ক্রসফায়ার | পলক ফেলা নিষেধ 2023 | অভীক দাস | Bengali Detective Story | 9F10
0 (0)

।। ১ ।।

টেবিলের ওপর খবরের কাগজটা প্রায় ছুঁড়ে দিয়ে মাথার ওপর ঘড়িটা দেখেলো কিরাতি। প্রায় পৌনে দশটা! ব্রেকফাস্ট সেরে একজনের প্রতীক্ষায় বসে আছে। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর কিরাতি সেন পুরানো পেশায় ফিরেছে।প্রাইভেট ডিটেকটিভ হলেও নিজের ভিজিটিং কার্ডে লেখে “সত্য সন্ধাতা”। দীর্ঘ দুই বছর আইনি লড়াইয়ের শেষে সে মুক্তি পেয়েছে বিবাহ বন্ধনের মায়াজাল থেকে।সমাজের চোখে ডিভোর্সী হলেও, নিজেকে আগের চেয়ে আরো বেশী প্রতিষ্ঠিত করতে তৎপর সে। তার প্রাক্তন স্বামীর কুকীর্তি সে নিজেই ফাঁস করেছে। সেই গল্প আরেকদিন বলা যাবে।বছর পাঁচের আগে সিরিয়াল কিলিংয়ের কেস সলভ্ করে রীতিমতন প্রচারের আলোয় এসেছিল কিরাতি। গত তিনদিন ধরে খবরের কাগজ,টি ভি আর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটাই খবর কলকাতার মহানাগরিকের ওপর আততায়ীর হামলা!ন্যাশানাল লাইব্রেরীর নতুন ভবনের অনুষ্ঠানের সময় তার দিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে সেটি ওনার সামনে দাড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তির গায়ে লাগে! মহানাগরিক ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। সেই থেকেই স্বাভাবিকভাবে শহরজুড়ে একটা হুলুস্থুল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে! রুলিং পার্টির বনধ্ ডাকা থেকে শুরু করে জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল,অবরোধ,রাজনৈতিক চাপান উতোর ইত্যাদি হয়ে চলেছে। সরকার থেকে একটা তদন্ত কমিটি করা হয় যার প্রধান করা হয় কলকাতার যুগ্ম কমিশনার দেবব্রত পালকে। তিনি কিরাতির বাবার বন্ধু,সম্পর্কে তার পালকাকু। যিনি একসময় কিরাতির বাবার সাথে একই থানাতে পোস্টেড ছিলেন।একটা জয়েন্ট অপারেশনে দুর্ভাগ্যবশতঃ কিরাতির বাবা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পালকাকু পরবর্তীকালে অনেক সাহায্য করেছেন কিরাতি ও তার পরিবারকে ঘুরে দাড়াতে। কলিং বেলটা বেজে উঠলো। ঘড়িতে ঠিক দশটা পাঁচ!

।। ২ ।।

সকালবেলা ঘুমটা ভেঙে গেলো ফোনের আওয়াজে! পালকাকুর ফোন! ফোনটা তোলার পর বললেন,”কড়ি মা ঘুমাচ্ছিস?!?” ডাকটা শুনে খুব খুশি হলো কিরাতি! তার বাবাও তাকে ঠিক এই নামেই ডাকতো। কিছু কথা হবার পর পালকাকু আরো বললেন, “তোকে একটা ব্যাপারে একটু সাহায্য করতে হবে রে!” তুই নিশ্চই জানিস মহানাগরিকের ওপর হামলার কেসটা আমার অধীনে এসেছে,তদন্তে নেমে আততায়ীর খোঁজ করাটা ছিল আমাদের প্রাথমিক কাজ,সেটাই চলছে। কিন্তু,আমি ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ খবর করতে গিয়ে দেখি একটা ব্যাপার আমাদের সকলের চোখ এড়িয়ে গেছে! হামলার সময় ক্রসফায়ারে যিনি মারা যান সেই ভদ্রলোকের কথা আমারা প্রায় কেউই ভেবে দেখিনি। ডেটাবেস থেকে একটা ইনফরমেশন পেলাম যেদিন ঘটনাটা ঘটে তার ঠিক তিনদিন আগের! ভদ্রলোকের ফাইলটি এনে ঘাটাঘাটি করে দেখি তিনি আলিপুর থানাতে একটি ডাইরি করেছেন,সম্ভবত লাইব্রেরির মধ্যে চুরি বা কারচুপি সংক্রান্ত কিছু একটা ব্যাপারে! ওই কেসটা আমার পক্ষে এখন দেখা সম্ভব নয় বুঝলি।তাছাড়া ক্রসফায়ারের ধারা দিয়ে কেসটাও বন্ধ হয়ে গেছে। ভদ্রলোকের মেয়ে আমার কাছে গতকাল এসেছিল ওর বাবার ব্যাপারে কিছু বলতে আর কেসটা রিওপেন করার ব্যাপারে,আমি ওকে তোর কাছে পাঠাচ্ছি।ওর সাথে কথা বলে, ব্যাপারটা খতিয়ে দেখে আমায় রিপোর্ট কর আর যা সাহায্য লাগবে বলিস।”

।।  ৩ ।।

দরজাটা খুলে কিরাতি দেখল একটা বছর একুশ-বাইশের মেয়ে দাড়িয়ে! খুবই অগোছালো ও বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে তাকে। চোখ মুখ প্রায় বসে গেছে, সদ্য পিতৃহারা একটি মেয়ের যে কি অবস্থা হয় সেটা ভালোই বোঝে কিরাতি ! সেও একসময় এই অবস্থা কাটিয়ে এসেছে। নমস্কার বিনিময় সেরে সোফায় এসে আগন্তুক মেয়েটি বলেন,”আমি পিয়ালী মিত্র,লাইব্রেরিয়ান ভাস্কর মিত্রের মেয়ে। গত ৬ই সেপ্টেম্বর আমার বাবা মহানাগরিককে উত্তরীয় পড়ানোর সময় গুলিবিদ্ধ হন।এটা একটা দুর্ঘটনা মনে হলেও,বাবা কিন্তু এই ঘটনার চার-পাঁচ দিন আগে থেকে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন! কি হয়েছে আমাদের ঠিক খুলে বলছিলেন না! বারবার শুধু বলছিলেন এরকম ভয়ঙ্কর অপরাধ নিখুঁত ভাবে হতে পারে তা কোনোদিন তিনি ভাবতেই পারেন নি। আমি আর মা হাজারবার জিজ্ঞাসা করে সত্বেও কিছুই বলতে চান নি বাবা। ওই ঘটনার ঠিক দিন তিনেক আগে আলিপুর থানা থেকে ফোন আসে,উনি নাকি তার ওয়ালেট থানায় ফেলে এসেছেন! ওই ওয়ালেট খুলে তারা আমাদের ল্যান্ডলাইন নাম্বার পান।স্বাভাবিকভাবে ব্যাপারটা জানার পরে আমরা ঘাবড়ে যাই,কি হলো! থানায় বাবা কি করছিল সেটা ভেবেই প্রবল দুশ্চিন্তা হতে থাকে আমাদের! বাবা আসতেই আমি জিজ্ঞাসা করতে বেশ গম্ভীরভাবে বলেন, “এই অপরাধের শাস্তি হওয়া দরকার!”  তিনি আলিপুর থানাতে নাকি ডাইরি করে এসেছেন! কেন কি ব্যাপারে,কার বিরুদ্ধে বারবার জিজ্ঞাসা করার পরে কিছুই বলতে চাইলেন না!” কথাগুলো বলার পরে পিয়ালী একটি বই সমেত এ ফোর সাইজের বইয়ের খাম বার করেন! বললেন,”এই বইটা বাবা শেষ লাইব্রেরি থেকে এনেছিলেন। আগেও অনেক বই বাড়ি এনেছেন,পড়েছেন কিন্তু,এটা আনার পর থেকেই বাবা অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন।আমি আলিপুর থানাতে গেছিলাম,কিন্তু ওরা মহানাগরিকের হামলাকারীকে খোঁজা নিয়ে অফিসার এতটাই ব্যস্ত ছিল যে আমায় কোনোরকম সাহায্য করলেন না এবং সময়ও দিলেন না।পরে আমাদের ওখানে স্থানীয় কাউন্সিলর তার পার্সোনাল সোর্স থেকে জয়েন্ট কমিশনারের সাথে দেখা করিয়ে দেন, ওনাকে সব বলাতে উনি আপনার কাছে আসতে বলেন!” বইয়ের খামটা কিরাতির হাতে দেবার পরেই কেঁদে ফেলে পিয়ালী,বলে, “সবাই শুধু কেবল আর্থিক দিক থেকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে! কিন্তু,আমি চাই যদি কিছু সত্যি থাকে সেটা বাইরে বেরিয়ে আসুক।”  কিরাতি জিজ্ঞাসা করে এই বইয়ের খামের কথা আর কাউকে বলেছে কি না? পিয়ালী জানায় সেই সুযোগ সে পায় নি।কিরাতি,পিয়ালীর জন্য মিষ্টি আর কিছু স্নাক্স অনিয়ে রেখেছিল,কিন্তু,পিয়ালী কিছু না খেয়েই নমস্কার জানিয়ে সেখান থেকে চলে গেল! পিয়ালী চলে যাবার পরে দরজা বন্ধ করে এসে কিরাতি খামটা খুলে দেখে একটা বেশ পুরানো বই।বইটি খুলে কিছু পাতা ওল্টানোর পরে সে জানতে পারে বইটি প্রায় ১৩৮ বছরের পুরনো,১৮৮৩ সালের, উইলিয়াম ওয়েলসের লেখা “দি মিডল কিংডম”। খামটির মধ্যে একটি উঠে যাওয়া হল বিশেষ লোগো লক্ষ্য করে কিরাতি। মোবাইলটি হাতে নিয়ে ইন্টারনেটে বইটির ব্যাপারে আরও কিছু বিস্তারিত তথ্য খুঁজে দেখতে থাকে কিরাতি!

                    ।। ৪ ।।

দীর্ঘ তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর অবশেষে ডাক এলো মহানাগরিকের অফিস রুম থেকে! সেইদিনের ঘটনার পর আজ প্রথমবার বাইরের লোকের সাথে পর দেখা করছেন মহানগরিক! বিস্তর সিকিউরিটি চেকিং এর পরে মহানাগরিকের সেক্রেটারী আসেন,পরিচয় হবার পরে জানা গেল ভদ্রলোকের নাম রুদ্রিক দেব। কিরাতি খেয়াল করলো ভদ্রলোক প্রয়োজনের থেকে যেন অনেক কিছু বেশী জিজ্ঞাসা করছেন এবং কিরাতির দেওয়া সব তথ্য নোট করে তারপর তিনি অফিসের ভেতরে নিয়ে গেলেন।হামলার ঘটনার পরে যে সিকিউরিটি কড়া হবে সেটা খুবই স্বাভাবিক! রুদ্রিক বাবু লোকটি একটু কড়া ধাঁচের হলেও ব্যবহার বেশ ভালো হলেও মিষ্টি কথার মাঝে কাজের কথা বেশ গুছিয়ে বলে নেন,ভদ্রলোক ভেতরে মহানাগরিকের সাথে আলাপ করিয়ে দিলেন। যদিও পালকাকু আগেই ওনাকে ফোন করে সব জানিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে রেখেছেন। অফিসে ঢুকে হাসি মুখে নমস্কার বিনিময় করলো কিরাতি! কিছুক্ষণ কথাবার্তা হবার পরে কিরাতি জানতে পারলো মহানগরিক কিরাতির বাবাকেও ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন! আরো কিছু প্রশ্ন উত্তর ও কথার শেষে উনি একটাই কথা বলেন, “রাজনীতিতে আমাদের শত্রুর অভাব নেই,ঘরে বাইরে কে বন্ধু কে শত্রু মুখ আর মুখোশের আড়ালে থাকা মানুষদের বোঝা মুশকিল। তবে একটাই  ব্যাপার আমাদের রাজ্যে সামনে কোন নির্বাচন নেই, দলে বা বিরোধীদের সাথে বা পরিচিত কারোর সাথে সম্প্রতি কোনরকম কিছু নিয়ে ঝামেলাও হয় নি।আমার ওপর হামলার নেপথ্যের কারণ আমিও সঠিক বুঝলাম না!হয়তো মনে ভয় ঢোকানোর চেষ্টা! কিংবা এটা এক ধরনের ওয়ার্নিং! ক্ষমতা আর চেয়ারের প্রতি চোরা লোভ অনেকেরই থাকতে পারে এবং সেটা বাইরে থেকে বোঝাও মুশকিল!  আপনিও যদি এই কেসটা সমাধান করতে পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত করেন তাহলে তো আরোই ভালো হয়,আর আমার কারণে দুর্ভাগ্যবশতঃ যিনি চলে গেলেন ওনার পরিবার যাতে কোনোরকম কোনো অসুবিধাতে না পড়ে সেটাও আমি দেখবো।” ফেরার সময় অফিস ঘরে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখতে দেখতে কিরাতি লক্ষ্য করে ওনার অফিস ঘরে তিনটি দেওয়াল জুড়েই কাঁচের আলমারিতে সাজানো অসংখ্য বই। একটি বইয়ের তাকের নীচ দিকে কাচের ভেতর থেকে উঁকি মারছে খুব পুরনো কিছু সংগ্রহ! তার মধ্যে একটি বই দেখে আচমকা হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় কিরাতির! 

                      ।। ৫ ।।

সন্ধ্যেবেলা ঘরে ফিরে পিয়ালীর দিয়ে যাওয়া বইটি খুলে দেখতে থাকে কিরাতি।একশো বছরের ওপর পুরনো বই,তার কিছু পাতা ছেঁড়া হলেও এটিকে বেশ যত্ন করে সংরক্ষিত করা হয়েছে বোঝাই যাচ্ছে।বইটি ম্যাগনিফাইনিং গ্লাস দিয়ে আদ্যপ্রান্ত দেখে কিছু সেরকম খুঁজে পেল না কিরাতি। তাহলে কি পিয়ালী ভুল ভাবছে? না তার বাবার মৃত্যুটা পুরোটাই একটা দুর্ঘটনা? পিছন থেকে ঘরে ঢুকে কিরাতির মা আচমকা ডেকে ওঠায় ঘুরতে গিয়ে কিরাতির হাত থেকে বইটি মেঝেতে পরে যায়। খোলা অবস্থায় উল্টোদিকে পড়তে বইয়ের যে অংশটা বাঁধাই করা সেইদিকটা খানিকটা আলগা আলগা হয়ে যায়! বইটা তুলতে গিয়ে একটা আশ্চর্য জিনিস  চোখে পড়লো কিরাতির! মাঝ বরাবর বইটি বাঁধাই অংশটি আলগা হয়ে ভেতরের সুতোর অংশ দেখা গেল। কিন্তু,এ কি! প্রায় একশো বছরের বেশি পুরানো বইতে যে দুটো সেলাই করা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে সেটা বড়জোর ৫-৬ মাস পুরানো হবে! কপাল থেকে বিন্দু বিন্দু ঘাম ঝরতে থাকে কিরাতির! বইয়ের পাতাগুলো হুবহু নকল করে যে সদ্য বাঁধাই করা হয়েছে,সেই নিয়ে কোনো সন্দেহ রইলো না আর! ভালো করে আরেকবার বইটি দেখতে দেখতে নাকের কাছে নিয়ে কিরাতি খুব হাল্কা একটা চা কফি মেশানো গন্ধ পেলো!কিরাতির পুরো ব্যাপারটা কিছুটা হলেও পরিষ্কার হলো, ভাস্করবাবু নিশ্চই এই নকল বইটি চিনতে পেরেছিলেন।একজন দক্ষ লাইব্রেরিয়ানের পক্ষে আসল নকল বইয়ের তফাৎ বোঝাটা আদতে কোন ব্যাপারই না! এরকম অ্যান্টিক জিনিসের চুরি যাওয়া তার ওপর সেটাকে নকল করে আসলটা চুরি করা একজন দেশ বিদ্রোহী অপরাধ সমঃ! আর এতটুকু সময় নষ্ট না করে পালকাকুকে ফোন করে বইটিকে ফরেন্সিকে পাঠানোর ব্যবস্থা করে কিরাতি।

                     ।। ৬ ।।

ন্যাশানাল লাইব্রেরীর মাস কয়েকের পুরানো রেজিস্ট্রারটা নতুন লাইব্রেরিয়ানকে চাইতে উনি পুরো বছরের লিস্টটা ডেটাবেস থেকে নিয়ে কম্পিউটার থেকে প্রিন্ট আউট করে দিলেন। লাইব্রেরীর ভেতরে ও বাইরে সমস্ত সিসিটিভির ফুটেজ দুর্ঘটনার দিনের ও তার সাতদিন আগের ইতিমধ্যেই ফোনে সেভ করে নিয়েছে কিরাতি। লাইব্রেরীর মধ্যেই একটি টেবিলে বসে অনেকক্ষণ ধরে মেম্বারদের নাম ও তাদের নেওয়া বইগুলির এন্ট্রি লিস্ট থেকে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে। প্রায় পঞ্চাশ পাতার রেজিস্ট্রার প্রিন্ট আউটের কাগজগুলো থেকে মেম্বারদের লিস্টে একটি চেনা নাম দেখে চোখ আটকে যায় কিরাতির! সেই নামের পাশে অদ্ভুতভাবে শেষ তিন মাস কোনো বই ইস্যু করা নেই! এরপর মোবাইলটা বার করে লাইব্রেরীর ফুটেজগুলো মন দিয়ে দেখতে থাকে কিরাতি।প্রায় কুড়ি মিনিট দেখার পরে একটি ফুটেজে কিছু দেখল কিরাতী,তারপর একই সময়ের কিছুদিনের আগের ফুটেজ দেখতে লাগলো। দুইদিনের দুটি ফুটেজে একটি চেনা মুখ দেখা গেলো হল নম্বর টু তে, যেখানে শতাব্দী প্রাচীন পুরানো বইগুলো সংরক্ষিত থাকে।একটি আলমারি থেকে দেখা গেলো চেনা লোকটির বই বার করার ফুটেজ ও তার চারদিন পর আরেকটি ফুটেজে বইটি ঢুকিয়ে রেখে দেবার।তারপর শেষ একটি ফুটেজে শুধু বই বার করার আছে,সেটিকে ফেরতের কোনো ফুটেজ নেই।কারণ লাইব্রেরীর ওই অংশটিতে রেনোভেটের কাজ শুরু হয়েছে,তাই সিসিটিভি সহ সবকিছু পর্দার আড়ালে ঢাকা পড়ে।

                      ।। ৭ ।।

রাত প্রায় এগারোটা হয়ে গেলো বাড়ি ফিরতে কিরাতির! পুজো আসছে সামনে তাই রাস্তাঘাটে এর মধ্যে জ্যাম শুরু হয়ে গেছে! উত্তর কলকাতার ডালিমতলা লেনে কিরাতির পৈত্রিক বাড়ি,মেন রোড থেকে একটা সরু গলি দিয়ে প্রায় তিন মিনিট হেঁটে গেলে তার বাড়ির গেট। গলিটির দুই দিকে উচুঁ প্রাচীর দেওয়া। কিন্তু, আজ অদ্ভুতভাবে যেন গলিটার মুখ থেকেই অন্ধকার হয়ে আছে! কিন্তু,গতকালও সবকটি স্ট্রিট লাইট জ্বলছিল বেশ মনে আছে করাতির। গলির মুখ থেকে কিছুটা ঢুকতে কিরাতি অনুভব করলো পিছনে কিছু একটা এগিয়ে আসছে! কিরাতি না বোঝার ভান করে চোয়াল ও হাত পা শক্ত করে সামনের দিকে এগোতে থাকে। দুটো কলো চাদর মুড়ি দেওয়া ছায়া মূর্তি ক্রমশঃ কিরাতির পিছনে এগিয়ে আসতে থাকে, একটির হাতে লোহার লম্বা রড অন্ধকারেও বেশ চকচক করছে! গলির মাঝ বরাবার আরেকটা বাঁক আসতেই আচমকা পুরো একশো আশি ডিগ্রী ঘুরে কিরাতির পায়ের ক্যাম্বিসের জুতোর মোক্ষম একটা আঘাত লাগে প্রথম ছায়ামূর্তির মুখে।মাথা ঘুরে পড়ে যায় ছায়ামূর্তিটি! তার হাতের লোহার রডটি নীচে পড়ার আগেই কিরাতি বাম হাতে সেটি লুফে নেয়।তারপর সেটি নিচু করে দুই হাতে শক্ত করে ধরে সপাটে দ্বিতীয় ছায়ামূর্তির পায়ে বিদ্যুৎ গতিতে চালিয়ে দিল! প্রবল চিৎকারে পড়ে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে বসে পড়ে দ্বিতীয় ছায়ামূর্তিটিও! আচমকা আক্রমণে দুইজনে থিতু হবার আগেই তাদের মাথার দিকে পিছনে লোহার নল স্পর্শ করে। মাথায় পিস্তল ঠেকানো অবস্থায় তারা দেখে সামনে থেকে কিরাতি মোবাইলের টর্চ জ্বেলে দ্বিতীয় ছায়ামূর্তির মুখের ওপর ফেলে ক্রুর হাসিমুখে বলে উঠলো, “আপনার খেলা শেষ মাননীয় সহকারী ‘গ্রন্থতস্কর’ মহাশয় ওরফে রুদ্রিক দেব !!!”

                       ।। ৮ ।।

টেবিল থেকে চায়ের কাপটা তুলে নিল পালকাকু! কিরাতির বাড়িতে তার বসার ঘরে পিয়ালী,আলিপুর ও মানিকতলা থানার দুই অফিসার এবং তার সাথে ভিডিও কলে মহানাগরিক মহাশয় ভার্চুয়ালি উপস্থিত আছেন। কিরাতি বলতে শুরু করে,”প্রাথমিকভাবে একটা তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় যে মহানাগরিকের ওপর গুলি চলে,তিনি ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান এবং ভাস্করবাবু সামনে থাকার জন্য দুর্ভাগ্যবশতঃ তার পিঠে গুলি লেগে তিনি মারা যান। যথারীতি ঘটনার তদন্ত শুরু হয়, কিন্তু,শুরু থেকেই মহানাগরিকের দিকটাই পুলিশ বেশি ফোকাস করে ইনভেস্টিগেট এগিয়ে নিয়ে যায়।ভাস্করবাবুর দিকটা সেরকম ভাবে কেউ নজরই দেয় নি,পরে স্বাভাবিকভাবে ক্রসফায়ারের ধারা দিয়ে ওইদিকে তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়।আসলে পুরো ঘটানায় লাইব্রেরিয়ান ভাস্কর মিত্রকেই সরিয়ে দেওয়াই ছিল খুনীর আসল উদ্দেশ্য। যিনি মাস্টার প্ল্যানটা করেছিলেন তিনি জানতেন পুরো ব্যাপারটাই একটা রাজনৈতিক মোড় নেবে,লোকজন উত্তেজিত হবে,সবাই মহানাগরিকে নিয়েই মেতে থাকবে,ভাস্কর মিত্রের কথা কারোর মাথাতেই আসবে না।এবারে আসা যাক আসল অপরাধীর দিকে,মহানাগরিক বাবুর সেক্রেটারি রুদ্রিক দেব একটি আন্তর্জাতিক চক্রের সাথে যুক্ত! যাদের কাজ হলো দেশের নানা প্রান্তের পুরানো অ্যান্টিক বই সংগ্রহ করে জড়ো করে লন্ডনের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় একটি গ্রুপের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া,যাদের কাজ হলো ওই দেশের একটি বিশেষ লাইব্রেরির বইয়ের সংগ্রহ বাড়ানো সেটা যে কোন পদ্ধতিতেই হোক না কেন! এর বিনিময়ে তারা বিপুল পরিমাণ অর্থও খরচ করেন।আমি ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখি কলকাতার ন্যাশানাল লাইব্রেরিতে ব্রিটিশ পিরিয়ডের বেশ কিছু বই “দ্য মিডিল কিংডমের” মতন সংরক্ষিত আছে। ১৮৮৩ সালের মোট ১৫ টি বই এখানে আছে,পুরো পৃথিবীতে সম্ভবত একটাই কপি আছে এগুলোর। রুদ্রিক দেব লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন, আমি যদি খুব ভুল না করি ওখানে পড়াশোনা করার সময় থেকেই উনি এই চক্রের সাথে জড়িয়ে পরেন।তারপর ওখানে কিছু বছর কাজ করে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন। অনেক বছরের কাজের এক্সপেরিয়েন্স,পড়াশোনা আর অক্সফোর্ডের ডিগ্রীর জোরে উনি মহানাগরিকের সেক্রেটারির চাকরি খুব সহজেই পেয়ে  যান! তারপর নিজে ন্যাশানাল লাইব্রেরির মেম্বারশিপ করান। লাইব্রেরিতে তিনি ভাস্কর মিত্রের সাথে বন্ধুত্ব করেন।তার মিষ্টি ব্যাবহার ও বুদ্ধিদীপ্ত কথায় সহজেই তিনি ভাস্করবাবুকে হাত করেন।ছোটখাটো উপকারের বিনিময়ে তিনিও রুদ্রিকবাবুকে পুরো ছাড় দিয়ে দেন,এমনকি উনি কি বই নিয়ে যাচ্ছেন সেটারও কোন এন্ট্রি শেষ কয়েক মাস করেন নি ভাস্করবাবু!এখানেই ভুল করেন উনি। এরপর থেকেই অ্যান্টিক বইয়ের হল নম্বর টুতে অবাধে যাতায়াত বাড়ে রুদ্রিক দেবের! না না সময় পড়তে নিয়ে যাবার নাম করে অনেক সাধারন বইয়ের সাথে ঐ ১৮৮৩ সালের বইটির মতন আরো কিছু বইয়ের সেট থেকে একটা একটা করে বই বাড়ি নিয়ে যেতেন ও কিছুদিন পরে ঠিকঠাক ভাবে যথাস্থানে রেখেও দিতেন।প্রভাবশালী বলে অন্য কর্মচারী বা সিকিউরিটি গার্ড কেউই ব্যাপারটা গুরুত্ব দেয়নি। এইভাবে প্রায় চোদ্দটি বই উনি নিয়ে গিয়ে নিখুঁত ভাবে তার ডুপ্লিকেট কপি বানিয়ে আবার লাইব্রেরিতে যথাস্থানে রেখে দিতেন।এমনিতেই এখন বই পাঠকের সংখ্যা কলকাতা খুবই কম তাই ব্যাপারটি অন্য কারোর চোখে আসার কোন সম্ভাবনাই তৈরী হয় নি।”

                       ।। ৯ ।।

 ফরেন্সিক রিপোর্টে প্রমাণ হয় কিরাতির দেওয়া বইটি নকল।কাকতালীয় ভাবে কিছুদিনে আগেই কলকাতা পুলিশের একটা ডিপার্টমেন্ট খবর পায় কিছু এক্সপার্ট ছেলে গ্রুপ করে তিলজলা বস্তির ভেতরে একটা প্রিন্টিং প্রেসে গত দুই বছর ধরে নকল দলিল ,চিঠি ,নানা পুঁথি,পাসপোর্ট জাল করার কাজ করছে। পুলিশ রেড করে গ্রেপ্তার করেছে পুরো দলটাকেই। এরা বইয়ের বা দলিলের পুরানো পাতা,লেটার ব্লক নকল করতে সিদ্ধহস্ত ! মুলতঃ পাতাগুলো লাল করার জন্য কফি,কখনো চায়ের লিকারে এরা ডুবিয়ে রাখাতো।তারপর নানা কেমিক্যাল ব্যবহার করে বইয়ের নতুন পাতাকে পুরানো পাতার মতন লালচে করে দিত।রুদ্রিক দেব এদেরকেই বই জাল করার কন্ট্রাক্ট দেয়। লাইব্রেরি থেকে আনা বইগুলো তার ড্রাইভারের হাত দিয়ে পৌঁছে দিত প্রেসে।সবই ঠিক চলছিল,কিন্তু এই শেষ বইটি নকল কপি করার ঠিক আগেই প্রিন্টিং প্রেসে রেড হয়,প্রেসটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ,ফলে শেষ বইটির ডুপ্লিকেট কপি করা সম্ভব হয় না। পরে বইটি রুদ্রিক অনেক খুঁজে অন্য একটি গ্রুপকে কন্ট্রাক্ট দেন। লোভ বড় বালাই,তাতে পা দিলে পাপ হবেই সেখান থেকে মৃত্যু! নতুন গ্রুপটার হাতের কাজ অতটা ভালো ছিল না! তার বাঁধাইয়ের সুতোটা নতুন ব্যবহার করে ফেলে ও সাথে চায়ের মৃদু গন্ধটাও পুরো ওড়াতে পারে নি।

।। ১০ ।।

ফরেন্সিকে লাইব্রেরির বাকি চোদ্দটি  বই টেস্ট করে দেখা যায় সবকটিই নকল।শেষ বইটি রুদ্রিক দেব সময়ে পাচার করতে পারে নি কারণ সেটার কপি বানাতে বেশ দেরি হয়ে গেছিল।এদিকে আসল বইটি তার লোকাবার দরকার পরে গেছিল,কারণ এই বইটি পাচার করার নতুন তারিখ সে ওখানকার গ্রুপ থেকে পায় নি। তাই খুব সহজভাবে সকলের চোখের সামনেই মহানাগরিকের অফিস ঘরে বইয়ের আলমারিতে রেখে দেয়,যেটা কিরাতির মহানগরিকের সাথে দেখা করতে গিয়ে চোখে পড়ে।আর নকল কপিটি লাইব্রেরীতে রেখে দিতে পারলেন না কারণ অ্যান্টিক হল ঘরটিতে কাজ হচ্ছিল সেটা বাইরে থেকে কাজ হবার পরে মিস্ত্রিরা বন্ধ করে দিয়ে যেত।তাই খাম সমেত বইটি শেষমেশ নিরুপায় হয়ে ভাস্কর বাবুকে দিয়ে বলেন কাজ শেষ হলে দুই নম্বর হল ঘরের আলমারিতে ঢুকিয়ে দিতে! ভাস্করবাবু খামটা লাইব্রেরিতে টেবিলের ড্রয়ারে রেখে আসতে ভরসা পেলেন না।যতই হোক একটা দামী অ্যান্টিক বই, তাই খাম সমেত বইটি বাড়ি নিয়ে যান।কোনো এক সময় খাম খুলে বইটি হাতে নিয়েই তিনি বুঝতে পেরে জন বইটি নকল।পরের দিন সকালেই লাইব্রেরিতে গিয়ে দু নম্বর হলে গিয়ে ওই মিস্ত্রির রেখে যাওয়া মালপত্র সরিয়ে বইটির তাকে গিয়ে দেখেই বুঝতে পারেন সবকটি বইই নকল, আসলের সাথে অদল বদল হয়ে গেছে।দীর্ঘ ২৫ বছর উনি চাকরি করছেন তাই ওনার চোখকে ফাঁকি দেওয়া মুশকিল! তিনি বোঝেন তার বোকামির জন্যই একটা বড় অপরাধ ঘটে গেছে এবং তিনি নিজেও পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করেছেন।তাই তিনি ভয় না পেয়ে ঘটনা জানার পরেই থানায় ডাইরি করেন।

                      ।। ১১ ।।

কিরাতি বলতে থাকে, “রুদ্রিক দেবের কাছে আলিপুর থানা থেকে ফোন আসে। একজন ইন্সপেক্টর কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে তার কাছে সময় চান, সে বিচক্ষণ লোক সহজেই ধরে ফেলেন নিশ্চয়ই বইয়ের ব্যাপারটা ভাস্কর মিত্র ধরে ফেলেছে।তিনি তাই নানা অছিলায় তিনদিন সময় চেয়ে নেন ইন্সপেক্টরের কাছে।তারপর রুদ্রিক মোক্ষম প্ল্যানটি করেন,ভাস্কর মিত্রকে বুঝতে দেয়নি যে সে সব জেনে গেছে।তড়িঘড়ি দুই দিনের মধ্যেই বহুদিন ধরে আটকে থাকা ন্যাশানাল লাইব্রেরির নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানটি তড়িঘড়ি আয়োজন করেন।অনুষ্ঠান সূচি এমন ভাবে সাজানো হয় যাতে ভাস্কর মিত্র প্রথমে উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেবেন মহানাগরিককে! অনুষ্ঠান চলাকালীন উত্তরীয় পরানোর সময় ভাড়াটে খুনীকে দিয়ে গুলি করানো হয়।গুলি চলার সাথে সাথেই ভিড় এদক ওদিক হয়ে ঠেলাঠেলি শুরু হয়, পুলিশ কিছু বুঝে ওঠার আগেই খুনী সম্ভবত ভিড়ে মিলিয়ে যায় আততায়ী। পরে আমি পাল কাকুর থেকে জানতে পারি ঘটনার দিন সাতেক পরে বিহারের এক জুয়ার ঠেক থেকে ধরা পড়ে। জেরায় গুলি করার ব্যাপারটা ও কার কথায় করেছে সেটাও স্বীকার করে!! পুরো ঘটনাটাতে রুদ্রিক দেবের ওপর আমার প্রথম সন্দেহ হয় মহানাগরিকের ঘরে বইটি দেখে! পরে আমি একদিন ফোন করাতে মহানাগরিক জানান তিনি বইয়ের ব্যাপার সেরকম কিছুই জানেন না। বইগুলি অফিস ডেকোরেশন করার জন্য রাখা রয়েছে! ওনার কাজের খুব চাপ পড়ার একদমই সময় পান না আর এও বলেন সব রকম বইয়ের ব্যাপার রুদ্রিক বাবুই দেখাশোনা করেন। আরেকটি ক্লু আমি পাই পিয়ালীর দেওয়া বইটির খামে পাওয়া প্রায় উঠে যাওয়া কলকাতা পুরসভার লোগো! এবং লাইব্রেরির সিসিটিভির ফুটেজে দেখতে পাই সেই চেনা মুখটি যেটি আর কারো নয়,সেটি রুদ্রিক দেবের।”

                     ।। ১২ ।।

সমস্ত ব্যাপার সামনে আসার পরেও পুরোটাই গোপন রাখতে হয়! খুনের এই ঘটনার সাথে মহানাগরিকের সেক্রেটারি জড়িত,এই ব্যাপারটা জানাজানি হলে রাজনীতির ভারসাম্য নষ্ট হবে।তাছাড়া মহানাগরিকও কিছুই জানতেন না এই ব্যাপারে! কিরাতির অনুরোধে পিয়ালির কলকাতা কর্পোরেশনে একটা চাকরি হয়।কিরাতির নিজের পিস্তল ও ডিটেকটিভ লাইসেন্স বেশ সহজেই রিনিউ হয়ে যায় এবং কলকাতা শহরে কোনরকম কোনো সমস্যা হলে সবরকম সাহায্য তিনি করবেন বলে আশ্বাসও দেন স্বয়ং মহানাগরিক।রুদ্রিক যে বইগুলো পাচার করেছে সেগুলো মুম্বাই থেকে উদ্ধার হয় আরো অনেক অ্যান্টিক জিনিসপত্রের সাথে।যেগুলো জলপথে পাচার করার জন্য একটা বন্দরের গুদামে জড়ো হয়েছিল।পালকাকু শেষে খুশী হয়ে বলেন,”কড়ি মা! দেবাশীষদা এখনও বেঁচে আছেন তোর মধ্যে দিয়ে। বাঘিনী আবার জঙ্গলে ফেরত এসেছে! তোর ‘সত্য সন্ধতা’ নামটা আরেকবার সার্থক হলো।”

                      ।। ১৩ ।।

সেক্রেটারি রুদ্রিক দেব ও আরেক ছায়ামূর্তি তার ড্রাইভার সাত দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। লোহার ডান্ডার ঘা খাবার পর তার হাঁটুর মালাইচাকি ভেঙে যায়।আসলে ওইদিন কিরাতি মানিকতলা থানা পুলিশ দিয়ে ইচ্ছে করেই তার বাড়ির আগের গলিটায় রাস্তার আলোগুলো নিভিয়ে রেখেছিল।সে বুঝতে পেরেছিল তার ওপর কলকাতাতে রাস্তাঘাটে পুজোর আগে হামলা করাটা চাপের।চারিদিকে কেনাকাটা করার ভীড় লেগেই থাকে! তাই অন্ধকার গলির ফাঁদটা সে আগেই পেতে রাখে, সেই ফাঁদে পা দিয়ে দিয়েছিল স্বয়ং রুদ্রিক মশাই! অসুরেরা কখনোই মা দুর্গার সাথে কোনোকালেই পেরে ওঠেনি,আজও পারে নি।আসলে ‘কিরাতি’ তো মা দুর্গারই আরেক নাম!!

-সমাপ্ত-

বিষয় মৌলিকত্ব
0
ভাষা সাবলীলতা
0
কৌতূহল উদ্দীপক ঘটনা প্রবাহ
0
শক্তিশালী চরিত্র চিত্রণ
0
অডিও/ভিডিও রূপান্তর যোগ্য
0
Average
 yasr-loader

About Post Author

9F10 DA

Click to rate this post!
[Total: 0 Average: 0]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post আলোর নিচে অন্ধকার | পলক ফেলা নিষেধ 2023 | সুদীপ মুখার্জী | Bengali Detective Story | 9F10
Next post হাতে খড়ি | পলক ফেলা নিষেধ 2023 | তারক কোলে | Bengali Detective Story | 9F10