তাদের মধ্যে একজন বলছে আমাদের শুধু একবার সিংহদ্বারের চাবিটা দরকার ওই চাবিটা পাওয়া গেলেই মানসিংহের আমলেরযে গুপ্তধন দক্ষিণ বাড়িতে রাখা রয়েছে। সব আমাদের হাতে চলে আসবে । কিন্তু এই চাবিটা কোথায় আছে? চাবি কোথায় আছে এর উত্তরে পাশের লোকটি বলল । তা স্পষ্ট করে শুনতে পেল না তানিয়া। তবে এরপরেও আরো কয়েকটা কথা তাদের কানে এই দক্ষিণ বাড়ির কোন এক মেয়ে বনগাঁ এসে তার স্বামীর সাথে বসবাস করছে। আর এই লোক দুটো এখন চলেছে সেই মেয়েটির বাড়িতে, হয়তো সেই চাবিরই সন্ধানে। লোক দুটির কথাবার্তায় মনে হল যে এই ‘দক্ষিণ বাড়ি’, ‘ চাবি ‘ , ‘মান সিংহের গুপ্তধন’ এইসব বিষয়ে বাইরের কেউই জানে না।
তানিয়া হঠাৎ লক্ষ্য করলো দিশা ও তার পাশে বসে বসে ওই লোকগুলোর কথা শুনছে। আর ওদের কথা শুনে দিশার চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। দিশা কি তাহলে কিছু সন্দেহ করছ ঐ লোকগুলোর কথায় তার চোখ মুখ দেখে তানিয়ার তো তাই মনে হচ্ছে। দিশা ততক্ষণে নিজের ফোনে মান সিংহ ও দক্ষিণ বাড়ি এটা লিখে কিছু সার্চ করার চেষ্টা করছে।
তানিয়া এবার দিশার কানের কাছে মুখ এনে বলল, ” কিরে হঠাৎ করে কি হলো তুই কি এই লোক দুটোর কথায় সন্দেহজনক কিছু পেলি?”
দিশা বলল , “মানসিংহের আমলের গুপ্তধন ব্যাপারটা বুঝতে পারছিস । মানসিংহ কে ছিল জানিস , সম্রাট আকবরের সেনাপতি । আর সে যখন এই বাংলায় এসেছিল তখন তার সঙ্গে প্রচুর সোনা দানা ছিল। হয়তো প্রচুর স্বর্ণমুদ্রা ছিল । সেই সময়ের কিছু সম্পদ হয়তো কোথাও আছে। আর এই লোক গুলো হয়তো তার সন্ধান হয়েছে। “
তানিয়া বলল,” কিন্তু এই কাজটা তো বেআইনি আমাদের এদের আটকাতে হবে। “
দিশা বলল ,”ভেরি গুড তানিয়া। কিচ্ছু জানি না কিচ্ছু বুঝিনি শুধু দুটো লোকের কথার উপরে সন্দেহ করে আমরা এই লোক দুটোর উপর অ্যাকশান নিতে চলেছি। কি বুদ্ধি আমাদের। সিরিয়াসলি তানিয়া তোর মনে হয় আমরা এমন একটা কাজ করতে পারি?”
তানিয়া বলল , ” দেখ ভাই করতে পারি কি পারি না সেটা তো পরে কথা। এখন কথা হচ্ছে এই লোক দুটোকে আমার মোটেও সুবিধার মনে হচ্ছে না। আমরা এদেরকে আটকাতে না পারি। আমাদের অন্তত এদের উপর নজর রাখা উচিত। “
ততক্ষণে তানিয়ার পাশে বসে থাকা লোকটি উঠে পড়েছে তাই সুস্মিতা এসে তাদের পাশে বসেছে। এটা তারা দুজনের কেউই খেয়াল করেনি। সুস্মিতা এতক্ষণ বসে বসে তাদের দুজনের সব কথাই শুনেছিল। তবে দুটো লোক কি বলছিল তাদের কথা, তা তার শোনা হয়নি। তবে সুস্মিতা তানিয়ার কথা শুনে সে বুঝল , লোক দুটো একটা বিশাল বড় প্ল্যান করতে চলেছে। কিন্তু তানিয়া যে ওদের উপর নজর রাখার কথা বলছে তাতে রিক্স খুব বেশি হয়ে যাবে। কারণ যদি লোক দুটো সত্যিই অপরাধী দলের হয়, তাহলে তারা তাদের ক্ষতি করার আগে একবারও ভাববে না।
সুস্মিতা বলল , “তোরা দুজনেই বাজে চিন্তাগুলো মাথা থেকে বাদ দে। হয়তো এমনও হতে পারে, লোক দুটো কোন স্বাভাবিক কথা বলছে । আর তোরা হয়তো যা তা ভেবে নিচ্ছিস।”
দিশা বলল , “না রে সুস্মিতা। একেবারে যা তা আমরা ভাবছি না কারণ এই দক্ষিণ বাড়ি নামটা আমি আগেও শুনেছি। কোথায় শুনেছি আমার ঠিক মনে পড়ছে না। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে রিসেন্টলি আমি এই নামটা শুনেছি।”
তানিয়া বলল, ” ডোন্ট ওয়ারী আমি গুগল সার্চ করে দেখছি এই দক্ষিণ বাড়ি জায়গাটা কোথায় আছে।”
তানিয়া নিজের ফোনে দক্ষিণ বাড়ির সার্চ করল ।কিন্তু সেই ভাবে তেমন কিছু পেল না ।দক্ষিণ বাড়ি এই নামের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে অনেক আছে কিন্তু এর মধ্যে কোন বাড়ির কথা এরা বলছে, তা তারা বুঝতে পারল না। তারপর সে মানসিংহের সাথে সম্পর্কিত কোন দক্ষিণ বাড়ি আছে কিনা তা সার্চ করার চেষ্টা করব। কিন্তু তবুও সে সেরকম সন্তোষ জনক কোন উত্তর পেল না।