হোটেলটা তিনটে তিনতলা বিল্ডিং-এর সমন্বয়। ফলে একপ্রান্তের সাথে অন্য প্রান্তের চাক্ষুষ প্রায় হয় না। কিন্তু এত পুলিশ যে, দৃষ্টি এড়াবার কোনো চান্স নেই।
কৌতূহল হয় ওর। পায়ে পায়ে নিজের অজান্তেই এগিয়ে যায়। সাথে সাথে কয়েকজন কনস্টেবল ছুটে এসে ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দ্যায়। কিন্তু হঠাৎই পুলিশের বিয়ের মধ্য থেকে ঐ কনস্টেবলদেরকে ধমকে সরিয়ে দিয়ে একজন অফিসার এগিয়ে এসে তাঁর ডানহাত এগিয়ে দ্যান।
— গুডমর্নিং মিঃ চ্যাটার্জ্জী! আপনি এখানে!
তোতন কিন্তু ইউনিফর্ম পরা ঐ অফিসারকে মনে করতে পারে না। চিনতে পারে না।
— আমাকে চিনলেন না! ঐ যে, রায়গঞ্জ। বিডিও সাহেব? পিডোফিলিয়া কেস।
তাও তোতনের মনে পড়ে না। অফিসার আবার মনে করালেন, ‘আমি দত্ত। পরিক্ষিৎ দত্ত।‘
তোতন এবার প্রশ্ন করে, ‘এখানে কী ব্যাপার? কী ঘটেছে!’
— বলবো, স্যার। বলবো। আপনি এখানে কি কোনো কেসে এসেছেন?
— না না। নিছক ফ্যামিলি ট্যুর।
— তাহলে আপনাকে ডিসটার্ব করা কি উচিত হবে?
তোতন অধৈর্য হয়, ‘আগে বলুন তো, কী হয়েছে। এ তো দেখছি, ডিআইজি. সাহেব অবধি এসেছেন! এনিথিং ভেরি সিরিয়াস?‘
— সিরিয়াস ব’লে সিরিয়াস! আইজি. সাহেব রিসেপশনে, মানে অফিস রুমে আছেন।
— বলেন কী! আইজি. পর্যন্ত! সর্বনাশ।
— আসলে… আমাদের এসপি. সাহেব, মানে রাকেশ যাদবজি মার্ডার্ড ব’লে সন্দেহ করা হচ্ছে।
তোতন আকাশ থেকে পড়ে, ‘এসপি.! মার্ডার্ড! এটা কি সত্যি? তাও আপনি “মনে হয়” বলছেন!’
এরমধ্যে ডিআইজি. সাহেব হেঁকে বসেন,
‘মিঃ দত্ত!’
বিষ্ণুপুর থানার আইসি. পরিক্ষিৎ দত্ত তোতনকে সাথে নিয়েই এগিয়ে যান। ডিআইজি’র সামনে তিনি দাঁড়িয়েই সশব্দে স্যাল্যুট ঠোকেন। ডিআইজি. সাহেব অপরিচিত তোতনকে দেখে ক্ষুব্ধ হন। বলেন,
‘ইনি কে?’
— স্যার, ইনি শতদল চ্যাটার্জ্জী। মানে… স্যার, … বিখ্যাত প্রাইভেট ডিটেক্টিভ।
— প্রাইভেট ডিটেক্টিভ! আপনার নামটা যেন কোথায় শুনেছি-শুনেছি লাগছে! কোথায় বলুন তো।
তোতন অম্লানবদনে উত্তর দ্যায়, ‘সে তো আমি বলতে পারবো না, স্যার। আমরা তো নিছক স্মলফ্রাই। আমাদের নাম… আপনাদের মতো…’
— দাঁড়ান দাঁড়ান। প্রাইভেট ডিটেক্টিভ, না? আচ্ছা, আপনার কোনো একজন আত্মীয় ডিপার্টমেন্টে আছেন, না?
— আজ্ঞে হ্যাঁ স্যার। মধুপর্ক চ্যাটার্জ্জী। এ্যাডিশনাল এসপি.।
— ইয়েস ইয়েস। আপনার তো ডিটেক্টিভ এজেন্সী আছে, তাই না? ইয়েস… নাউ আই সি। কাগজে আপনার কীর্তি-কলাপের রিপোর্ট পড়েছি, মনে পড়ছে। ইয়েস, শতদল চ্যাটার্জ্জী। আপনার বাড়ি কি এখানে নাকি? কলকাতায় না?
— ইয়েস স্যার। কলকাতা।
— তাহলে এখানে?
— সিম্পলি ফ্যামিলি ট্যুর, স্যার।
— আই সি! ফ্যামিলি ট্যুর? তা কোথায় উঠেছেন আপনি?