আজ সকালে দিশা তার ল্যাপটপে ভিডিও এডিটিং করছিল। তার একটা ইউ টিউব চ্যানেল আছে ,সেখানে সে নিয়মিত ভিডিও ছাড়ে। ইতিমধ্যে তার টেন কে সাবস্ক্রাইবার হয়ে গিয়েছে। সেই ইউটিউব থেকে টাকা-পয়সাও পাচ্ছে। কাজেই তাকে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে কোন টাকা পয়সা নিতে হবে। দিশা কলেজের সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। ইংলিশে অনার্স , পড়াশোনায় সে যে খুব ভালো তা নয়। তবে প্রতিবার পাশ করে যায়।
আজ সকালে এসে পড়া বাদ দিয়ে এই সব কাজই করছিল এমন সময় তার ভাই এসে তাকে বলল, ” দিদি তোর তো খুব মজা । আমাকে রেখে বেড়াতে যাচ্ছিস লজ্জা করে না তোর ?”
দিশা বলল, ” তোর সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা তাই তুই এখন পড়াশোনায় মন দে। ঘুরে বেড়ানোর পরে অনেক সময় পাবি বুঝলি। “
দীপ বলল,” যেভাবেই করি না কেন, আমি পরীক্ষায় তোর থেকে বেশি নম্বর পাব। এটা আমার গ্যারান্টি। “
দিশা বলল, “খুব ভালো কথা এখন যা গিয়ে পড়তে বস আর আমাকে কাজ করতে দে।”
দীপ বলল , ” ঠিক আছে, তুই বনগাঁ থেকে আমার জন্য কি আনবি সেটা বল? আর তুই কি সত্যিই তোর বন্ধুদের সাথে যাচ্ছিস? না কি ওখানে তোর কোন বয়-ফ্রেন্ড আছে ?”
দিশা এবার একটু রেগে গিয়ে বলল , “একটা চড় দেবো কানে, বনবন করে ঘুরবি, বুঝলি। আর বনগায় তেমন কিছু স্পেশাল জিনিস পাওয়া যায় না। যে তোর জন্য নিয়ে আসবো তবুও আমি যখন যাচ্ছি তখন তোর জন্য কিছু একটা নিয়ে আসবো । “
দীপ তার গাল দুটো ধরে টেনে বলল , ” মাই সুইট দিদি। তুই খুব ভালো, আমার চোখে তুই দুনিয়ার বেস্ট দিদি। “
দিশা বলল, ” তেল মারা হয়ে গেছে? তাহলে এবার এখান থেকে যা । আর গিয়ে দেখ মা আজ সকালে কি ব্রেকফাস্ট বানিয়েছে। “
রাতের বেলা দিশা তার ল্যাপটপে উত্তর চব্বিশ পরগনার ইতিহাস নিয়ে লেখা একটা আর্টিকেল পড়ছিল। হঠাৎ তার একটা লেখার উপর চোখ আটকে গেল । লেখার বিষয়বস্তু ছিল ‘মান সিংহ ও টাকী’ । আকবরের এই সেনাপতির কথা জানেনা এমন কেউ নেই । এই রাজপুতের কথাও সবাই জানে । দিশার ইচ্ছে ছিল পুরো আর্টিকেলটা একবার পড়ার । কিন্তু তার মা খেতে ডাকায় তার আর পড়া হলো না। সে আর্টিকেলটা সেভ করে সে খেতে চলে যায়। তারপর সেই আর্টিকেল টার কথা দিশার মাথা থেকে বেরিয়ে যায়। তারপর সে বনগাঁয় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।