বিষাক্ত রক্তাহুতি | পলক ফেলা নিষেধ 2023 | পার্থিব ঘোষ | Bengali Thriller Story | 9F10
0 (0)


মা সারদা নাকি ১৮৬৩ থেকে ১৯১৫ সাল পর্যন্ত তাঁদের পুরোন বাড়ীতে (পুরাতন বাড়ি) বাস করতেন। পবিত্র মায়ের কাছ থেকে বহু আকাঙ্ক্ষী নাকি এই বাসস্থানটিতে ব্রহ্মচর্য, দীক্ষা ও সন্ন্যাস লাভ করেছিলেন। মা এখানে জগদ্ধাত্রী দেবী’র পূজোও শুরু করেছিলেন। এই উদ্দেশ্যে স্বামী সরদানন্দ ‘পুণ্য পুকুর’ এর পশ্চিম দিকে একটি জমি বেছে নিয়েছিলেন। ‘পুণ্য পুকুর’ মা সারদার নিয়মিত ব্যবহারের কারণে ধন্য হয়। নূতন-বাড়ি নামে পরিচিত একটি পৃথক বাড়ি ১৯১৫-১৬ সালে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক ভক্ত এবং পবিত্র মা’কে আরও ভাল থাকার ব্যবস্থা করার জন্য নির্মিত হয়েছিল।


এখানকার ‘আমোদর’ নামক নদীটি একটি নিছক প্রশাখা নদী। এই নদীতেই পবিত্র মা গোলাপ মা, যোগিন মা এবং অন্যান্য মহিলা ভক্তদের সাথে স্নানের জন্য আসতেন। মা এই আমোদরকে পবিত্র গঙ্গা ব’লে সম্বোধন করেছিলেন এবং এখানে চন্ডী পাঠ, গীতা পাঠ ও ধ্যানের ক্ষেত্রেও তীরে বেশিরভাগ সময় ব্যয় করতেন। বর্তমানে শ্রী শ্রী মা স্নান করতেন, এমন এক জায়গায় স্নানঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। মায়ের ঘাট হল মন্দিরের কাছে একটি বাস স্টপ এবং এটি ‘মায়ের দিঘি’র তীরে অবস্থিত যেখানে মা তার বাল্যকালে ঘাস কাটতে আসতেন।

এসব নিঃসন্দেহে ইতিহাস কিন্তু তোতনের কাছে খটকা। ওর মতে, এর মধ্যে আছে একটা প্রচার, মুসলমান ও খৃস্টানদের হাত থেকে ধর্ম রক্ষা করার একটা ফিকির, অন্ধত্ব আর ব্যবসা। এই একটা কারণে স্বয়ং বিবেকানন্দকেও ও অপছন্দ করে। মানুষটা কতকিছু করতে পারতেন জীবনে! লোকটার গাট্স ছিল। কিন্তু এই কামারপুকুরের চক্কোরে সব গোল্লায় গ্যালো।

কিন্তু নিজের মা’কে তো এসব বলা যাবে না। সেখানে চুপ ক’রে শুধু তাঁর ইচ্ছেপূরণ ক’রে যেতে হবে। আর মালিনী এসব দেখবে আর লুকিয়ে ফিকফিক ক’রে হাসবে।

এইসব ধম্মোকম্মো সেরে নির্বিঘ্নে ফিরেছে ওরা। কিন্তু পরের দিনটা নির্বিঘ্নে কাটলো না। বেড়ানো মাঠে মারা গ্যালো।

পরদিন সক্কালবেলা ইন্সপেক্টর পরিক্ষিৎ দত্ত এসে হাজির। কলিংবেল শুনে দরজা খুলেই তোতন দ্যাখে, পুলিশ।

— কী ব্যাপার, মিঃ দত্ত?

— আগে দরজা খুলুন।

দরজা খুলতেই তিনি ব’লে উঠেছেন, ‘রিসেপশনে চা বলুন। সারা রাত ঘুম হয়নি, মিঃ চ্যাটার্জ্জী।

তোতন ইন্টারকমে চা-এর অর্ডার দিয়ে সোফায় এসে বসেছে। এবার ঠাণ্ডা মাথায় প্রশ্ন করেছে, ‘কেসটা কী? আপনি এমন হাঁফাচ্ছেন কেন!’

— হাঁফাবো না! আপনাকে জরুরী তলব। খোদ আইজি. সাহেব। এই কেস ডিপার্টমেন্ট পারবে না। কেস সল্ভ আপনাকেই করতে হবে।

তোতনের অকুন্ঠ প্রশ্ন, ‘সে তো বুঝলাম। কিন্তু আমাকে এ্যাপয়েন্ট করছেনটা কে? আপনি নন নিশ্চয়ই?’

— না না, আমি কেন! খোদ আইজি. সাহেব।

— এবার একটু খুলে বলুন তো, কেসটা কী?

এর মধ্যে চা এসে গিয়েছে সকলের জন্য। মা আর মালিনী’র চা ঘরে পৌঁছে দিয়ে এসে তোতন জাঁকিয়ে বসলো। বলল, ‘এবার বলুন, বিষয়টা কী। একেবারে আপনাদের এসপি. সাহেব হোমিসাইড। এ তো নেক্সট টু ইম্পসিবল।‘

— সে তো বটেই। আরো অবাক বিষয়, এই হোটেলে তিনি কী করছিলেন, কেউ জানে না। এমনকি কীভাবে খুন, সেটাও আপাতঃ জানা যায়নি। আজ পিএম. রিপোর্ট আসবে।  

— হোটেলে উনি কি একাই চেকইন করেছিলেন?

— না না। উনি তো হোটেলে ওঠেননি। একজন বোর্ডারের ঘরে গিয়েছিলেন। তিনি আবার একজন মহিলা। রেজিস্ট্রি খাতা আর কম্পিউটার দেখে হোটেল তাই তো বলল। তবে মহিলা সম্ভবতঃ লোকাল নয়।

— সিসি. ক্যামেরা চেক করা হয়েছে?

— রাফলি হয়েছে।

— তার মানে কি, এসপি. সাহেবের নারীদোষ ছিল।

— সে তো আমাদের পক্ষে বলা মুশকিল। আমরা পুঁটি মৌরলা, চ্যাটার্জ্জী। তবে কানাঘুষো তেমনটাই বলে।

Pages ( 5 of 18 ): « এর আগে1 ... 34 5 67 ... 18তারপর »

About Post Author

9F10 DA

Click to rate this post!
[Total: 0 Average: 0]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post বিষ্ণুপুরে হত্যাকাণ্ড | পলক ফেলা নিষেধ 2023 | হিমাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায় | Bengali Murder Mystery Story | 9F10
Next post বেকারত্ব জীবন | পলক ফেলা নিষেধ 2023 | করিমুল ইসলাম | Bengali Social Story | 9F10