দক্ষিণ বাড়ির গুপ্তধন | পলক ফেলা নিষেধ 2023 | মৌসুমী দাশ | Bengali Murder Mystery Story | 9F10
0 (0)

পনেরশো খ্রিস্টাব্দের শেষভাগ। বাংলায় তখন পাঠানদের রাজত্ব চলছে। মুঘল সম্রাট আকবর আগেও অনেকবার বাংলায় তার সেনাবাহিনী পাঠিয়েছেন। কিন্তু বারবার শুধু তার হাতে ব্যর্থতাই লাগছে। তাই তিনি এবার তার সব থেকে বিশ্বস্ত সেনাপতি মান সিংহ কে বাংলায় পাঠালেন। রাজপুত এই মান সিংহ আর তার সেনাবাহিনীর প্রবল বিক্রমে বাদশাহ বাংলা জয় নিশ্চিত করেন।  সেই সময় বাংলায় পাঠানরা ছাড়াও অনেক ছোটখাটো সামন্ত রাজা ও জমিদার ছিলেন। তারা বাংলার বিভিন্ন ছোট ছোট শহর ও গ্রামে তাদের আধিপত্য বিস্তার করেছিল। এদের মধ্যে একটি ছোট্ট শহর ছিল টাকি। সে সময় টাকিতে বসন্ত রায় ও তার পরিবারের লোকজনের আধিপত্য ছিল। মান সিংহ যখন বাংলা আক্রমণ করেন তখন বসন্ত রায়ের পরিবারের এক ব্যক্তি তাদের সমস্ত ধন দৌলত এনে লুকিয়ে রাখেন, টাকির এক বাড়িতে  তার নাম দক্ষিণ বাড়ি।

                                    মানসিংহ যখন আজকের বাদুড়িয়া তেতুলিয়া অতিক্রম করে বসিরহাটের টাকিতে অগ্রসর হন, তখন তিনি এই দক্ষিণ বাড়ি সম্পর্কে জানতে পারেন। আর তিনি এটাও জানতে পারেন যে বসন্ত রায়ের লোকজনেরা এই দক্ষিণ বাড়িতে লুকিয়ে আছে। তিনি তখন টাকি উপর দিয়ে হাসনাবাদের দিকে যাত্রা করেন। এই টাকি হাসনাবাদের রাস্তায় ইছামতীর ধারে অবস্থিত ছিল এই দক্ষিণ বাড়ি। মান সিংহের অতর্কিত আক্রমনে বসন্ত রায়ের পরিবারের লোকজন তার সেনার সাথে যুদ্ধে পেরে ওঠেনি। তারা পরাজিত হওয়ার পর দক্ষিণ বাড়ি পুরো ফাঁকা হয়ে যায়। আর গুপ্তধন কালের গভীরে হারিয়ে যায়।

                               আজ সকালে দিশার কোন কাজ ছিল না।  কারণ কালকে থেকে তার কলেজে গরমের ছুটি শুরু হয়ে যাবে। আজ যেহেতু রবিবার তাই আজ কম্পিউটার ও ক্লাস বন্ধ। দিশ্যার গরমের ছুটিতে বাড়িতে থাকতে একদম ভালো লাগেনা। যদিও সেই স্কুল লাইফ থেকে গরমের ছুটিতে প্রায় প্রত্যেকবারই তারা কোথাও না কোথাও বেড়াতে যায়। তবে এবার হয়তো তার আর কোথাও বেড়াতে যাওয়া হবে না। কারণ কিছুদিন আগে তার ঠাম্মা মারা গিয়েছে , সেই সময় অনেক টাকা পয়সা খরচা হয়ে গিয়েছে। তার ঠাম্মা অনেকদিন ধরে অসুস্থ ছিল।  তাই তার বাবা বলেছে এ বছর আর কোথাও ঘুরতে যাওয়া হবে না। তবে দিশা যদি চাই তাহলে আশপাশে কোথাও ঘুরে আসতে পারে। দিশারা বাড়ি থেকে ঘুরতে গেলে তারা একটু দূরেই যায়। যেমন আগের বার সবাই মিলে শিমলা আর মানালি টা ঘুরে এসেছিল ।  কিন্তু এবার আর তাদের পাহাড়ে যাওয়া হবে না । শুনে দিশার মনটাই একেবারে দমে গিয়েছে। তবে সে ঠিক করেছে বন্ধুদের সাথে কাছে পিঠে কোথাও ঘুরে আসবে। দিশার খুব ইচ্ছা হয়েছে বাংলাদেশের বর্ডার দেখার।  সেই জন্য সে একটা বন্ধুর সাথে বনগাঁ যাচ্ছে পেট্রাপোলের বর্ডার দেখতে। এতে তার মা-বাবা তেমন একটা আপত্তি করেনি।

                                      দিশার বাবা একটা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে । বেশ ভালই মাইনা পায় । মোটামুটি সচ্ছল পরিবার তাদের।  দিশার একটা ছোট ভাই আছে এবার ক্লাস টেনে উঠেছে।‌ সে পড়াশোনা নিয়ে খুব চাপে আছে। সে এখন কোথাও যেতে পারবে না । নইলে দিশা ঠিক করেছিল সে তার ভাই দীপ কে  নিয়ে ঘুরতে যাবে। তবে তা যখন সম্ভব নয় । তখন দিশার একাই তার বন্ধু সুস্মিতার সাথে ঘুরতে যাবে বলে ঠিক করেছে। বনগাঁয় সুস্মিতার মামার বাড়ি। দিশা যদিও আজ পর্যন্ত কলকাতার আশেপাশে কোন গ্রামে ঘুরতে যায়নি । তবে সে পাহাড়ি অনেক গ্রাম দেখেছে এবং সমুদ্রীক গ্রামও দেখেছে । তবে তার খুব ইচ্ছা একবার দক্ষিণঙ্গের কোনো গ্রামে ঘুরতে যাওয়ার। বনগাঁ যদিও গ্রাম না তবে সুস্মিতা বলেছে যদি সম্ভব হয় , তাহলে বনগাঁর আশপাশের কোন গ্রাম থেকে ঘুরে আসবে।

Pages ( 1 of 16 ): 1 23 ... 16তারপর »

About Post Author

9F10 DA

Click to rate this post!
[Total: 0 Average: 0]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post ডায়রির ভাঁজ থেকে | পলক ফেলা নিষেধ 2023 | অয়ন সাঁতরা | Bengali Murder Mystery Story | 9F10
Next post বিষ্ণুপুরে হত্যাকাণ্ড | পলক ফেলা নিষেধ 2023 | হিমাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায় | Bengali Murder Mystery Story | 9F10