লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, কালো–নানান রংয়ের কালির অনেকগুলো কলম আছে অনুভূতির টেবিলের কলমদানীতে। কোনটা ডট পেন, কোনটা স্কেচ পেন, কোনটা ফাউন্টেন পেন, কোনটা বা…। হ্যাঁ, সবকটা কলমই ব্যবহার করে অনুভূতি। মনের খুশি অনুযায়ী যখন যেটা ইচ্ছে হয়, সেটা দিয়েই অনুভূতি ডায়েরি লেখে প্রতিদিন নিয়মিত ভোরবেলা। সবার আগে ঘুম থেকে ওঠে অনুভূতি। মুখে চোখে জল দিয়ে ডায়েরি হাতে ছাদে যায়। অন্য হাতে কলমদানীটা নিতে ভোলে না অনুভূতি। তারপর প্রায় ঘণ্টাখানেক লেখে অনুভূতি। গতদিনের সুখের কথা, দুঃখের কথা, গোপন কথা, স্বপ্নের কথা। তখনও ঘুমিয়ে থাকে মানস নীল মশারির ভেতরে নিশ্চিন্তে। ভোরের ঠান্ডা আমেজ, পাখপাখালির ডাক, সকালের স্নিগ্ধ মাধুর্য অনুভূতিকে সমাধিস্থ করে। ধ্যানভঙ্গ মুনির মতো নিজেই নীচে এসে সংসারে প্রবেশ করে অনুভূতি নির্দিষ্ট সময়ে। কাউকে ডাকতে হয় না। অনুভূতির প্রতি বছরের সব ডায়েরি কাঁচের দেওয়াল আলমারিতে সাজানো থাকে। মাঝে মাঝেই একেকটা বছরের ডায়েরিকে, দুই হাতের পাতায় খুলে ধরে, দু চোখ চেয়ে পড়ে অনুভূতি… যখন কিছু ভালো লাগে না। মানস সব জানে, কিন্তু কক্ষনো অনুভূতির একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলায় না, মাথা বাড়ায় না, হাত দিয়ে স্পর্শ করে না, এমনকি চুপিচুপি চোখ চেয়ে দেখার চেষ্টাও করে না… গত কয়েক বছর ধরে। আগে করত। আগে নানা ভাবেই অনুভূতির ডায়েরি মানস দেখত, পড়ত, সমালোচনা করত, কখনও বা কেজি দরে বিক্রি করার কথা বলত, অথবা উনুন ধরানের কাজে লাগাতে চাইত। দুচোখ ছাপিয়ে জল ঝরত অনুভূতির। মানস থমকে যেত, অবাক হত। আজকাল মানস অবাক হয় না, এদিকে আর নজর দেয় না। দেয়াল আলমারির কাঁচের বাইরে থেকে দেখা যায় নানা রংয়ের ডায়েরিগুলো দাঁড়িয়ে আছে। সাইড কভারে লেখা আছে ইংরেজি সাল, তাতে যে কোন বছরকে মুহূর্তে খুঁজে নিতে সুবিধা হয়। মানস জানে না অনুভূতি ইদানিং আত্মজীবনী লিখছে কি না। প্রথম প্রথম প্রায়ই আত্মজীবনী লেখার কথা বলত অনুভূতি। মানস বলত,
“আমি ছাপানোর ব্যবস্থা করতে পারি, পুরো খরচ আমার। কিন্তু কে কিনবে আর পড়বেই বা কে…?”
অনুভূতি উত্তর দেয় না। মানস জানে অনুভূতির যখন খুব আনন্দ হয়, তখন অনুভূতি সবুজ কালিতে লেখে। মন খারাপ হলে কালো কালিতে লেখে। নীল কালিতে চিঠি লেখে, সই করে, স্কুলের খাতায় রাইট দেয়, ক্রস দেয়, গোল্লা চিহ্ন দেয়, প্রশ্নবোধক চিহ্ন দেয়। মনের গোপন কথাগুলো অনুভূতি লেখে হলুদ সবুজ কালি মিশিয়ে। মানস সব জানে। যখনই কোন কালি শেষ হয়, তখনই অনুভূতি কালি ভরে নেয়, রিফিল পালটে নেয়। কখনও ভুল হয় না এ ব্যাপারে। কলমদানীতে সাজানো কলমগুলো ছাড়াও আরও অসংখ্য কলম আছে টেবিলের ড্রয়ারে।
কোনটা ভাঙ্গা, কোনটার ঢাকনা নেই, কোনটা রিফিল ছাড়া, কোনটার কালি গেছে শুকিয়ে। কোনটা দেশী, কোনটা বিদেশী, কোনটা খুব সুন্দর ডিজাইনের, বেশির ভাগ কলমই গিফট পাওয়া নানা ভাবে।
মানস জানে মাঝে মাঝেই অনুভূতি দেখা করে অসমঞ্জ-এর সঙ্গে। সেদিনের কথা সব হলুদ সবুজ রঙে অনুভূতি লেখে ডায়েরির পাতায় অকপটে। প্রথম দিকে একদিন অনুভূতি জোর করে মানসকে ওই হলুদ সবুজ রঙের লেখা পড়তে দিয়েছিল। মানস অবাক হয়েছিল অনুভূতির সহজ-সরল লেখা পড়ে, কিন্তু কোন মন্তব্য করেনি। মানস শাসন করেনি, বাঁধাও দেয়নি। কিন্তু তারপর থেকে আর মানস দেয়াল আলমারির ধারে কাছে যায়নি, সন্তর্পনে এড়িয়ে গেছে ওপাশটা। চোখ সরিয়ে নিয়েছে ডায়েরির দিক থেকে। অযথা কোন কৌতুহল দেখায়নি। মানসের চোখে পুরু কাঁচের মাইনাস পাওয়ারের চশমা। শুধুমাত্র ঘুমাবার সময় চশমাটা বালিশের পাশে থাকে, আর স্নানের সময় থাকে ফ্রিজের উপরে। এছাড়া সব সময় মানসের নাকের উপর থাকে চশমাটা।
অনুভূতির প্রিয় রং হলুদ। অনুভূতির সব শাড়িতে, তা সে তাঁত হোক বা সিল্ক, অথবা সুতোর কাজ করা কিংবা অন্য কিছু– সবেতেই হলুদের ছোঁয়া থাকবেই। হলুদ রঙের গোলাপ অনুভূতি ভালোবাসে। দরজা জানালায় পর্দা, বিছানার চাদর, সোফা সেটের কভার, টিভি ঢাকনা এমনকি রুমালটাও হলদে। ছিঁড়ে গেলে, হারিয়ে গেলে, রঙ নষ্ট হলে, আবার ঐ একই রঙের জিনিস আসে ঘরে। ‘হলুদপরী’ নাম দিয়েছিল মানস বিয়ের দিন। বিয়ের বেনারসীটাও ছিল হলুদ রঙের। মধুচন্দ্রিমায় বেড়াতে গিয়ে হলুদ প্রজাপতি ধরে দেবার বায়না করেছিল অনুভূতি… সে সব স্মৃতি আজও মানসকে আবিষ্ট করে।
একনাগাড়ে ঘরের চারিদিকে হলুদ রঙের মধ্যে থাকতে মাঝে মাঝে মানসের একঘেয়ে লাগে। সংসারের শান্তি বজায় রাখতে তবুও মানস মুখ ফুটে কিছু বলে না। অনুভূতির ডায়েরির হলুদ সবুজ লেখা মানস সচেতন ভাবেই দেখতে চায় না, নিজের মানসিক শান্তি বজায় রাখতে। মানস জানে না ইদানীং অনুভূতির হলুদ-সবুজ লেখা জীবনের কোন পর্যায়ে বিচরণ করছে।
কুড়ি বছরের অনুভূতিকে নিয়ে সংসার জীবন শুরু করেছিল মানস। সামনের ফাল্গুনে ওদের কুড়িতম বিবাহবার্ষিকী বাংলার ১৩ তারিখে। প্রতিবছর একগুচ্ছ হলুদ গোলাপ মানস অনেক খুঁজে পেতে, অনেক দাম দিয়ে নিয়ে আসে। ঘরের কোণে ছোট্ট টেবিলে ফুলদানিতে সযত্নে হলুদ গোলাপ সাজিয়ে রাখে অনুভূতি। একটা ফুল খোঁপায় গুঁজে দেয়। হলুদ রঙের বাঘছাল পড়া শিবের ধ্যানস্থ একটা বাঁধানো ছবি আছে ওদের শোবার ঘরে। হলুদ গাঁদা ফুলের মালা দেখা যায় ওই ছবিতে, প্রায় পুরো শীতকালটা। বছরের অন্য সময়ে ওই ছবিতে কোন মালা থাকে না। মানস প্রথম জীবনে চেষ্টা করেছিল অনুভূতিকে নিজের জীবন থেকে সরাতে। নতুন করে অন্য সংসার পেতে সুখী হতে বলেছিল ওকে। মধ্যবিত্ত মানসিকতার অনুভূতি পারেনি মানসকে ছেড়ে অন্য পুরুষের কথা ভাবতে, ঘরবাঁধা তো আরও দূরের কথা। মাঝে মধ্যে একটু আধটু ইচ্ছে হয়েছে বৈকি, কিন্তু পারিপার্শ্বিক সবকিছু চিন্তা করে অনুভূতির সাহসে কুলায়নি। সংকীর্ণতা, সংস্কার আর সহিষ্ণুতা এ সবই অনুভূতিকে বাধা দিয়েছে দ্বিতীয় পুরুষ-এর দিকে মন দিতে।
মানস প্রায়ই বেড়াতে যেত অনুভূতিকে নিয়ে, এটা মানসের শখ। পশ্চিমবঙ্গের আনাচে-কানাচে অথবা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ওরা ঘুরে বেড়িয়েছে। একবার বাসে এক জায়গায় বেড়াতে যাবার পথে, মাঠভরা সর্ষে ক্ষেত দেখে অনুভূতি পাগল প্রায়। সেখানেই মাঝ পথে নামতে হয়েছিল, থাকতে হয়েছিল দুদিন অনুভূতির শখ মেটাতে। প্রতিদিন দুইবেলা হলুদ সর্ষে ক্ষেতের আল বেয়ে ঘুরে বেড়াত অনুভূতি। খুশিতে, আবেগে আপ্লুত অনুভূতিকে ভীষণ সুখী আর স্বর্গীয় দেখাত হলুদ ফুলের বনে।
বছর ছয়েক আগে পুরীর সমুদ্র পারে ওদের দেখা হয়েছিল অসমঞ্জ এর সঙ্গে। ওরা এসেছিল দল বেঁধে একদল ছেলে। মিষ্টি ভরাট গলায় গান গাইছিল অসমঞ্জ সমুদ্রের পাড়ে বসে। বালিতে বসে হাঁটুতে থুতনি রেখে মুগ্ধ অনুভূতি শুনছিল সেই গান। ওখানেই আলাপ, তারপর বাড়িতে যাওয়া আসা এবং অন্তরঙ্গতা। অসম্ভব টগবগে ছটপটে ছেলে অসমঞ্জ। ওদের মেলামেশায় বাধা দেয়নি মানস। অসমঞ্জ গল্প করতে, আসর জমাতে, মন জয় করতে ওস্তাদ ছেলে। পরিচয়ের পর তো বটেই, এক দেখায় যে কেউ ওকে ভালোবেসে ফেলে। মানসেরও ভালো লেগেছিল।
অসমঞ্জ নামটা মহাভারতের একটা চরিত্র। সেখানে অসমঞ্জ সগর রাজার পুত্র, দেশের ক্রন্দনরত শিশু দেখলেই নদীতে ফেলে দিত। দয়ামায়াহীন পাষণ্ড চরিত্র। ওই নামটা যে কেন এই যুগের বাবা মা রেখেছে, মানস ভেবে পায় না। হয়তো নামটার ইতিহাস ওদের জানা নেই। আজকের এই অসমঞ্জ কিন্তু ফুল, শিশু, নারী সব ভালোবাসে। ওর মধ্যে কোন কাঠিন্য নেই। এই অসমঞ্জকে ঘিরে আজকাল অনেক দিন ধরে অনুভূতি স্বপ্ন দেখছে, সেটা বুঝতে পারে মানস। মানস চঞ্চল হয়, কিন্তু বাঁধা দিতে পারে না। অথচ বিয়ের পর প্রথম দিকে মানস নিজেই চেষ্টা করেছিল, অনুভূতিকে অন্য পুরুষের দিকে সরিয়ে দিতে। অনুভূতি সরেনি। তারপর এত বছরে দৈনন্দিন হাজারো অভ্যাসের মত মানসের সাথে মিশে গেছে অনুভূতি। এখন অনুভূতিকে অন্য কারো কাছে সরাবার কথা ভাবলেও বুকটা খালি হয়ে যায় মানসের। চোখে ঝাপসা দেখে মানস। হাত পা অবশ হয়ে যায়। খেতে ইচ্ছে করে না, কেমন যেন বমি বমি পায়। বাঁচতে ইচ্ছে করে না। তবু পারে না মানস অনুভূতিকে থামিয়ে দিতে।
সমুদ্রের বালিয়াড়িতে ছুটতে ছুটতে অনেক দূরে চলে গেছে অনুভূতি। হাত বাড়িয়ে মানস নাগাল পায় না, ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হয়ে যায়। অনুভূতির হলুদ শাড়ির আঁচল আস্তে আস্তে হাওয়ায় মিলিয়ে যায় সমুদ্রের মাঝে। প্রায়ই স্বপ্নটা দেখছে মানস। ঘুমের মধ্যে মানস গোঙায়। অনুভূতি ধাক্কা দেয়, মানস আত্মস্থ হয়। অনুভূতি জানতে চায়,
“ঘুমের ভিতর ওরকম করছিলে কেন?”
মানস বলে, “বাজে স্বপ্ন দেখছিলাম।”
“কিসের স্বপ্ন?”
“ভুলে গেছি।”
মানস ভুলে যেতে চায় কিন্তু ভুলতে পারে না। কিছুদিন পর আবার দেখে সেই একই স্বপ্ন। মানস ভয় পায়, কিন্তু অনুভূতিকে বুঝতে দেয় না নিজের ভেতরের কষ্টটা।
অনুভূতি এখন অন্য জগতে বিচরণ করছে, মানসের কোন কষ্টই অনুভব করতে পারে না। তবু অনুভূতি চায় মানস ওর ডায়েরিগুলো দেখুক, হলুদ সবুজ রঙের লেখাগুলো পড়ে কিছু বলুক। অনুভূতিকে টেনে ধরুক, শাসন করুক। অসমঞ্জ এর সঙ্গে দেখা করতে বাঁধা দিক। কেন এসব করছে না মানস…? অনুভূতি যে হারিয়ে যাচ্ছে। মানস কেন দেখছে না অনুভূতির হলুদ সবুজ লেখাগুলো? অনুভূতি আবার হারিয়ে যায়…।
মানসের কাঁচাপাকা চুল, খোঁচাখোঁচা গোঁফ দাড়ি, এলমেলো পোশাকে ইদানিং মানসকে আরও বেশি বয়স্ক লাগে। অথচ অনুভূতির শরীর দেখে কে বলবে, প্রায় চল্লিশের মহিলা! শরীরের বাঁধন এখনও সুন্দর, ছিপছিপে আলগা, মেদ প্রায় নেই। গোল পানপাতার মতো মুখের গড়ন, রং উজ্জ্বল হলদে, চামড়া টানটান, চোখের বড় বড় পাতা, কাজল না দিলেও কাজলটানা মনে হয়। এত সুন্দর অনুভূতি। আগের চেয়েও যেন আরও আকর্ষণীয় হয়েছে। স্কুলের সহকর্মীরাও তারিফ করে…
“তোর বয়স যেন কমছে রে অনুভূতি!”
হলদে গালে গোলাপি টোল ফেলে হাসে অনুভূতি। সবাই জানে ও কথা কম বলে। আপনমনে সবার কথা শোনে। তাই কেউ বেশি বিরক্ত করে না। অনুভূতি কাজে যায়, বাড়ি আসে, সংসার সাজায়, মানসকে পরিপাটি করে রেঁধে খেতে দেয়। তারপর অসমঞ্জ এলেই দৌঁড়ে দরজা খুলে দেয়। দরজার কড়া নাড়া শুনলেই বুঝতে পারে অসমঞ্জ এসেছে। দুজনে ছাদে বসে অনেকক্ষণ গল্প করে। ওরা যেখানটায় মাদুর পেতে বসে, সেখানে রাস্তার বড় গাছটার ছায়া আসে বিকেলে। আশপাশের ছাদ থেকে অনেকেই আড়ালে-আবডালে দেখে, হাসে, সমালোচনা করে। অনুভূতির কোন দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই।
একদিন অফিস থেকে ফিরতে মানসের বেশ দেরি হল। অনুভূতি তখনও ফেরেনি। এমন তো কখনও হয় না। পাশের বাড়ি থেকে চাবি নিয়ে ক্লান্ত পায়ে মানস ঘরে ঢুকে, পাখাটা ফুল স্পিডে চালিয়ে, ঠাণ্ডা মেঝেতে গড়াগড়ি খায়। একটু পরে বাথরুমে গিয়ে গা ধুয়ে আসে। এখনও ফিরছে না কেন বউটা? কোথায় গেল? ডাইনিং টেবিলের দিকে চোখ যায় মানসের। টেবিলে খোলা রয়েছে এই বছরের ডায়েরিটা… হলুদ সবুজ কালিতে লেখা। উপরের তারিখটার চারদিকে লাল কালি দিয়ে গোল চিহ্ন দেওয়া। মানস চমকে ওঠে। ডায়েরির পাতা উল্টাতে সাহস হয় না মানসের। শেষ যেদিন অনুভূতি মানসকে ডায়েরির হলুদ সবুজ লেখা পড়তে দিয়েছিল, তাতে লেখা ছিল…
‘আজ অসমঞ্জ আমার হাত টেনে নিয়ে আলতো করে…।’
আর পড়তে পারেনি মানস। ডায়েরি ফেরত দিয়েছিল। আজকের পাতায় না জানি আরও কত দূর স্বীকারোক্তি রয়েছে অনুভূতির। মানস ডায়েরিটা বন্ধ করে অন্য ডায়েরির পাশে তুলে রাখে। বিছানায় শুয়ে মানস উপুড় হয়। চোখ ছাপিয়ে জল আসে। আজ এতদিন হয়ে গেল কাউকে অনুভূতি বুঝতে দেয়নি মানসের অক্ষমতার কথা। কিন্তু এত বছরের সংসার ছেড়ে, মানসকে ছেড়ে সত্যি কি অনুভূতি চলে গেল? আর কি ফিরবে না? দেয়াল ঘড়িটা ঢং ঢং করে বেজেই চলেছে… মনে হয় বারোটা বাজলো। চিৎকার করে মানসের বলতে ইচ্ছে করল,
“তোমার সব ডায়েরিগুলো নিয়ে যাও অনুভূতি… আমি তোমার হলুদ সবুজ লেখা কোনদিনও পড়তে চাই না… কোনদিন না…।”
বাইরে তখন অনেক সময় থমকে থাকা শ্রাবনের মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি পড়ছে ঝমঝমিয়ে। (‘অনুভূতির রঙ’ আশির দশকে লেখা গল্প।)