অরুনাংশু আবারো কোনো কথা বলল না। তার বারবার চোখের সামনে নীলিমার মুখটা ভেসে উঠল। এটা সত্যি যে সে নীলিমাকে বাস্তবে কালকে পার্টিতে প্রথম দেখেছে কিন্তু অবাস্তব স্বপ্নের অন্দরে সে তার প্রেমিকা তার চোখ, মন, শরীর , কেশজুগল তার অন্তরটাকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করেছে যে সে সেখান থেকে কিছুতেই যেন মুক্তি পাচ্ছে না। জেসিকা আবার বলল, “স্যার প্লিজ আমাকে মিথ্যে বলবেন না আমি জানি আপনার কোনো প্রেমিকা নেই তবে কেন আমাকে মিথ্যে বলছেন!!?”
অরুনাংশু – “এখন তুমি ঠিক নেই, আর তুমি জানোনা হাউ মাচ অ্যায় অ্যাম ডিলিং উইথ। তোমার সাথে এই নিয়ে পরে কথা হবে।“ কথাটা বলেই অরুনাংশু ফোনটা কেটে দিল।
তারপর লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। নিজের ভিতরে সে কীসের যেন একটা তীব্র হাহাকার ধ্বনি সে শুনতে পেল। তার কানের কাছে কে যেন বারবার বলছে “নীলিমাকে তুই ভালবাসিস। ওটা বাস্তব হতে আর বেশি দেরি নেই।“
অরুনাংশু মনটা অবশ হয়ে পড়েছে সে নিজেকে ভালোভাবে সামলে রাখতে পারছে না বারবার সেই স্বপ্নে নীলিমার সাথে তার অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলো মনে পড়ছে। বারবার মনে হচ্ছে নীলিমা কেবল তার কিন্তু আবার সেই মর্মান্তিক এক্সিডেন্টের কথা মনে পড়তেই তার সারা শরীর যেন অবশ হয়ে পড়ছে। এইরকম একটা কঠিন মুহূর্তে আচমকা আবার তার ফোনটা বাজল ফোনটা তুলে সে দ্রুত গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল। তার গাড়ি গিয়ে থামল জেসিকাদের বাড়ির সামনে। চারিদিকে লোকজনের কোলাহল গেটের মুখে একটা পুলিশের গাড়ি সেইসাথে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে আছে। সে গাড়ি থেকে নেমেই দেখতে পেল একটা সাদা কাপড়ে মোড়া মৃতদেহ নিয়ে পুলিশের লোক অ্যাম্বুলেন্সে তুলছে। মিস্টার বিশ্বাস এবং অনির্বাণ দুজনেই দাঁড়িয়ে আছেন সেইসাথে আরও অফিসের অনেকে সেখানে উপস্থিত। অরুনাংশু তাদের দিকে এগিয়ে যেতেই মিস্টার বিশ্বাস বললেন, “সুইসাইড।“ কথাটা বলেই তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।
মিস্টার অনির্বাণ বললেন, “জেসিকার মত একটা জলি মেয়ে কীভাবে যে সুইসাইড করল আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না।“
অরুনাংশুর সারা শরীর কেমন যেন গুলিয়ে উঠল সে আর নিজেকে সামলে রাখতে না পেরে তীব্র কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল বারবার তার চোখের সামনে ভেসে উঠল সেই প্রানোজ্বল সিল্কের গ্রাউন পরা জলি জেসিকার মুখটা। সেই কালো সাদা ড্রেসে লাল লিপস্টিক মাখা তার মুখের হাসিটা তার কানের অন্দরে ভেসে এলো, “স্যার কেন!!? কেন!!?”
মিস্টার অনির্বাণের দিকে তাকিয়ে তার মনটা বলল, “এবার তোমার পালা।“
সে দ্রুত ছুটে নিজের গাড়িতে উঠে বেড়িয়ে পড়ল। গাড়ি চালাতে চালাতে তার বারবার মনে হল জেসিকার মৃত্যুর জন্য সে দায়ী, সে তাকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে বলেই সে আজকে এইভাবে… না!! না!! না!! সে বারবার শুনতে পাচ্ছে “তুই শুধু তোর জন্য মেয়েটা আজ চলে গেল।“ তারপর কে যেন তাকে বলল, “এবার মিস্টার অনির্বাণ এবং ইন্দ্রর পালা।“ কথাটা শেষ হওয়ার পরেই যেন লম্বা একটা অট্টহাসির শব্দ সে শুনতে পেল, ক্রমে তার চোখের সামনে সব কেমন যেন ঘোলাটে হয়ে এলো। সেই হাসি যেন তার জীবনটাকে ক্রমে গ্রাস করে নিচ্ছে। সারা শরীর জুড়ে যেন তার তীব্র একটা কম্পন শুরু হয়েছে, চোখে মুখে ঘামের ছিটে, বারবার তার চোখে জেসিকার মৃত সাদা চাদরে ঢাকা মুখটা মনে পড়ছে তারপর সে দেখতে পেল তার সেই স্বপ্নের রক্তাত্ব পিচের রাস্তাটা। তার চোখের সামনে বারে বারে ভেসে উঠল বছর পাঁচেকের ইন্দ্রর রক্তাত্ব দেহ, অনির্বাণের অসার দুটো চোখ, পিচের রাস্তায় রক্তের তীব্র স্রোত এবং সাদা চাদরে ঢাকা জেসিকার নিথর শরীরটা। এইসব ভাবতে ভেবতেই সে গাড়ির কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলল গাড়ি দ্রুতগতিতে এগিয়ে গেল সামনের গার্ডওয়ালের দিকে তারপর সজোরে সেখানে ধাক্কা মারল। গাড়ির সামনের দিকটা দুমড়ে মুচড়ে গেল জানলার কাঁচ ভেঙ্গে রাস্তার মাঝে হীরের টুকরোর মত ছড়িয়ে পড়ল। সামনের ড্রাইভিং সিটে রক্তাত্ব অরুনাংশু তার জীবনের শেষ নিঃশ্বাসের অপেক্ষায় প্রতীক্ষারত। তার কানে ভেসে এলো “দুটো নিস্পাপ প্রান বেঁচে গেল। বেঁচে গেল, বেঁচে গেল…”
তারপর সে শুনতে পেল জেসিকার কণ্ঠস্বর “স্যার এইতো আপনি এসেছেন আসুন আমরা হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাই নতুন পৃথিবীতে।“ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে অরুনাংশুর অসার চোখদুটো ভাঙ্গা কাঁচের জানলার বাইরের দিকে তাকিয়ে রইল সেই চোখে যেন কীসের তীব্র অপেক্ষা তবে সেটা জেসিকা না নীলিমা কার জন্য সেটা কোনোদিন জানা যায়নি।
বিষয় মৌলিকত্ব | |
ভাষা সাবলীলতা | |
কৌতূহল উদ্দীপক ঘটনা প্রবাহ | |
শক্তিশালী চরিত্র চিত্রণ | |
অডিও/ভিডিও রূপান্তর যোগ্য | |
Average
|
|
![]() |