লোক দুটো টোটোই উঠে বলল তারা পৌরসভার কাছে যাবে। তানিয়া তাদের এই কথাটা শুনে পরের টোটোই উঠলো এবং সেও একই জায়গায় যাওয়ার কথা বলল। সুস্মিতার মামার বাড়ি ও পৌরসভার পাশেই সেই জন্য তাদের আর অন্য কোথাও যেতে হলো না ।এই লোক দুটো তাদের বাড়ির আশপাশেই কোথাও একটা যাচ্ছে। এটা ভেবে তিনজনেই খুব খুশি হল। কারণ এখন তারা ওদের উপর নজর রাখতে পারবে খুব সহজে। দিশার মনে হচ্ছিল তারা এখন শুধু ঘুরতে আসেনি। তাদের এই ঘোরায় আরো অনেক কিছু ঘটবে যেটা তারা কোনদিন ভুলতে পারবে না। বনগাঁ যে একটা ছিমছম শহর সেটা স্টেশন থেকে যেতে যেতেই বোঝা যায় বাজার ঘাট শপিংমল সবই আছে। আছে নামিদামি স্কুল কলেজ হসপিটাল কোন কিছুরই অভাব নেই। তানিয়া দিশার শহর দেখতে খুবই ভালো লাগছিল কিন্তু তাদের চোখটা বারবার চলে যাচ্ছিল তাদের সামনে টোটোর দিকে। টোটো ওয়ালা সামনের টোটোটা ক্রস করে এগিয়ে যেতে চাইছিল। কিন্তু তারা তিনজনেই বাঁধা দিল, বলল ওই টোটো টার পিছন পিছন যেতে। এই কথা শুনে টোটো ওয়ালা প্রথমে একটু অবাক হলো তারপরে ভাবল হয়তো সামনের টোটোর লোকগুলোকে ওরা চেনে তাই হয়তো ওদের পিছন পিছন যাচ্ছে। সামনে টোটো টা একটা গলির সামনে এসে দাঁড়ালো ওরা দুজনে নেমে ভাড়া ভাড়া মিটিয়ে নেমে পরলো। ঠিক তখনই দিশারাও টোটো থেকে নামল দিশা হারাম মেটাল আর তানিয়াকে বলল লোক দুটো পিছু নিতে। তারা দেখল লোক দুটো একটা নীল সাদা রংয়ের দোতলা বাড়ির ভিতর ঢুকলো। বাড়িটা গলি থেকে খুব একটা বেশি দূরে ছিল না তাই দিশা ভাড়া মিটিয়ে তানিয়া আর সুস্মিতার কাছে চলে আসলো।
সুস্মিতা বাড়িটা দেখতে দেখতে বললো, ” দেখ এখন আমাদের এখান থেকে যাওয়া উচিত আমার মামার বাড়ি ওই সামনের গলিটাই। আর আমি আমার দাদাকে বলে খোঁজ লাগাচ্ছি এই বাড়িটা কার। এরা আমাদের বাড়ির আশেপাশেই আছে সুতরাং আমরা পরে খোঁজ লাগাতে পারবো। “
সুস্মিতার কথায় দিশা আর তানিয়া ও সম্মত হল তারা সেখান থেকে চলে গেল। তারপর সুস্মিতার মামার বাড়িতে তারা পৌঁছে গেল। সুস্মিতার মামার বাড়িটা বেশ সুন্দর দোতলা বাড়ি, বেশ সাজানো গোছানো । মামার বাড়িতে থাকার মধ্যে আছে দুই মামা , মামী আর তাদের দুই ছেলে মেয়ে । সুস্মিতার বড় মামার একটা ছেলে সঞ্জয় ,যে সদ্য পুলিশে জয়েন করেছে । আর ছোট মামার একটা মেয়ে সৃজা সে ক্লাস টেনে পড়ে। সৃজা মেয়েটি খুব মিশুকে তানিয়া আর দিশা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিল। সুস্মিতার দুই মামিকে তানিয়ার দিশার খুব ভালো লাগলো, তাদের দুজনের ব্যবহার এতই মধুর যে কারণ তাদের পছন্দ হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। সুস্মিতার বড় মামা বাড়িতেই ছিলেন তিনি তাদের একটু জিরিয়ে নেওয়ার কথা বললেন। সুস্মিতা বড় মামার কথায় জিজ্ঞাসা করাই তিনি জানালেন যে সঞ্জয় বাজারে গিয়েছে। এখন তার কয়েকদিন ছুটি আছে সে এখন বাড়িতেই আছে। এই কথা শুনে সুস্মিতা খুব খুশি হল। তারপর তারা বনগাঁ স্পেশাল ছেঁড়া পরোটা খেয়ে একটু বিছানায় গায়ে দিয়ে নিল।
একটা বড় ঘরে ওরা তিনজনেই শুয়েছিল খাটে তিনজনেরই শোয়ার জায়গা হয়েছিল। পাশে যে জায়গাটা ছিল সেখানে সৃজা বসে তাদের সাথে গল্প করছিল। তারা অনেক গল্প করছিল হঠাৎ করেই দিশা পাশের গলির ওই বাড়িটার কথা তুললো।