তোতন আক্ষেপ ক’রে বলে, ‘ভেবেছিলাম, নিশ্চিন্তে ফ্যামিলি ট্যুরটা এঞ্জয় করবো। তা হতে দিলেন না। কেন যে আমায় চিনতে গেলেন! আমি দিব্যি পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলাম। এখন ঘরের লোক অসন্তুষ্ট হবে। এবার বলুন, কোথায় যেতে হবে আমাকে?
— আমাদেরই থানায়। বড় সাহেবরা এখনও চ’লে যাননি। আপনার হাতে কেস সঁপে দিয়ে বেরিয়ে যাবেন। আমি থানায় ফিরে গিয়ে গাড়ি পাঠিয়ে দেবো। ততক্ষণে আপনি স্নান-খাওয়া সেরে নিন। আর ফ্যামিলিকে একটু ম্যানেজ করুন। চাইলে ওঁদের সঙ্গে আমি দু’জন কনস্টেবল দিয়ে দেবো। ওরা গোটা বিষ্ণুপুর সব ঘুরিয়ে দেখিয়ে দেবে। ঘন্টাখানেকের মধ্যে আসুন।
এই ব’লে হড়বড় ক’রে বেরিয়ে যান পরিক্ষিৎ দত্ত। তার থানার টাটা সুমোটা স্টার্ট দিয়ে কিছু দূর গিয়েই আবার ফিরে আসে। গাড়ি থেকে নেমে হড়বড় ক’রে এগিয়ে এসে আবার বলেন,
— পার্সোনালি বলছি। মাস সাতেক আগে আমাদেরই ডিএসপি. সাহেব প্রদ্যুৎ রায় নিজের কোয়াটার্সে পুলিশের উপস্থিতিতেই সুইসাইড করেন।
— বলেন কী! ডিএসপি.!
আর বলছি কী! এখানে ডিপার্টমেন্টে মড়ক লেগেছে। দিন পাঁচেক আগে আমাদের এক কনস্টেবল সুবোধ পাণ্ডের বডি পাওয়া যায় পুকুরের জলে। তিন দিন পরে বডি মেলায় মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। তবে ড্রাউনিং কেস নয়। পিএম. রিপোর্ট তাই বলেছে। এমনকি দিন দুয়েক আগে এখানকার এক সমৃদ্ধ স্টেশনারি দোকানের মালিক মারা যায় ড্রাগ ওভারডোজে। ডিপার্টমেন্ট সন্দেহ করতো, সে ড্রাগ ডিলারের কাজ করতো। কিন্তু প্রমাণ পাওয়া যায়নি। দু-দু’বার রেইড করেও ধরা যায়নি। এসব পরে ডিটেইলসে আলোচনা হবেখন। তবে আমাকে বাঁচিয়ে খেলবেন আপনি। চাকরী করি তো। বুঝতেই তো পারছেন।
ব’লে যেমন হড়বড় ক’রে এসেছিলেন তেমনি হড়বঢ় ক’রে বেরিয়ে যান ইন্সপেক্টর পরিক্ষিৎ দত্ত। চেঁচিয়ে ব’লে যান,
— গাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি।