সঞ্জয় বলল, ” হতে তো অনেক কিছুই পারে তানিয়া । কিন্তু এখন প্রবলেমটা হচ্ছে যে, ওদের সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। আমরা শুধু কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে দুটো লোকের সন্দেহ করছি। “
দিশা নিজের মোবাইলে কিছু সার্চ করছিল । তাই দেখে সঞ্জয় বলল, ” তুমি কি সার্চ করছ? “
দিশা বলল , ” সঞ্জয় দা আমি দেখার চেষ্টা করছিলাম মান সিংহ রোড কোথায়? কিন্তু মান সিংহ রোড তো দিল্লীতে দেখাচ্ছে। আর তো গুগল ম্যাপে সেই ভাবে কিছু দেখাচ্ছে না, আর দক্ষিণ বাড়ি। পশ্চিমবঙ্গে অনেক বাড়ি আছে যেগুলো দক্ষিণ বাড়ির নামে পরিচিত। “
সুস্মিতা বলল , ” এমন তো হতে পারে যে সবটাই ভাওতা। এর মধ্যে কিছুই সত্যি নেই। লোক দুটো কি না কি বলেছে ,সেটা নিয়ে আমরা সেটাকে তিল থেকে তাল করে বেরাচ্ছি। “
সঞ্জয় বলল , “ব্যাপারটা যতটা সহজ তুই ভাবছিস আমার মনে হয় ব্যাপারটা ততটা সহজ নয়। কারণ ওই বাড়ি সম্পর্কে আমি একটু খোঁজখবর করেছি। ওই বাড়ি এখন যে কিনেছে সেই লোকটার অ্যান্টিকের ব্যবসা করে। তার নাম চন্দ্রনাথ দত্ত। কিন্তু প্রবলেমটা হচ্ছে চন্দ্রনাথ তার ব্যবসা সোজাপথে দাঁড় করায়নি। তার নামে অনেক পুলিশ কেস রয়েছে। তার তার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য তাকেই দায়ী করা হয়। অনেকে বলে তার প্রথম স্ত্রী কে সে নাকি পুড়িয়ে মেরেছে।”
দিশা বলল, ” আমরা লোক দুটিকে একটা বউয়ের কথা বলতে শুনেছি । যে কি না একসময় দক্ষিণ বাড়ির মেয়ে ছিল। তাহলে কি চন্দ্রনাথ দত্তের বর্তমান স্ত্রী দক্ষিণ বাড়ির মেয়ে? “
সঞ্জয় বলল , ” হতেই পারে দিশা। এতে আশ্চর্যের কোন কিছুই নেই । তুমি একটু দাড়াও আমি একটু খোঁজ খবর করছি। “
এরপর সে তার পাশের পাড়ার শুকতারা বলে একটি মেয়েকে ফোন করে এবং তার কাছে চন্দ্রনাথ দত্তের বউ সম্পর্কে জানতে চায়। শুকতারা সাথে চন্দ্রনাথের বউ মল্লিকার একটু আলাপ ছিল । সে জানত মল্লিকার বাপের বাড়ির বিষয়। তবে তেমন কিছু সে জানতো না , শুধু মল্লিকার বাপের বাড়ি টাকি। টাকি নামটা শোনা মাত্রই তানিয়া গুগলে সার্চ করলো। টাকি উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় অবস্থিত ইছামতীর তীরের একটি ছোট্ট শহর। টাকির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার মত । একদিকে রয়েছে মিনি সুন্দরবন তারপরে টাকি রাজবাড়ি এছাড়াও রয়েছে কুলেশ্বরী কালী মন্দির , ঐতিহ্যবাহী জোড়া মন্দির এবং আরো অনেক কিছু । মোটকথা কলকাতা থেকে বেশি দূরে নয় এবং দু-একদিনের জন্য ঘুরতে যাওয়ার পারফেক্ট প্লেস।
তানিয়া এই সবই দেখছিলে। হঠাৎ দিশা বলল, ” তানিয়া একটা জিনিস দেখতে, টাকিতে মান সিংহ রোড নামের কিছু আছে কি না ? “
তানিয়া সার্চ করে বলল, ” হ্যাঁ একটা রাস্তা রয়েছে তার নাম মানসিংহ এই রাস্তা দিয়ে আকবরের সেনাপতি মানসিংহ তার সৈন্যদল নিয়ে গিয়েছিল। সেই জন্যই রাস্তাটার নাম মান সিংহ রোড। “
সঞ্জয় একটু উত্তেজিত হয় বলল , ” দক্ষিণ বাড়ি বলে কিছু আছে কি না দেখো তো! “
তানিয়া বলল , “দক্ষিণ বাড়ি বলতে সেই ভাবে তো কিছু দিচ্ছে না তবে পুবের বাড়ি এবং আরো অনেক বাড়ি ছিল। যে বাড়িগুলো যেই দিকে মুখ সেই দিকের নাম অনুসারে বাড়িগুলোর নাম দেয়া হতো। এরকম উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম বাড়ি ছিল । কিন্তু দক্ষিণ বাড়ি বলে তেমন কিছু হাইলাইট করা নেই। “
দিশা বলল, “একবার যদি দক্ষিণ বাড়ি থাকে তাহলে তো সবই মিলে যাচ্ছে। তাহলে দক্ষিণ বাড়িতে হয়তো কোন গুপ্তধন আছে আর সেই গুপ্তধনের ঘরের বা সিন্দুকের চাবি হতে এসেছে এখানে। “
সঞ্জয় বলল, “হতেই পারে তবে বিষয়টা নিয়ে আরেকটু ভাবতে হবে। এক্ষুনি কিছু বলা যাচ্ছে না । তোমরা তো এখনো একদিন আছো দেখি কতটা কি করা যায়। “